চাঁদপুর মতলবে উত্তরে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকা হতাশ হয়ে পড়েছে। এ বছর বোরো মৌসুমে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা খুশি হলেও বাধ সেজেছে ব্লাস্ট রোগ। বোরো ধানে নেক ব্লাস্ট রোগে মহামারি আকার ধারন করেছে।
বিশেষ করে বিআর-২৮ জাতের ধানে এ রোগের প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দিনে গরম-রাতে ঠান্ডা, কুয়াশা, অতিবৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়ার কারনে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে বোরো ধানে ব্যাপকভাবে নেক ব্লাস্ট ও লিফ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে ধান।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে ৯ হাজার ১শ ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। শুক্রবার(১৯ এপ্রিল) মতলব উত্তর উপজেলার তালতলী, কলাকান্দা, ঠাকুরচর, গজরা, সুজাতপুর, নাথুতহশিলদার কান্দি, আদুরভিটি বিলে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে সোনালী হাসি। কিন্তু নেক ব্লাস্ট রোগ ও লিফ ব্লাস্ট রোগ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
আদুরভিটি গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, আমি ১ একর জমিতে বিআর-২৮ ধান করেছি। নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষি অফিসের পরামর্শে চার বার স্প্রে করার পরও কোন প্রতিকার পাইনি। এখন আমার কি হবে? এক মুঠো ধানও পাবো না।
তিনি জানান, আদুরভিটি, দেওয়ানজিকান্দি, ঠাকুরচর বিলে প্রায় ২০ একর জমিতে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
নাথুতহশিলদার কান্দির গ্রামের খোরশেদ আলম মিজি জানান, এমন কোনো ধানের জমি নেই যেখানে ধানে নেক ব্লাস্ট ও লিফ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়নি। এ রোগ দিনের পর দিন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে এ মৌসুমে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারবে না।
দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া জানান, ধানে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এক পর্যায়ে ধানের পাতা ঝলসে যায়। এ ছাড়াও ধান সাদা হয়ে চিটা হয়ে যায়। পাতা ঝলসে যাওয়া ও ধান চিটা হয়ে যাওয়া এ রোগকে কৃষি বিভাগের লোকজনরা লিফ ব্লাস্ট রোগ বলে দাবী করছে।
মতলব উত্তর উপজেলার ৪৩টি কৃষি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ১৩ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গন মাঠে ছুটে গিয়ে কৃষকদেরকে উপরোক্ত রোগ হতে ধান রক্ষায় প্রয়োজনীয় (সঠিক) কীটনাশক ঔষধ প্রয়োগের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, যেসব কারনে নেক ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে কৃষকদের প্রয়োজনীয় (সঠিক) কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও মাঠ দিবস করে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, ধানের জমিতে রোগ হোক বা না হোক শীষ বের হওয়ার আগেই জমিতে সঠিক কীটনাশক পরিমাণ মতো মিশিয়ে ৭ দিনে দু’বার প্রয়োগ করতে হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেট
২০ এপ্রিল,২০১৯