খিরাই নদে কাঠের সেতু (স্থানীয়ভাবে পরিচিত লাল সেতু) বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ভেঙে গেছে। এতে উপজেলার দৌলতপুর ও চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ নদ দিয়ে মেঘনা নদী থেকে আসা অসংখ্য বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করে।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে একটি বালুবাহী বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে কাঠের তৈরি লাল সেতুটি ভেঙে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায়। সেতুটি ভেঙে পড়ার পর থেকে সড়কটি দিয়ে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পরে এলাকাবাসীর অর্থায়নে সেতুটি পুনরায় নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নদে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে সেতু নির্মাণকাজ ব্যাহত হয়। সেতু ভাঙার পর থেকে নদের দুই পাড়ের বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকা দিয়ে নদী পার হচ্ছে।
নায়েরগাঁও উত্তর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন, বর্ষা শেষ না হলে নদের মাঝামাঝিতে খুঁটি বসানো যাচ্ছে না। এমন দিনে কাঠের সাঁকোটি ভেঙে দেওয়ায় যাতায়াতে সব শ্রেণির মানুষের কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাতায়াতে ঝুঁকি বাড়বে।
প্রসঙ্গত, এলাকার দুর্ভোগ লাঘবে মতলব দক্ষিণ উপজেলার চরশিলিন্দা-নারায়নদিয়া, বকচর, পিতাম্বর্দী, কাচিয়ারা, বিশ্বাসপুরসহ আশপাশের প্রায় ১৫ থেকে ২০ গ্রামের মানুষজন এবং কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার প্রায় ১০ থেকে ১৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ টাকা ও স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে নদীর ওপর নির্মাণ করেন ‘লাল সেতু’। সেতুটি দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে তৈরি করে দিয়েছে এক নতুন বন্ধন। এ কাজের পরিকল্পনা করেন চরশিলিন্দা গ্রামের প্রবাসী আলম প্রধান। তাঁকে সহযোগিতা ও উৎসাহ জুগিয়েছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হাই খোকন, আনোয়ার মিস্ত্রি, ইদ্রিস মিয়াজী ও জসিম উদ্দিন।
সেতু নির্মাণের উদ্যোক্তা চরশিলিন্দা গ্রামের বাসিন্দা আলম প্রধান ও দক্ষিণ নারান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাই খোকন মেম্বার বলেন, ‘দুই পাড়ের লোকজনের আর্থিক সহায়তায় সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণে ১৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।’
এ কাঠের সেতুটির ইতিহাস জানতে চাঁদপুর টাইমসে প্রকাশিত আগের প্রতিবেদনটি দেখুন- মতলবে স্বেচ্ছাশ্রমে খিরাই নদীর ওপর নির্মিত ‘লাল ব্রিজ’
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ৮ আগস্ট ২০১৯