খেলাপি ঋণ কমানোর বিষয়ে সরকারের কাজের ওপর বিশ্বাস রাখতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সচিবালয়ে আজ বুধবার সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সব সময় বলি যে আপনারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখবেন। এটা এখন আমার ট্রেড মার্ক শব্দ। গত ১০ বছরে যা বলেছি, এখন পর্যন্ত তার ব্যত্যয় হয়নি। একদিকে আমার বিশ্বাস, অন্যদিকে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। আর হচ্ছে আমার লেখাপড়া। আপনারা ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ সুদ হিসাব করবেন, কিন্তু এটাতো কেউ দিচ্ছেন না। আর তারাই খেলাপি হচ্ছেন।’
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, এভাবে খেলাপি বানিয়ে লাভ কী? বিশ্বের কোনো দেশেই এ রকম সুদ নেই। খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য কাজই শুরু করতে পারেননি বলে দাবি করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা হয়তো বলতে পারেন ঋণখেলাপি কমছে না। কিন্তু খেলাপি ঋণ কমানোয় আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, সেটা তো বাস্তবায়ন করতে হবে। বাস্তবায়ন হলে খেলাপি ঋণ কমবে, ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, ছয় মাস আগে যা ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা।
চক্রবৃদ্ধি থেকে সরল সুদের হিসাবের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এগুলো সংশোধনে আমরা যা করতে আরম্ভ করেছি এটা বাস্তবায়ন হলে আপনারা দেখতে পারবেন ব্যবসায়ী, ব্যাংক, সরকার—সবার জন্যই ভালো হবে। ব্যাংকগুলো লোকসান করবে না, গ্রাহকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।’
শর্ত ভেঙে ১১ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে ঋণ পুনঃ তফসিলীকরণের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি তিনি পত্রিকায় দেখেছেন। এ ব্যাপারে তাঁর কাছ থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নেবেন।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি এখনো জানি না কোন বিবেচনায় তাদের এ সুযোগ দেওয়া হলো। আগে কী শর্ত ছিল সেগুলোও আমাদের দেখতে হবে। আর দিচ্ছে কি না, তাও জানি না। পত্রিকাতে তো সবকিছু ঠিক থাকে না।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘মিডিয়া কি সব সময় সব ঠিক লেখে?’ নিজেই জবাব দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় মিডিয়া কিছুটা ভুলও লেখে। তবে সব সময় এমনটা হয় না। দুই-এক সময় হয়।’