শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন,‘ সরকার প্রচুর অর্থ ব্যায় করে গ্রাম আদালতে ব্যবহার করার জন্য এ মূল্যবান ফরম ও রেজিস্টার ছেপেছেন। এগুলো গুরুত্ব সহকারে ও যথযথভাবে প্রতিটি গ্রাম আদালতে ব্যবহার করতে হবে। এ ফরমগুলো শুধুই ফরম নয় বরং এগুলো আদালতের এক একটি নথি। তাই এগুলো ব্যবহার করার পর অতি যত্নে ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষণ করতে হবে। যে কোনো সময় মামলার পক্ষদ্বয় এগুলো দেখতে চাইতে পারে। শুধু তাই নয়, উচ্চ আদালত হতেও এগুলো তলব হতে পারে। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে গ্রাম আদালতের প্রতি সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের দায়িত্বশীল হতে হবে।’
শাহরাস্তি উপজেলাসহ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) চাঁদুপরের ১০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাম আদালতে ব্যবহৃত ২১ ধরণের সরকারি ফরম ও রেজিস্টার হস্তান্তর করার সময় তিনি এ সব কথা বলেন।
ফরম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান মিন্টু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবীবা আক্তার মীরা, উপজেলার বিভিন্ন লাইন-ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ সহ ৯ জন ইউপি চেয়ারম্যান।
এরইমধ্যে চাঁদপুরের শাহরাস্তি সহ কচুয়া, ফরিদগন্জ, মতলব-উত্তর ও মতলব-দক্ষিণ উপজেলার মোট ৪৪ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতে ব্যবহৃত এ ফরম ও রেজিস্টার প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘গ্রাম আদালত বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকরী পদক্ষেপ। এর সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য গোটা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকারের প্রতিটি উদ্যোগ সফল করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘গ্রাম আদালত সক্রিয় ও কার্যকর করতে পারলে এলাকার বহু ছোট-খাট দ্বন্দ্ব-বিরোধ স্থানীয়ভাবেই আইনি প্রক্রিয়ায় নিস্পত্তি করা সম্ভব হবে। মনে রাখতে রাখতে যে, গ্রাম আদালত দেশের প্রচলিত বিচার-ব্যাবস্থারই অংশ। তাই এর প্রতি আমাদের সবার আস্থা স্থাপন করতে হবে। ইউপি চেয়ারম্যানগণ নিয়মিতভাবে গ্রাম আদালতের শুনানী করে এর প্রতি এলাকার জনগণের আস্থা গড়ে তুলতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টামটা-উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক, টামটা-দক্ষিণের চেয়ারম্যান মো.জহিরুল আলম ভূইয়া, রায়শ্রী-উত্তরের চেয়ারম্যান মো.সেলিম পাটওয়ারী, রায়শ্রী-দক্ষিণের চেয়ারম্যান মো.আবু হানিফ, সূচিপাড়া-উত্তরের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার, সূচিপাড়া-দক্ষিণের চেয়ারম্যান মো.আব্দুর রশিদ, চিতৌষী-পূর্বর চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ পাটওয়ারী, চিতৌষী-পশ্চিমের চেয়ারম্যান মো.জোবায়েদ কবির ও মেহের-উত্তরের চেয়ারম্যান মো.মনির হোসেন সহ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা ব্লাষ্টের উপজেলা সমন্বয়কারী গৌতম কুমার সরকার।
প্রসঙ্গত , স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তির জন্যই বাংলাদেশ সরকার ২০০৬ সালে আইন করে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত স্থাপন করেছেন। তাই গ্রাম আদালতকে সক্রিয় ও যথাযথভাবে কার্যকর করতে পারলে এলাকার সাধারণ মানুষ বিশেষ ক’রে অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী উপকৃত হবেন। এছাড়াও উচ্চতর আদালতে মামলার অস্বাভাবিক চাপ বহুলাংশে হ্রাস পাবে।।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুন ২০১৯