Home / উপজেলা সংবাদ / হাইমচর / সাবেক চেয়ারম্যান নাসির সর্দারের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার
সাবেক চেয়ারম্যান নাসির সর্দারের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার

সাবেক চেয়ারম্যান নাসির সর্দারের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার

হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ঈশানবালা চরাঞ্চলবাসীর কৃতিসন্তান নাসির উদ্দিন সর্দারের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার (২৩ মে)।এ উপলক্ষে পারিবারিকভাবে তাঁর ঈশানবালার নিজ বাড়ি ও ঈশানবালা জামে মসজিদ দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

তাঁর জেষ্ঠ্যপুত্র সউদ আল নাসের ঈশানবালা জামে মসজিদ ও তাঁর নিজ বাড়িতে মিলাদ, দোয়া ও কাঙালী ভোজের আয়োজন রয়েছে। এ সময় মরহুমের আত্মীয়স্বজন ও ইউনিয়ন আ’লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।

সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সর্দার ২০১২ সালের ২৩ মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালের ১৫ জানুয়ারি তৎকালীন নীলকমল ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম আবদুল করিম সরদার ও মাতার নাম করফুলেন নেছা ।

মনিপুর মুলামবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে বাজাপ্তী রমনীমহন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে এ স্কুল হতে এস এস সি ও ১৯৭৫ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করে বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। অত:পর তিনি কুয়েতে চাকুরি নেন।

ছাত্র অবস্থায়ই তিনি তৎকালীন ছাত্রলীগের একজন সক্রীয় সদস্য ছিলেন এবং ঢাকার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি দেশে চলে আসেন। দেশে এসেই তিনি বঙ্গবন্ধুর গড়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগে সরাসরি যোগদেন।অত:পর তাঁর মায়ের নামে করফুলেন নেছা কমিশন এন্ড এজেন্ট নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। যেটি তাঁর জেষ্ঠ্যপুত্র সউদ আল নাসের এখন পরিচালনা করছেন। তখন থেকেই তিনি ঈশানবালার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে যান।

১৯৯৩ সালে প্রথম নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। পরের বার ১৯৯৭ সালে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ২০০২ সালেও তিনি নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি¦তা করে নির্বাচিত হন।

তৎকালীন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের রোষানলে পতিত হয়ে অনেক মামলা-হামলার শিকার হন।এমনকি মিথ্যা মামলার ঘূর্ণিপাকে জেলও খেটেছেন। অত্যন্ত দু:খের বিষয় তিনি যখন কুয়েত তখন তাঁর মা করফুলেন নেছা মৃত্যুবরণ এবং ১৯৯৫ সালে তাঁর পিতা আবদুল করিম যখন মারা যান তিনি তখন প্রতিপক্ষের মামলায় জেলে ছিলেন। তবুও তিনি দুর্বার গতিতে নীলকমলের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে পিচু হটেন নি।

১৯৯৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি প্রতি রাত কাটিয়েছেন চড়াই-উৎরাই,ঝঞ্জা-বিক্ষুদ্ধ পরিবেশে। পাশাপাশি তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে ঈশানবালা ভূমিহীন মানুষকে পুর্নবাসনে প্রায় ৩শ একর ভূমি একসনা বন্দোবস্ত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। মূলত: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আর ভূমিহীন মানুষকে পুর্নবাসনে ৩শ একর ভূমি একসনা বন্দোবস্ত করায় প্রতিপক্ষের সাথে দ্বন্দ্ব চরমে উঠার একটি কারণ ছিল।

মরহুম নাছির সরদার বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারীর একজন আস্তাভাজন রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নীলকমল ইউপির চেয়ারম্যান পদে নিয়োজিত ছিলেন।

তিনি ঈশানবালার মানুষের জন্যে একসনা বন্দোবস্ত,শিক্ষাবিস্তারে এমজেএস স্কুলের এমপিওকরণ,এলাকার রাস্তাঘাট,মধ্যচরে আশ্রায়ন প্রকল্প,মসজিদ,তৎকালীন বাজারে উন্নয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে কাজ করেন বলে ঈশানবালাবাসীর নিকট স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
২২ মে ২০১৯