সারাদেশের ন্যায় নান্দনিক ও অত্যাধুনিক ডিজাইনে চাঁদপুরে জেলা সদরে সরকারিভাবে ১ টি ৮ উপজেলায় ৮টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) চাঁদপুর টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ গুলোর মধ্যে জেলা সদরেরটি সরকারি জমিতে, মতলব উত্তর, হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও হাইমচরেরটি স্থানীয় সমাজসেবকদের দানকৃত ও বাকিগুলো অধিগ্রহণকৃত জমিতে নির্মিত হচ্ছে । প্রতিটির স্থান ভেদে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ কোটি থেকে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা করে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ টির কাজ শুরু ও ২ টির কাজ শুরুর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে,চাঁদপুরের জেলা সদরে ৪ তলাভীতে সরকারিভাবে ১ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্র পৌর পার্ক সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে সরকারি খাস জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে। এর টেন্ডার প্রক্রিয়াও চলছে।
চাঁদপুর সদরের মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে চাঁদপুর-রায়পুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিসের দক্ষিণে জেলা পরিবার পরিকল্পনা ও জেলা পরিসংখ্যান অফিস সংলগ্ন অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে নির্মাণ হচ্ছে ।
মতলব উত্তরে মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে ছেঙ্গারচর পৌর সভা সংলগ্ন দানকৃত জমিতে নির্মাণ হচ্ছে। চাঁদপুরে প্রথম এটির কাজ শুরু হয়। মতলব দক্ষিণের মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে নবকলস নামক স্থানে অধিগ্রহণকৃত জমিতে নির্মাণ হচ্ছে ।
হাজীগঞ্জের মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে পশ্চিম কাজীর গাঁও কচুয়া সড়কের পাশে দানকৃত জমিতে নির্মাণ হচ্ছে । শাহরাস্তির মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে নির্মাণ হচ্ছে নিজ মেহের। তবে স্থান নির্ধারণে চূড়ান্ত পর্ব শেষ হলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
ফরিদগঞ্জের মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে উপজেলা বাউন্ডারির স্কুল মাঠ সংলগ্ন অধিগ্রহণকৃত জমিতে নির্মাণ হচ্ছে । হাইমচর মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে নির্মাণ হচ্ছে হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারীর বাড়ির সামনে তাঁরই দানকৃত জমিতে। কচুয়া মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ৩ তলাভীতে কচুয়া পলিটেকনিক ইন্সিটিটিউটের পূর্ব পাশে দানকৃত জমিতে নির্মাণ হচ্ছে।
প্রসঙ্গত,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বিবেচনাধীন ও অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি একটি।‘প্রতিজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় ১টি করে ৮টি ও জেলা সদরে ১টি ‘মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ’হচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও জাতীয় ডিজাইন অনুযায়ী ৪৩ শতাংশ ভূমির ওপর উপজেলায় ৩ তলা ভীতে ও জেলা সদরে ৪ তলা বিশিষ্ট এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে । স্থানীয় পর্যায়ে এক বা একাধিক সমাজহিতৈষী ব্যাক্তি এর জমি প্রদানকারী। চাঁদপুরে ৪ উপজেলায় জমি প্রদানকারী জমি দান করেছেন।
২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের মে মাসে এর কাজ শুরু হয় যা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এগুলোর নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরইমধ্যে ৭ টির নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। চাঁদপুর জেলা সদরেরটির স্থান নির্ধারণের জটিলতা নিরসন হয়েছে বলে চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছেন।
চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মাহাবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার (১ আগস্) চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘এ প্রকল্পটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিবেচনাধীন একটি প্রকল্প। চাঁদপুরের এ প্রকল্পের কাজ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহেই অগ্রগতির রির্পোট মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পেশ করতে হচ্ছে। চাঁদপুরের মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো চালু হলে ইফার সব কাজ , হজ্ব ও হজ্বের যাবতীয় বিষয় ও সমাজিক সমস্যা নিরসনে ধর্মীয় বিষয়ের রীতিনীতি সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দু হবে মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,‘২০২০ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশ রয়েছে।’
চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মো.শাহ আলম ইতোমধ্যেই বলেছিলেন,‘ প্রতিটি উপজেলা ও জেলা সদর হবে ইসলামী সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। এখানে ১ জন খতিব বা ইমাম ও ১ জন মুয়াজ্জিন সরকারিভাবে নিয়োগ দেয়া হবে। স্ব স্ব উপজেলার প্রত্যেক হজ¦ সংক্রান্ত ও হজ্বযাত্রীর বিষয়গুলোর সকল প্রকার সেবা প্রদান, ইমাম প্রশিক্ষণ, ইসলামি গবেষণাসহ ধর্মীয় ৮টি বিষয় ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
প্রকৌশলী (তড়িৎ) আবদুল্লাহ-আল-মামুন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘দেশে মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো নির্মাণ হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ ধর্মীয় যে কোনো বিষয়ে পরামর্শ চাইলে তা পাবে। সরকার এখানে ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষিত আলেম-ওলামাকে নিয়োগ দেবে।একটি উপজেলার সকল ধর্মীয় বিষয়ের ফয়সালা এ মসজিদ থেকে প্রদান করা হবে। এছাড়াও মডেল মসজিদভিত্তিক ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো থেকে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা রোধে সুপরামর্শ পাবেন।’
প্রতিবেদক :আবদুল গনি,
২ আগস্ট ২০১৯