চাঁদপুর

চাঁদপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সাবেক ছাত্রনেতা ইব্রাহীম জুয়েলের মনোনয়ন জমা

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সহকারী রিটার্র্র্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমার কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর আগে সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা তাঁর মনোনয়নপত্রের প্রতিটি ফর্দ ভালোভাবে দেখেন এবং কাগজপত্র দেখে ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন গুছানো কাগজপত্র থাকলে আমাদেরও ভালো লাগে। আমরা সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্যে আশ্বাস দিচ্ছি। সবার সহযোগিতা থাকলে ইনশাল্লাহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠ এবং সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক ভিপি কাজী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম আহবায়ক ও সদর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান গাজী, সাবকে জিএস ও চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহনেয়াজ খান, বিএনপি নেতা ও চাঁদপুর পৌর ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মালেক বেপারী।

এদিকে বিশিষ্ট সমাজসেবক ও গণমানুষের প্রিয়ভাজন কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানা যায়, তিনি ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি, সংগঠননীতি, সমাজসংস্কার ও সংস্কৃতিরক্ষার একজন নিরলস কর্মী।

ছাত্রজীবন থেকেই চাঁদপুরের সামাজিক, রাজনৈতিক অঙ্গন ও গণমাধ্যমে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। গরীব-দুঃখীদের লালন-পালনসহ সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকা-ে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। এই পথপরিক্রমায় তিনি ফিরোজা হাফেজ হাফেজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা।

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল চাঁদপুর শহরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম বংশ কাজী পরিবারে ১৯৭৮ সালের ২রা ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। বাবা- মরহুম হাফেজ কাজী, মা ফিরোজা বেগম। পড়াশোনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে হাসান মেমোরিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৯৭ সালে বি.কম, ১৯৯৫ সালে চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে থেকে এইচএসসি ও ১৯৯৩ সালে চাঁদপুর গনি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন।

৯০এর দশকের মাঝামাঝি সময় চাঁদপুর ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জেলা শহরে স্যাটেলাইট সেবা চালু করেন। এরপর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তিনি আরো অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

বর্তমানে প্রযুক্তিকে উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জেলা শহরে ব্রডব্যান্ড সেবা চালু করেছেন। জেলা থেকে প্রকাশিত গণমাধ্যমগুলোতেও ছাত্রজীবন থেকেই তাঁর পদচারণা রয়েছে। এখনো গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের সুখে-দুঃখে অংশ নেন।

হাজারো গণমাধ্যমের ভিড়ে ডিজিটাল এই যুগে সব ধরনের পাঠক যাতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল কিংবা স্মার্টফোন থেকে তাৎক্ষণিক খবর, ভিডিও, ছবি দেখতে পারে সে জন্যে ‘চাঁদপুর টাইমস’ চালু করেন। বর্তমানে জেলার শীর্ষে থাকা এ নিউজ পোর্টালটি চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের বিপরীতে তাঁর নিজস্ব বাণিজ্যিক কার্যালয় ফিরোজা হাফেজ শান্তি নিকেতন থেকে প্রকাশ হচ্ছে।

খেলাধুলার উন্নয়নেও সব সময় সচেষ্ট কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল। জেলার তরুণ ও পেশাদার খেলোয়াড়দের জন্য রেখেছেন বিশেষ অবদান। পুরোনো এবং জনপ্রিয় ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্র চাঁদপুর ও চাঁদপুর ফুটবল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এবং নাজিরপাড়া ক্রীড়াচক্রে যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

সংস্কৃতিকর্মীদের আপনজন ইব্রাহীম জুয়েল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অংশ নেয়ার পাশাপাশি জেলার একাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর মঞ্চের সভাপতি । এছাড়া আমরা ক’জন সাহিত্যপ্রেমি, উপমা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক পরিষদ, নবীন সাহিত্য পত্রিকা, বনলতা সাহিত্যপত্রের উপদেষ্টা হিসেব দায়িত্ব পালন করছেন।

আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যবাসায়িক ও সামাজিক ব্যাক্তিত্ব ইব্রাহীম জুয়েল রেডক্রিসেন্ট চাঁদপুর ইউনিট ও ডায়াবেটিক সমিতি চাঁদপুরের আজীবন সদস্য। চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাব ও চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সম্মানিত সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

ধর্ম ও শিক্ষার প্রসারে সহনুভূতিশীল কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল। তিনি ষোলঘর বাইতুল কাদের জামে মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, ফিরোজা হাফেজ হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা, হাফেজ কাজী স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, আল হেরা একাডেমি পরিচালনা কমিটি ও জামেয়া আশ্রাফিয়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক। আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) মহিলা মাদ্রাসার সদস্য সচিব। (চাঁদপুর সরকারি কলেজ) চাঁসক বিতর্ক পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক।

অবসরে ইব্রাহীম জুয়েল বই ও পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি পরিবারকে সময় দেন। তিনি পারিবারিক জীবনে ছেলে ও দু’কন্যা সন্তানের জনক। ছেলে কাজী আফতাব সামী আল আমিন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজে ও দু’মেয়ে চাঁদপুর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

প্রসঙ্গত, তৃতীয় ধাপে দেশের অন্যান্য ১২৭ উপজেলার সাথে চাঁদপুরে ৭ উপজেলায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলাগুলো চাঁদপুরের সদর, কচুয়া, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি।

এসব উপজেলায় আগামি ২৪ মার্চ ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নি কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান।

সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তাগণ সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং অফিসার অথবা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র অনলাইন কিংবা সরাসরি দাখিলের শেষ দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি। এ তারিখের মধ্যে সকাল ৯টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত মনোনয়ন গ্রহণ করা হবে।

তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের ২৮ ফেব্রুয়ারি, প্রতীক বরাদ্দ ২৯ ফেব্রুয়ারি ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৭ মার্চ।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

Share