চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের বিভিন্ন চরাঞ্চলের রোগীদেরকে দ্রুত চিকিৎসার স্বার্থে তাদের যাতায়াতের জন্য চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনির অনুরোধে ১টি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স চাঁদপুরে প্রদান করা হয়।
এরইমধ্যে ড্রাইভার নিয়োগ না দেওয়া একটি অ্যাম্বুলেন্স খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সও ডাকাতিয়া নদীর তীরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থেকে সেটিও নষ্ট হবার পথে।
সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে সাধারণ জনগনের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বার বার উদ্যোগ নিলেও প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতার কারণে সবই ভেস্তে যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুরুত্ব সহকারে দেখবেন-এটাই ভুক্তভোগীদের প্রত্যাশা।
সাধারণ জনগণের অর্থাৎ চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে চরাঞ্চলের লোকদের স্বাস্থ্যসেবা দ্রুত নিশ্চিতে ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর অত্যাধুনিক একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের চরাঞ্চলের রোগীদের পরিবহনের জন্য বিশেষ ভুমিকা রাখার এই নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি শুধু মাত্র একজন ড্রাইভার নেই বলে নষ্ট হওয়ার পথে। বর্তমানে অত্যাধুনিক এই নৌ এ্যাম্বুলেন্সটি ডাকাতিয়ার তীরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কর্মকর্তা (টিএলসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় এই এলাকার চরাঞ্চলের রোগীদের দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স চাইলে তিনি এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি প্রদান করেন। কিন্তু দূরভাগ্য একজন চালকের অভাবে আমরা এখন পর্যন্ত এই অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে পারি নাই।
তিনি জানান,কমিনিউটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের কাছে আমরা এই নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি চালানোর জন্য একজন ড্রাইভার ও তেলের বরাদ্ধ চেয়েছিলাম। ট্রাস্ট আমাদেরকে তেল ক্রয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেছে। কিন্তু ড্রাইভার নিয়োগের ব্যাপারে নিষেধ থাকায় সেই তৈল ক্রয়ের টাকা আমরা আর উত্তোলন করি নাই। বর্তমানে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি শহরের মুখার্জিঘাট এলাকায় ডাকাতিয়ার তীরে রাখা আছে। রাতের বেলায় এটিকে দেখবাল করার জন্য আমাদের কোন নাইট গার্ডও নেই । ইতিমধ্যে এ্যাম্বুলেন্সটির একটি গ্লাসও ভেঙ্গে গেছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউ এইচ এন্ড এফপিও ডা. সাজেদা বেগম বলেছেন, এটাকে আমরা পরিস্কার পরিছন্ন করে রাখি। শিক্ষামন্ত্রী যখন চাঁদপুরে আসেন। তিনি এসে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সগুলো এভাবে দেখতে পারেন।
এদিকে চালকের অভাবে দীর্ঘ ১২ বছরেও চালু করতে পারেনি আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের নৌ-এ্যাম্বুলেন্সটি। প্রায় দীর্ঘ ১২ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে অযতেœ অবহেলায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় অর্ধ কোটি টাকার সরকারি সম্পদটি নষ্ট হয়ে গেছে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নদী মার্তৃক চাঁদপুরবাসীর জন্য সরকারি হাসপাতালে এ অত্যাধুনিক নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি প্রদান করা হয়েছিল। বিভিন্ন চরাঞ্চলের রোগীদেরকে দ্রুত চিকিৎসার স্বার্থে চালকের পদ সৃষ্টি কিংবা চালক না থাকায় সেটি এখন অকেজো হয়ে পরে আছে।
নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটির বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনোয়ারুল আজিম জানান, এ্যাম্বুলেন্সের ইঞ্জিন খুলে গোডাউনে রাখা হয়েছে। ইঞ্জিন দুটুই নষ্ট হয়ে গেছে। বডিটাও নষ্ট হয়ে পরে আছে। চালক নিয়োগ না থাকায় এত দামী একটি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে গেছে।
আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার ফসল চাঁদপুর সদরের চরাঞ্চলের মানুষের জন্য দেয়া এই নৌ এম্বুলেন্সটি যেন নষ্ট হয়ে না যায় সেদিকে নক্ষ রাখার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের দৃষ্টি কামনা করছি।
প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম
২৭ এপ্রিল ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur