চাঁদপুরে চাল ক্রয় ৩ হাজার মে. টন : মজুত ১১ হাজার

চাঁদপুরে চলতি অর্থবছরের বোরো মৌসুমে চাল ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিলো ৩ হাজার ১ শ’ ৯২ মে.টন। সরকারি নির্দেশিত সময়ে ক্রয় করা হয়েছে ৪ হাজার ১ শ’ ৭২ মে.টন।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা লক্ষ্যে সরকারের এ পদক্ষেপ বলে জানা গেছে। চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনুমোদিত এবার ১৬ জন মিল মালিকগকে এ চাল সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চাঁদপুরে এবার সরকারিভাবে কেজি প্রতি বোরো চাল ৩৮ টাকা করে চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩ হাজার ১ শ’৯২ মে.টন । জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে, জেলায় মে মাসে  চাল ক্রয় শুরু করা হয়েছে যা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল ক্রয় করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের আপতকালীন মজুতকরারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফলে ইতোমধ্যেই চাল ক্রয়ের সরকারি নির্দেশে মতে ৪ হাজার ১  শ’  ৭২ মে.টন চাল ক্রয় করা হয়েছে বলে সংশিষ্ঠ কর্মকর্তা জানান।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, সরকারের সারাদেশে এবার বোরো মৌসুমে ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত  ছিল । ২৬ টাকা ধরে ধান এবং ৩৮ টাকা দরে চাল সংগ্রহ করা হবে। মেয়াদ ছিল ২ মে থেকে শুরু হয়ে সংগ্রহ অভিযান চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ।

খাদ্য বিভাগের সূত্রে জানা গেছে , চলতি বছরের ২ মে ২০১৮ থেকে সারা দেশসহ চাঁদপুরের সকল উপজেলায় কৃষকদের কাছ থেকে মিলারগণ বোরো ধান ক্রয় করে । সংশ্লিষ্ঠ চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনুমোদিত ডিলারগণের কাছ থেকে চাঁদপুরের চাল ক্রয় করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের খাদ্য বিভাগের কর্মকর্ত জবাবে বলেন,‘অসময়ের বৃষ্টির কারণে রোরোর কোনোই ক্ষতি হয়নি । তবে বর্তমানে ধান ঘরে তুলতে বৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় জনবল পাওয়া যাচ্ছে না । তাই কিছু সমস্যা হচ্ছে।’ চাঁদপুর সেচ ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জে ব্যাপক ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়। যাকে বাম্পার ফলন বলা যায়।

চাঁদপুরে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ইরি-বোরো চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা  ২ লাখ ৪৫ হাজার মে. টন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছেন। হাইব্রিড,স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল এ ৩ জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়ে থাকে  । কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান,হাইব্রিড,স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ৬১ হাজার ২ শ’ ৬৬ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪ শ’ ৫৩ মে.টন চাল। যা গেলো বছরের চেয়ে ১ হাজার ৩ শ ’৩০ হেক্টর জমি কম চাষাবাদ হচ্ছে।

চাঁদপুররে ৮ উপজলোয় ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ২০১৭-২০১৮ র্অথবছরে ১ শ’৭১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে সোনালী,অগ্রণী,জনতা ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ শ’৭১ কোটি টাকা ।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ভার-প্রাপ্ত  কর্মকর্তা মো.মুখলেছূর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,  ‘ সরকারি হিসেব মতে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল ক্রয়ের সময়সীমা রয়েছে। সে পর্যন্ত মিলারগণ চাল সংগ্রহ করে জেলা বিভাগকে সরবরাহ করে লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও কিছু চাল বেশি ক্রয় করা হযেছে।’ বথমানে চাঁদপুর জেলা খাদ্য গুদামে ১১ হাজার ৮ শ’ ৪৩ মে.টন চাল  এবং ১ হাজার  ৫শ’  ১২ মে.টন গম মওজুদ রয়েছে। ’

তিনি আরো বলেন,  ‘চাঁদপুর জেলার  ৩৬ হাজার ৫শ’৭৫  জেলে পরিবারের জন্যে বরাদ্দ রয়েছে  ৭শ’৩১ মে.টন । ১০ টাকা কেজির চাল বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ৫শ’ ৯৪ মে.টন চাল । সেপ্টেম্বর থেকে নবেম্বর পর্যন্ত ৫৩ হাজার ১ শ’ ৫৬ জন কে ঔ বরাদ্দকৃত চাল ৩০ কেজি করে ১ শ’ ২৬ জন জন অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে েপ্রদান করা হবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ মতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন ওই চাল জিআর,টিআর,ভিজিডি,ভিজিএফ, আপতকালীন সময়ে ও  প্রকল্পের মাধ্যমেও বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। যা স্ব-স্ব ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি কর্তৃক বিতরণ করা হয়ে থাকে ।’

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মুখলেছূর রহমান অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘ মাঠ  লেভেলে অনেক জন প্রতিনিধি  পরিদর্শন না করেই তারা পূর্বের ভিজিডি বা খানা জরিপ থেকে কিংবা ঘরে বসেই তালিকা তৈরি করে পাঠানোর কারণে প্রকৃতরা বঞ্চিত হছ্ছে । এতে সরকারের মূল উদ্দেশ্যও ব্যাহত হচ্ছে ্। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী মহোদয়গণ নজর দিলে এমনটি হয়তো হবে না ।’

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
৯ অক্টোবর, ২০১৮

Share