কচুয়ায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ

চাঁদপুরের কচুয়ায় হাতুড়ে ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় ও দায়িত্ব অবহেলায় এক প্রসূতি মায়ের ও অনাগত সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি ) রাতে উপজেলার বিতারা হসপিটাল এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎস্যকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার এ অভিযোগ উঠেছে।

নিহত লাইলি আক্তারের (৩০) ছোট ভাই বায়েজিদ হোসেন জানান,সোমবার বিকালে তার বোনের প্রসব ব্যথা দেখা দিলে সাচার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিতারা হসপিটাল এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মোল্লা ও পরিচালক পান্নালাল সরকার তার বোনকে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে ভর্তির পর ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার অনুপস্থিত থাকায় অপেক্ষার এক পর্যায়ে রাত ১০ টার দিকে তার বোনকে জরুরি বিভাগে‘ সিজার’ করা হয়।

এসময় দায়িত্বরত ডাক্তার তড়িঘড়ি করে সেলাই করে তার শরীরে রক্ত নেই অজুহাত দেখিয়ে এখানে চিকিৎসা হবে না বলে কুমিল্লা নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। পরে লাইলি আক্তারকে কুমিল্লা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে মাধাইয়া এলাকায় আসলে তার ও গর্ভে থাকা অনাগত সন্তানের মৃত্যু হয়।

লাইলী আক্তারের স্বামী খলিলুর রহমান জানান, আমি চট্টগ্রামে থাকি। খবর পেয়ে মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুযারি ) সকালে শ্বশুর বাড়িতে আসি। শুনেছি আমার স্ত্রীকে তারা (হাতপাতাল কর্তৃপক্ষ) একরকম জোরপূর্বক ওই হাসপাতালে ভর্তি করে সিজারের পর সেলাই করে আমার স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে মৃত্যুর পথে ধাবিত করে। আমি আমার স্ত্রী ও অনাগত সন্তানের মৃত্যুর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষ থেকে কচুয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে হাসপাতালে সাংবাদিকরা ছুটে গেলে হাতপাতাল গেইট বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গেইটে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে হাসাপাতালের চেয়ারম্যান শাহজাহান মোল্লার মোবাইলে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন এবং পরিচালক পান্নালাল সরকার মোবাইলে জানান, ঘটনার সময়ে আমি হাসপাতালে ছিলাম না।

তবে শুনেছি রোগী আমাদের হাসপাতালে মরে নাই, হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে এ ঘটনাটি ২ লাখ টাকার বিনিময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।

এব্যাপারে কচুয়াউপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা.মো.সোহেল রানা বলেন, ‘প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখব।’

প্রতিবেদক : জিসান আহমেদ
১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯

Share