এলসি নিয়ে লুকোচুরি, ভালো গ্রাহকরা এলসি খুলতে পারছেন না, ঋণখেলাপি প্রভাবশালীরা বহাল-তবিয়তে। ডলার সংকটের অজুহাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো চাহিদা অনুযায়ী এলসি খুলছে না, চরম ক্ষতির মুখে দেশের শিল্প খাত * সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থার মধ্যে বৈষম্যের মাত্রা বেড়েই চলেছে। ভালো গ্রাহকরা ব্যাংকের প্রাপ্য নানা সুবিধা থেকে পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি এলসিও খুলতে পারছেন না। অথচ ব্যাংকিং সেক্টরে যাদের বিষয়ে প্রবল নেচিবাচক ইমেজ রয়েছে তারা সব সুবিধা অনায়াসে পাচ্ছেন।
ইচ্ছাকৃতভাবে বড় বড় খেলাপি হলেও আইনের মারপ্যাঁচে তাদের নাম কোনোদিন শীর্ষ খেলাপির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় না। এ রকম বৈষম্যের ফাঁদে পড়ে ভালো গ্রাহক তথা সৎ ও নিষ্ঠাবান শিল্প উদ্যোক্তাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তারা এলসি খুলতে না পারায় শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারছেন না।
এর ফলে বিনিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা সফল হবে না বলে বিশ্লেষকদের অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেন। ভুক্তভোগী শিল্পপতিরাও মনে করেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। না হলে বিনিয়োগে আরও বিপর্যয় নেমে আসবে।
এদিকে আয়ের তুলনায় বেশি মাত্রায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার মধ্যে ডলার নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। বেশির ভাগ ব্যাংকের কাছেই চাহিদা অনুযায়ী ডলার নেই। ফলে তারা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানির এলসি খুলতে পারছে না। রফতানি বা রেমিটেন্স বাবদ যেসব ডলার ব্যাংকগুলোতে আসছে সেগুলো সরকারের ঘনিষ্ঠ দাবিদার প্রভাবশালীরা প্রভাব খাটিয়ে তুলে নিয়ে এলসি খুলছেন। এর ফলে অনেক ভালো গ্রাহক এলসি খোলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এভাবে ডলার সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ভালো গ্রাহকের এলসি ফেরত দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া ডলার সংকটের কারণে বড় অঙ্কের এলসি খোলার আগে শাখাগুলোকে প্রধান কার্যালয়কে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে করে ঝুঁকি এড়াতে বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান না করে এলসি খুলছে না ব্যাংক। তবে প্রভাবশালীদের তদবির আসলে তাদের পক্ষে সবকিছু মুহূর্তেই জায়েজ হয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণসহ অন্যান্য দুর্নাম থাকায় অনেক বিদেশি ব্যাংক বাংলাদেশি ব্যাংকের এলসি নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। নিলেও তৃতীয় কোনো বিদেশি ব্যাংকের গ্যারান্টিতে নিচ্ছে। এতে করে দেশি ব্যাংকগুলোর দুর্নামের আমলনামা ভারি হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলারের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। কারণ রফতানির তুলনায় আমদানি বেশি হচ্ছে এবং সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি। এছাড়া নানা কারণে খোলাবাজারে (কার্ব মার্কেট) ডলারের লেনদেন বেড়েছে। কিন্তু তিনি মনে করেন, যদি দেশের ভালো গ্রাহকরা যথাসময়ে এলসি খুলতে না পারেন তাহলে শিল্প প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব জহিরুল হক ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, অবৈধভাবে বিদেশে ডলার চলে গেলে তো ডলারের সংকট হবেই। মূলত যখনই এমন ঘটনা বেশি ঘটে তখন ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়। আর ডলার সংকট থাকলে দাম বেড়ে যায়। সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে সংকট আরও বাড়বে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, মূল সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। শুধু ওপরে চিকিৎসা দিলে হবে না। ব্যাংকে জাল-জালিয়াতি বন্ধ করলে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ বাড়বে না। তাহলে ব্যাংকগুলোও আর্থিকভাবে দুর্বল হবে না। পরিচালনার মান ভালো করতে হবে। তখন আর ঝুঁকি থাকবে না। এছাড়া ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণ করে দিলে ব্যাংক সে ব্যবসায় আগ্রহ দেখাবে না। কারণ ব্যাংক কমে কিনে বেশি দামে এলসি খুলবে না। এটাই স্বাভাবিক।
সূত্রগুলো দাবি করছে, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া বড় প্রকল্পগুলোর জন্য পণ্য আমদানি ব্যয়, বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কিস্তি পরিশোধ, শিল্প খাতের জন্য আমদানি করা তরল গ্যাসের দেনা শোধ করার কারণে ব্যাংকগুলোর ওপর ডলারের চাপ পড়েছে। যে কারণে বেসরকারি খাতের অনেক উদ্যোক্তা এলসি খুলতে পারছেন না। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি ব্যয়ও বাড়তে শুরু করেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ওই সময়ে আমদানি ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। এ সময় রফতানি আয় হয়েছে ২ হাজার ১৬ কোটি ডলার। এ হিসাবে আলোচিত সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯২ কোটি ডলার। এ সময়ে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৬ শতাংশ।
এসব কারণে যে হারে ডলারের ব্যয় বেড়েছে, সে হারে আয় বাড়েনি। এতেই বাজারে ডলারের সংকট হয়েছে। এদিকে বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মেটাতে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। এর আগের অর্থবছরে (২০১৭-১৮) বিক্রি করেছিল ২৩১ কোটি ১০ লাখ ডলার। এরপরও বাজারে ডলার সংকট কাটছে না।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রো রেলসহ বেশকিছু মেগা প্রকল্পের জন্য আমদানির ওপর চাপ বেড়েছে। এগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ আমদানি করতে হচ্ছে। তাই ডলারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের কিছুটা টান পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেনা শোধেরও চাপ রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাজারে ডলারের সরবরাহ ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে বলে তিনি দাবি করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো ব্যাংক ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলছে না- এমন তথ্য তার জানা নেই।
সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলে দেনা পরিশোধ করতে না পারাটা ব্যাংকের জন্য বড় দুর্নামের বিষয়। এ কারণে ব্যাংকগুলোও এলসি খোলার ক্ষেত্রে সতর্ক হয়েছে। বিশেষ করে বড় অঙ্কের কোনো এলসি খোলার আগে প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নেয়ার জন্য বেশির ভাগ ব্যাংকের শাখাগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি সরকারি ব্যাংক ১৫ লাখ ডলারের বেশি এলসি খোলার আগে তাদের ডিলিং রুমকে (বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কক্ষ) জানানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অপর একটি সরকারি ব্যাংক বড় অঙ্কের এলসি খোলার আগে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিভাগকে জানানোর নির্দেশ জারি করেছে। জাল-জালিয়াতির কবলে পড়ে জনতা ব্যাংকের অবস্থাও বেহাল। সেখানে প্রভাবশালী ছাড়া বড় অঙ্কের এলসি খোলা কঠিন।
বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকও এলসি খোলার ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এতে বড় অঙ্কের এলসি খুলতে গেলে বেশি দাম দিয়ে ডলার কিনতে হচ্ছে। বেসরকারি খাতের আরও একটি ব্যাংক এলসি খোলার আগে নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে (বিদেশি ব্যাংকে থাকা অ্যাকাউন্ট) ডলার পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করতে বলেছে।
এদিকে ডলার সংকটের কারণে এর দাম বেড়েই চলেছে। দুই মাসের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম চার দফায় বাড়িয়েছে ২৫ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৮৪ টাকা ১৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে, যা দুই মাস আগে ছিল ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। আর এক বছর আগের তুলনায় এখন ১ টাকা ২৫ পয়সা বেশি দরে ডলার বিক্রি করছে।
সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৮৩ টাকা ২০ পয়সা দরে ডলার কিনে প্রতি ডলার বিক্রি করেছে (এলসি মূল্য) ৮৪ টাকা ২০ পয়সা দরে। কোনো কোনো ব্যাংক এর চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে।
আন্তঃব্যাংক (এক ব্যাংক যখন অন্য ব্যাংক থেকে কিনে) বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮২ টাকা ৯৫ পয়সা। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ টাকা ১৫ পয়সায়।
সূত্র জানায়, ব্যাংকে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দেয়া ঋণগুলো এখন ফেরত আসছে না। দীর্ঘদিন ধরে ঋণ অবলোপন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বারবার ঋণ পুনঃতফসিল এবং ঋণ পুনর্গঠন করে এ খাতের সমস্যাগুলো আড়াল করে রাখা হয়েছে। এখন সেগুলো ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পাচ্ছে। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়ে এখন ১ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত তথ্য। তবে গত পাঁচ বছরে ঋণ পুনঃতফসিল ১ লাখ কোটি টাকা এবং ঋণ অবলোপন ও ঋণ পুনর্গঠনের ৫৬ হাজার কোটি টাকা হিসাবে নিলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত অঙ্ক দাঁড়াবে আড়াই লাখ কোটি টাকা।
এছাড়া আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিং ছাড়াও কোনো পণ্য না এনেও এলসির বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে ৩ শতাংশ খেলাপি ঋণকে স্বাভাবিক ধরা হয়। এর বেশি হয়ে গেলেই ঝুঁকিপর্ণ ধরা হয়। বর্তমানে গড়ে খেলাপি ঋণের হার ১১ শতাংশ। এছাড়া কিছু ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশের ওপরে।
যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশি এবং ব্যবস্থাপনায় নানা ত্রুটি আছে, সেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে অনেক বিদেশি ব্যাংক। ফলে ওইসব বিদেশি ব্যাংক এখন বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকের এলসি নিচ্ছে না। নিলেও তৃতীয় কোনো বিদেশি ব্যাংকের গ্যারান্টিতে নিতে হচ্ছে। এতে ব্যবসায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশি ব্যাংকের দুর্নাম হচ্ছে। এসব কারণে অনেক দেশি ব্যাংকও এলসি খুলতে রাজি হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতি কতটা খারাপ, তা উচ্চ খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি এবং মূলধন ঘাটতি দেখলেই বোঝা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে ১৫টি ব্যাংক। এছাড়া বেশ কয়েকটি ব্যাংকে এক টাকাও প্রভিশন উদ্বৃত্ত নেই। এসব ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতির ঝুঁকিতে রয়েছে।
উল্লিখিত ১৫ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৯ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের ঘাটতি ৭ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। বেসরকারি ১১ ব্যাংকে ১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি রয়েছে ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে আলোচিত বেসিক ব্যাংকে।
ব্যাংকটির ঘাটতির পরিমাণ ৩ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। আর প্রভিশন ঘাটতির তালিকায় প্রথমবার যুক্ত হয়েছে নতুন প্রজন্মের সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটি ২৩ কোটি টাকার ঘাটতিতে পড়েছে। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া ও নিট আয় কমে যাওয়ার কারণেই এই ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে উচ্চ খেলাপি ঋণে হাবুডুবু খাচ্ছে ৭ ব্যাংক। এসব ব্যাংকের সর্বনিু ৩৪ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় জনতা ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ রয়েছে ১৬ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
এছাড়া বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬২ দশমিক ২৩ শতাংশ। বিডিবিএলের ৮৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫৪ দশমিক ১০ শতাংশ। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের খেলাপি ৫৯৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের খেলাপি ৭০৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ফারমার্স ব্যাংকের (পরিবর্তিত নাম পদ্মা) খেলাপি ৩ হাজার ৭১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের খেলাপি ১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। (যুগান্তর)
বার্তা কক্ষ
৩ মার্চ, ২০১৯