চাঁদপুর

চাঁদপুরে এবার আখের বাম্পার ফলন

চাঁদপুর জেলায় এ বছর আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার কারণে কৃষকদের মুখেও হাসি ফুটেছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সবচে’বেশি আখ আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আখ খুচরা ও পাইকারী বিক্রি। আগামি ১ মাসের মধ্যে অধিকাংশ জমির আখ বিক্রি হবে। এসব জমিতেই আবার আবাদ হবে বোরো ধান।

চাঁদপুরে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মৌসুমে আখের উৎপাদন ৩২ হাজার ১শ মে.টন। চাষাবাদ হয়েছে ৬শ ৭০ হেক্টর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামার বাড়ি, চাঁদপুরের কৃষিবিদ আবদুল মান্নান এ তথ্য জানান ।

জেলার ৮ উপজেলা জুড়ে চলতি বছর ৬শ’৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২ শ মে.টন । খরা, বন্যা, জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততাসহ প্রতিকূল পরিবেশ সহ্য করতে পারে অর্থকরি এ ফসল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া সূত্র মতে, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ ৬৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ১শ’২০ মে.টন, মতলব উত্তরে চাষাবাদ ১ শ’১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার ৮০ মে.টন, মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ শ’ ৪০ মে.টন, হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৮ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ শ’ ৮৪ মে.টন, শাহারাস্তিতে চাষাবাদ ৩৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র্া ১ হাজার ৬ শ’ ৮০ মে.টন, কচুয়ার চাষাবাদ ৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২শ’৪০ মে.টন, ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ৩ শ’ ৩৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র্া ১৬ হাজার ৪০ মে.টন ও হাইমচরে চাষাবাদ ৭ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ শ ৩৬ মে.টন।

গোটা জেলাজুড়ে কমবেশি আখের বেশ চাষাবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতিবছরই মতলবের উৎপাদিত সু-স্বাদু ও রসালো এ আখ মিষ্টি বেশি হওয়ায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকাররা নিয়ে যায়। এতে করে দেশের আখ রসের চাহিদায় চাঁদপুরে আখের ফলন ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

মতলব উত্তরের ছোট হলদিয়া, নিশ্চিন্তপুর, নান্দুরকান্দি, লবাইরকান্দি, বেগমপুর, বড় হলদিয়া, সরদারকান্দি,ওটারটরম হাজীপুর, রাঢ়ীকান্দিসহ হাইমচরের গন্ডামারা ও ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আখের ব্যাপক চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্য করা গেছে।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা নোয়াখেরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো থাকায় চাঁদপুরে আখের আবাদ খুবই ভালো হয়েছে। আখ লাভজনক হওয়ার কারণে কৃষকদেরও দিন দিন আখ আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। চাঁদপুর ‘গ্যাারি ’ নামক আখ এখন স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে এবং আখ চাষীরা ভালো দামও পাচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ আবদুল মান্নান চাঁদপুর টাইমসকে জানান,‘চাঁদপুরের আখ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রতিবছরই অর্জন হয়ে থাকে ।এবার ৬ শ’৭০হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। চাঁদপুরের উৎপাদিত আখ দিয়ে গুড় হয় না। ছিবিয়ে মানুষ রস খান । গ্রামের চেয়ে শহরে এর চাহিদা বেশি। ’

চিকিৎসকদের মতে,মিষ্টি রসে ভরা এ আখের আছে নানা গুণ। জন্ডিস সারাতে আখের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। চিবিয়ে খেতে কিছু কষ্ট হলেও এর মিষ্টি রস সে কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। আধুনিক পদ্ধতিতে আখ এখন আর দাঁত দিয়ে ছিবিয়ে খেতে হয় না,সৃৃষ্টি হয়েছে আখ চিবানোর জন্যে নানা পদ্ধতির মেশিন।আখের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। এ পটাশিয়াম অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট হিসেবে কাজ করে যা হজমে সহায়তা করে এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে।

প্রতিবেদনে: আবদুল গনি
২৭ জুলাই ২০১৯

Share