দিনমজুর কৃষক মো. রুহুল আমিন (৫৫) দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়েছে তার গলায় ক্যান্সার। গত দু’বছর ধরে ঢাকার মহাখালীতে ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এরইমধ্যে অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে তার। চিকিৎসা এখন শেষ পর্যায়ে। আর একবার থেরাপী নিলে চিকিৎসার কোর্স সম্পন্ন হবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইকাস্তা গ্রামে রুহুল আমিনের বাড়ি। ক্যান্সারের মতো এত ব্যয়বহুল চিকিৎসা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না হতদরিদ্র রুহুল আমিনের পক্ষে। চিকিৎসার শুরুর দিকে লোকমুখে খবর পেয়েছিলেন অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে আছেন আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী। ছুটে আসেন চাঁদপুর শহরের মিশন রোডস্থ আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারীর ব্যক্তিগত অফিসে।
অসহায় রুহুল আমিনের করুণ পরিস্থিতি শুনে তার চিকিৎসার দায়িত্ব এককভাবে নিজের কাঁধে তুলে নেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী। দু’বছর ধরে নিয়মিতভাবে ধাপে ধাপে চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করে চলেছেন তিনি। ইতোমধ্যে চিকিৎসা খাতে ব্যয় হয়েছে বিপুল অংকের টাকা। রুহুল আমিনের শারীরিক অসুস্থতার উন্নতিও হয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
এতদিন রুহুল আমিন অসুস্থ থাকায় তার স্ত্রী নাজমা বেগম এসে চিকিৎসার টাকা নিতেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে আসেন রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম। সমস্বরে তারা একযোগে কৃতজ্ঞতা জানালেন আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারীর প্রতি।
রুহুল আমিন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমি খুব গরীব মানুষ। কৃষি কাজ করে সংসার চালাতাম। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। কারণ, এই রোগের চিকিৎসা করানোর টাকা আমার ছিল না। মানুষের মুখে ওচমান হাজী সাহেবের কথা শুনে তার কাছে ছুটে আসি। তিনি এককথায় আমার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। যেই কথা সেই কাজ।
তিনি আমার চিকিৎসার সব টাকা দিয়েছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি মানুষরূপী ফেরেশতা। আমি আল্লাহর কাছে তার জন্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি। ওচমান হাজীর কথা মতো আমি এবার নৌকায় ভোট দেব, অন্যদেরও নৌকায় ভোট দেয়ার অনুরোধ করবো।
রুহুল আমিনের স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, ওচমান হাজী সাব আমার স্বামীর চিকিৎসার সব টাকা দিয়েছেন। আল্লাহ তার ভালো করুন। হাজী সাহেবের কথা মতো আমরা নৌকায় ভোট দেব। শেখ হাসিনা পাশ করলে আমি নফল নামাজ পড়ে শুকরিয়া আদার করবো।
তিনি আরো বলেন, হাজী সাহেব আমার স্বামীর চিকিৎসার খরচের পাশাপাশি আমাদের সংসারের খরচ ও স্বামীর জন্য ফল-পথ্য কেনারও টাকা দিয়েছেন প্রতিবার। তিনি ওচমান পাটওয়ারীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী বলেন, একজন দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে এবং চিকিৎসায় তার অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আমি মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে পুরো টাকা দিয়েছি।
এর মধ্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত আমার মাসিক সম্মানীর টাকাও রয়েছে। পরিবারটির কাছে আমার একটাই চাওয়া- তারা যেন নৌকায় ভোট দেন এবং আত্মীয়স্বজনদের নৌকায় ভোট দিতে উৎসাহিত করেন।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৫ ডিসেম্বর, ২০১৮