ইলিশ উৎপাদন ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ : চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রে ড.ইয়াহিয়া

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট নদী কেন্দ্রে আয়োজিত ‘বার্ষিক গবেষণা ও অগ্রগতি ২০১৮-২০১৯ পর্যালোচনা ও প্রকল্প প্রস্তাবনা শীর্ষক’ দিনব্যাপি আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকার ১০ টায় চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট নদী কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট-এর মহা-পরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ।

বক্তব্যে উপস্থিত অন্তত অর্ধশত গবেষকের উদ্দেশ্যে বলেন,‘বর্তমানে ইলিশ উৎপাদন ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা জলবায়ূ পরিবর্তন, জলাশয় ভরাট, মানুষের প্রোটিন চাহিদা পুরণ ও জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে দিন দিন মাছের চাহিদা বাড়ছে। ত্ইা উৎপাদন বাড়ানো ও উৎপাদনের ধারাবাহিকতা আমাদের বজায় রাখতে হবে।’

তিনি আরো বলেন,‘মৎস্য বিভাগ বিরাজমান সামগ্রিক বিষয়গুলো নিয়ে মৎস্য গবেষণা বিভাগ কাজ করছে। জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় জালের মেট সাইজ,জলবায়ূ ও নতুন নতুন উদ্ভাবনী বিষয় এর মধ্যে রয়েছে। বর্তমান সরকার একটি গণমুখী সরকার। সরকার জেলেদের আইডি কার্ড ও জেলেদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সরকারকে বিপক্ষ ভাববার কোনোই সুযোগ নেই।বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চালু হচ্ছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মৎস্য বিভাগে এর একটি নতুন প্রকল্প সংযুক্ত হচ্ছে। ইলিশের উৎপাদনে মিডিয়ার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। প্রেটিনের চাহিদা পূরণে মাছের বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে দেশে এখন ইলিশের উৎপাদন ঈর্ষণীয়।’

উদ্ভোধনী এ পর্বে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট নদী কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যে মধ্যে কর্মশালায় মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সাবেক ডিজি ড.এম এ মজিদ ও কনসালটেন্ট ড.জে সি হালদার, মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট পরিচালক ড.মো.নূরুল্লা প্রমুখ। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.রবিউর আউয়াল্ হোসাইন স্বাগত বক্তব্য দেন।

কর্মশালাটির প্রথম পর্বে মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সাবেক মহা-পরিচালক ড.এম এ মজিদ এর উপস্থাপনায় পৃথক ১১ টি বিষয়ে ১১জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাদের গবেষণালদ্ধ তথ্য-উপাত্ত ও প্রস্তাবনা পাওয়ারপয়েন্স প্রেজেন্টেশনের কর্মশালায় উপস্থাপন করেন।

এরা হলেন ড.মো.ইয়ামিন হোসেন ,ড.মো.জাহাঙ্গীর সরকার,ড.মো.আজহারুল ইসলাম,ড.মো.রাশেদুল কবির মন্ডল.ড.মো. তরিকুল ইসলাম , ড. মো. আশ্রাফুল আলম , বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মনজুরুল হাসান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইসতিয়াক হায়দার ,ড.এ এসএম তানবিরুল হাসান ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আজহার আলী ।

কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সাবেক সিএসও ও কনসালটেন্ট ড. জেসি হালদারের সঞ্চালনে ৯ টি পৃথক পৃথক বিষয়ে ৯ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাঁদের গবেষণালদ্ধ বিয়য ও নুতন প্রস্তাবনা কনটেইনের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত পরিসরে কর্মশালায় উপস্থাপন করেন।

এরা হলেন : বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বি এম শাহিনুর রহমান ,মো.মেহেদি হাসান প্রামাণিক, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিত বসু, ড.এ এসএম তানবিরুল হাসান, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আজহার আলী, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফ্লোরা ও ড.রবিউল আউয়াল হোসাইন।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের গবেষণালদ্ধ বিষয় ও নুতন প্রস্তাবনা কনটেইনের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত পরিসরে কর্মশালায় উপস্থাপনের বিষয়ের মধ্যে ছিলো-ছোট মাছের পেটে ডিম,জলবায়ূ পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব, ইলিশের খাবার, প্রজনন,অভয়াশ্রম, কীটনাশকের অপব্যবহার , ইলিশের মজুদ সংরক্ষণ, ফ্রিজিং,বিভিন্ন রকম খাবার তৈরি,একশান প্যøান, পেকেজিং, পুকুরে কৃত্রিম প্রজনন, হালদা নদীতে প্রজনন, সি-উইট, কাপ্তাই লেকের প্রজনন সমস্যা ও সমাধান, খেপুপাড়ায় ল্যাব স্থাপনের উপযোগিতা, কাপ্তাই লেকে রুই, কাতল, মৃগেল কালিবাউস, পাবদা, মাগুর মাছের চাষাবাদ, খাঁচায় ইলিশ চাষ, কুচিয়া চাষ প্রভৃতি।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট নদী কেন্দ্রে আয়োজিত ‘বার্ষিক গবেষণা ও অগ্রগতি ২০১৮-২০১৯ পর্যালোচনা ও প্রকল্প প্রস্তাবনা শীর্ষক’ দিনব্যাপি এ আঞ্চলিক কর্মশালায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক, কয়েকটি জেলা ও উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং মৎস্যজীবী সংগঠনের ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
১৩ জুন ২০১৯

Share