চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ নৌ-পথে অতিমাত্রায় ডাকাতিয়া নদীর কচুরিপানার জটে নৌযান চলাচল করতে পারছে না। ফলে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে। দখল আর দুষণের কারণে আশপাশের পরিবেশ বিষ বাস্পে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। পুরো নৌ-পথটি ডাকাতিয়া নদী। বর্তমানে জটিল আকার ধারণ করেছে কচুরিপানার জট। নদীটি কচুরিপানা দিয়ে এমনভাবে বেষ্টিত যে পায়ে হেঁটে নদী পার হওয়া সম্ভব।
আবহমান কাল থেকেই চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ নৌপথটি দিয়ে চাঁদপুর থেকে ৩-৪শ‘মণ নিত্যপ্রয়োজনীয় ও কৃষিপণ্য মালামাল নিয়ে এক একটি নৌকা চান্দ্রা, টুবগী,গাজীপর হয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা শহরে আসত। বর্তমানে এ নৌ-পথে মাত্রাতিরিক্ত কচুরিপানার জটে নৌ-পথটি বন্ধ হয়ে গেছে।
নৌ-চালক বা নৌকার মাঝিদের মধ্যে মো.জহির মাঝি,খালেক মাঝি, মালেক মাঝি জানান, ৬০-৭০টি নৌকা এ পথে আবহমান কাল থেকেই চলে আসলেও কচুরিপানার কারণে এখন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। তাই এখন আর পাল তোলা নৌকার দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যের দেখা ডাতাতিয়াতে মিলছে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, স্থল পথে মালামাল বহনে ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল আর নৌ-পথে আনেক কম খরচ ও ঝুঁকিমুক্তভাবে মালামাল বহন করা যায়। ব্যবসায়ী ও পরিবেশবিদদের দাবি, ডাকাতিয়া নদীর কচুরিপানা অপসারণ পূর্বক নৌ-পথের গতি পুনরুদ্ধার ও পরিবেশ দুষণের হাত থেকে নদী তীরের জন বসতিকে রক্ষা করা ।
সরকার প্রতিবছর ডাকাতিয়া নদীতে জেলে পরিবারগুলোর কথা চিন্তা করে মাছের পোনা অবমুক্ত করছে। কচুরিপানা পচে পানি দুর্গন্ধ হয়ে মাছে মড়ক লেগে কোটি কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে প্রতিবছর পানি দুর্গন্ধ হয়ে বোয়াল,পাবদা,টেংরা,পুটি,রুই,মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে সাবাড় হচ্ছে।
এ নদীর ফরিদগঞ্জ অংশে বেশ কিছু অংশ দখল ও দুষণের কবলে পড়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। উপজেলার বাজারের উত্তর অংশে কেরোয়া ব্রীজের দু‘পাড়ের দু‘পাশ ময়লা-আর্বজনা ফেলে বিশাল অংশ ভরাট করেছে দখলবাজরা। ফলে প্রতি নিয়ত হাজার হাজার মানুষের ঔ পথে দুর্গন্ধের কারণে নাক চেপে ধরে চলতে হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ নিস্তার করতে পারেনি বারবার অভিযোগ করা সত্বেও।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা মো.শওকত আলী জানান, কচুরিপানা অপসারণের জন্য সরকারের বড় ধরণের প্রকল্প দিয়ে পানি ,মাছ ও পরিবেশ দুষণমুক্ত ও জেলে পরিবারের টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তবে বরাদ্দ সাপেক্ষে সমস্যা সমাধান করা যাবে।
ডাকাতিয়া নদী দখল ও দুষণ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আলী আফরোজ জানান,ফরিদগঞ্জ উপজেলার ডাকাতিয়া নদী অংশ মূলত: সিআইপি বেড়িবাঁধের ভেতরে। তাই নদীতে স্্েরাত নেই। ফলে কচুরিপানা জট ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। জেলা পর্যায়ে একটি‘নদী রক্ষা’কমিটি রয়েছে। ফরিদগঞ্জ-চাঁদপুর ডাকাতিয়া নদী কচুরিপানা জটসহ নানাদিক জেলা নদী রক্ষা কমিটির দৃষ্টিগোচরে রয়েছে।
তাছাড়াও এ নদীটি রক্ষার প্রকল্পের জন্য সুপারিশও পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সৃষ্ট সমস্যা নিরসন করা সম্ভব হবে।
মো.শিমুল হাছান
১৫ জুলাই ২০১৯