চাঁদপুর

চাঁদপুরের বাজারগুলো নকল জর্দার সয়লাব

চাঁদপুরের বাজারগুলোতে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির নকল জর্দায় সয়লাব হয়ে গেছে। বৃদ্ধশ্রেনি পানসেবীরা এ বিষয়ে আন্দাজ করার সুযোগ না থাকায় একটি সিন্ডিকেট খুচরা বিক্রেতাদের দিয়ে নকল জর্দা বাজারে নিয়ে আসছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দুই বছর পূর্বেই বন্ধ হয়ে যাওয়া আকিজ গ্রুপের আকিজ জর্দা এখনো চাঁদপুরের বাজারগুলো সয়লব হয়ে আসছে। যাদের ব্র্যান্ডে শীর্ষে থাকা এ কোম্পানির পণ্যটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি সিন্ডিকেট দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে আকিজ জর্দা।

চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজারে প্রায় ছয়টি কারখানার আকিজ নামে জর্দ্দা দেখা মিলেছে।

প্রতারণার শুরুতে কারখানা গুলো ক্যামিক্যালের নাম পরিবর্তন করে আকিজ গ্র“পের সেই আকিজ জর্দার লগো, প্যাকেট এবং কোটার নমুনা একই রেখেছে। বাজারে নকল আকিজ জর্দ্দা গুলো দেখা গেছে, আকিজ, আকিঝ, আকিস, আকিজ প্লাস, আকিজ মাইনাস ও আকিব জর্দ্দা। এইসব জর্দ্দা গুলোর প্যাকেটজাত ও লঘু প্রায় একই ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, এমন বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। আগামী সপ্তাহ থেকে চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজারে বেনামী জর্দা বিক্রেতা ও পরিবেশকের উপর অভিযান পরিচালনা করা হবে।

পান-সুপারী বিক্রেতা শুকু কাঁশারী বলেন, আকিজ জর্দ্দা কোম্পানী বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আকিজ নামে কয়েকটি কোম্পানীর জর্দ্দা বাজারে রয়েছে। একে জর্দ্দা একেক রকম সুগদ্ধি ব্যবহার করা হচ্ছে।

জেলার হাজীগঞ্জ বাজারের জর্দ্দা বিক্রিতে মাসুদ ও সবুজ। তাদের দোকানে বিভিন্ন কোম্পানির জর্দ্দা রয়েছে। তার মধ্যে আকিজ নামেই রয়েছে চার কারখানার জর্দ্দা। জর্দ্দাগুলোর কোটায় দেয়া ঠিকানা বিভিন্ন এলাকার। সুমন ক্যামিক্যাল কারখানার আকিজ জর্দ্দার কারখানা চাঁদপুরে। আল-আমিন ক্যামিক্যাল কারখানার আকিজ জর্দ্দা নারায়ণগঞ্জ।

কিন্তু মালিক আল-আমিনের সাথে ফোনে কথা বলে তিনি জানান, তার কারখানাটি যাত্রাবাড়ীতে। তার জর্দ্দা কারখানার সকল কাগজপত্র ঠিক আছে বলেও দাবী করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজারের ট্রাকরোডের আরিফ বিগত কয়েক বছর যাবৎ নকল আকিজ জর্দ্দা বিক্রি করে আসছেন। ট্রাকরোডের আরিফ ও তার সহযোগী শাহআলম গত ২/১ মাস পূর্বে মদিনা কেমিক্যাল কোম্পানীর নকল আকিঝ জর্দ্দাসহ শাহরাস্তি থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। পরে তারা দু’জন শাহরাস্তি থানা মুছলেকা দিয়ে ছাড়া পায়।

এই নকল জর্দ্দা বাজারজাত হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, অভিজাত কোম্পানীর নাম ভাঙ্গিয়ে নকল করে তা বিক্রি করে অধিক মুনাফা অর্জন করছে। অপরদিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা জর্দ্দা খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে ক্রেতাদের। এমন প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তদারকি ও ব্যবস্থা গ্রহণ করার কারণে এদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে বলে ভূক্তভোগী বিক্রিতাদের অভিযোগ।

প্রতিবেদক- মনিরুজ্জামান বাবলু
১২ জুন ২০১৯

Share