Home / সারাদেশ / চাঁদপুরসহ ২৫ জেলায় নিরাময়কেন্দ্র জেলে পৃথক সেল হচ্ছে
Gov...

চাঁদপুরসহ ২৫ জেলায় নিরাময়কেন্দ্র জেলে পৃথক সেল হচ্ছে

সারা দেশে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়া মাদকের বিস্তার রোধ এবং মাদকাসক্তি নিরাময়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র না থাকা চাঁদপুরসহ ২৫ জেলায় কেন্দ্র স্থাপন ও কারাগারগুলোতে মাদকাসক্ত বন্দিদের জন্য পৃথক সেল গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে এসব আলোচনা ও বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি হাসপাতালে মাদকাসক্ত রোগীদের চিকিত্সার জন্য পৃথক ইউনিট চাওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থানীয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বেসরকারি পর্যায়ে আরো বেশি সংখ্যায় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনে উত্সাহ প্রদান করা হবে সরকারের তরফ থেকে। আর মাদকসংক্রান্ত অপরাধ বিচারে আইনি বাধা নানা থাকায় মাদকপ্রবণ এলাকায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্সের অভিযান বাড়ানো হবে।

সভায় জানানো হয়, বিগত বছরের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের ২৮ হাজার ১৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিগুলোকে সক্রিয় রেখে কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় সভায়। এ ছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে প্রচার অব্যাহত রাখা, ইমামদের দিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবার আগে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলাওয়ারি তালিকা করে মসজিদে মাদকবিরোধী বয়ানের তথ্য প্রদান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতালে মাদকাসক্ত রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি কারাগারে একটি করে সেল করা হবে। সেলগুলোতে মাদকাসক্ত বন্দিদের রাখা হবে।’

মাদকের বিস্তার রোধে সভায় আরো বেশ কিছু পদক্ষেপের ওপর জোর দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে মাদকবিরোধী তথ্যচিত্র প্রদর্শন, সীমান্ত দিয়ে মাদকপাচার রোধ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অধীন দপ্তরগুলোর কার্যক্রম সার্বক্ষণিক তদারকি, মাদকমুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ নিয়ে ব্যাপক প্রচার, বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়মিত মাদকসংশ্লিষ্ট সভা আয়োজন অন্যতম।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সভায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড স্থাপন অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়। একই সঙ্গে মাদকবিরোধী বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টারি ফিল্ম ও টিভিসি বানিয়ে প্রচার, জেলা পর্যায়ে বড় বড় হাট-বাজার ও মেলায় জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো প্রচার করা হবে।

সীমান্ত পথে মাদক প্রবেশ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর সভায় জোর দেওয়া হয়। বলা হয়, মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে অ্যাকশন প্ল্যান হিসেবে প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে একটি উপজেলাকে মাদকমুক্ত ঘোষণার পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০-এ মাদকসংক্রান্ত অপরাধ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। নতুন প্রণীত আইনে সেই বাধা দূর হয়েছে। এ কারণে জেলা-উপজেলায় মাদকপ্রবণ এলাকায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নেই ২৫ জেলায় : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দেশের ২৫টি জেলায় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নেই। সেগুলো হলো গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, সুনামগঞ্জ, বাগেরহাট, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মেহেরপুর, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়। সভায় এসব জেলায় স্থানীয়ভাবে নিরাময় কেন্দ্র চালুর বিষয়ে দৃশ্যমান উদ্যোগের নির্দেশ দেওয়া হয়। (কালের কণ্ঠ)

বার্তা কক্ষ
১৬ জানুয়ারি,২০১৯

Leave a Reply