৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা দিবস। ১৯৭১ সলে স্বাধীনতা যুদ্ধের এই দিনে মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ অভিযানে মুক্ত হয় কুমিল্লা। ৭ ডিসেম্বর রাত ব্যাপী সম্মুখ সমরে পরাজিত পাকবাহিনী পালিয়ে যায়। ২৭ মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের বিনিময়ে মুক্তির স্বাদ পায় কুমিল্লার মানুষ। ৮ ডিসেম্বর ভোরেই স্বাধীন ভূমির উপর শান্তির পরশ পায় তারা।
সীমান্তের কাছাকাছি কুমিল্লা বিমান বন্দরে পাকিস্তানি বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টর অবস্থান ছিলো। ৭ ডিসেম্বর রাতে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা বিমান বন্দরে পাকিস্তানি বাহিনীর উপর মর্টার ও আর্টিলারিসহ আক্রমন করে। টানা প্রায় ১ ঘন্টারও বেশী সময় সম্মুখ যুদ্ধে পাকিস্তানিরা পিছু হটে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনীর সাথে মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্ট কুমিল্লার গোমতী নদী পার হয়ে কটক বাজার এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মিত্রবাহিনীর অপর দুইটি অংশ ভাট পাড়া ও চৌদ্দগ্রাম দিয়ে কুমিল্লায় প্রবেশ করে। তাদের যৌথ আক্রমণে বিমান বন্দর এলাকা থেকে পাক বাহিনী পালিয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর ব্যবহৃত বাংকার এখনো কুমিল্লা বিমান বন্দরে রয়েছে। এই বাংকার থেকেই মুক্তিবাহিনীর উপর মেশিন গানের আক্রমন করে হানাদাররা।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল থেকেই কুমিল্লার টাউন হল মাঠে ঢল নামে মুক্তিকামী জনতার। স্বাধীন দেশে তারা যুদ্ধে অপরাজিত বীর মুক্তি যোদ্ধাদের ফুলেল আমন্ত্রন জানায় কুমিল্লার পথে পথে। সেদিন সন্ধ্যায় লাখো জনতার উপস্থিতিতে টাউন হলেই স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয় অ্যডভোকেট আহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে।
আজ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কুমিল্লা মুক্ত দিবস উদযাপন হয়েছে। সকালে কুমিল্লা মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে পতাকা উত্তোলন করেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সফিউল আলম বাবুল।
পরে কুমিল্লা টাউন হল থেকে একটি বর্নাঢ্য র্যালী বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে নগর উদ্যানে বঙ্গবন্ধু মূর্যালে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
সব শেষে টাউন হল মুক্তমঞ্চে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল
০৮ ডিসেম্বর,২০১৮
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur