তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় দু’শ গ্রন্থ রচনা করেন

কথাসাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৯৮ সালের ২৩ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে এক জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৬ সালে যাদবলাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে আইএ শ্রেণিতে ভর্তি হন।

মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে ১৯২১ সালে এক বছর কারা অন্তরীণ থেকে তার শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি ঘটে। পরে তিনি পুরোপুরিভাবে কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন এবং আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ১৯৩০ সালে আবার বছরখানেক কারাবরণ করেন।

১৯৪০ সালে তিনি স্থায়ীভাবে কলকাতার বাসিন্দা হন এবং সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। তবে, লেখক জীবনযাপনের পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার নির্বাচিত সদস্য হিসেবে আট বছর দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭০ সালে তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। বীরভূম-বর্ধমান অঞ্চলের মাটি ও মানুষ, বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের জীবনচিত্র, স্বাধীনতা আন্দোলন, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, ব্যক্তির মহিমা ও বিদ্রোহ, সামন্ততন্ত্র-ধনতন্ত্রের দ্বন্দ্বে ধনতন্ত্রের বিজয় ইত্যাদি তারাশঙ্করের উপন্যাসের বিষয়বস্তু।

সেগুলোর মধ্যে চৈতালী ঘূর্ণি (১৯৩২), জলসাঘর (১৯৩৮), ধাত্রীদেবতা (১৯৩৯), কালিন্দী (১৯৪০), গণদেবতা (১৯৪৩), পঞ্চগ্রাম (১৯৪৪), কবি (১৯৪৪), হাঁসুলি বাঁকের উপকথা (১৯৪৭), আরোগ্য-নিকেতন (১৯৫৩) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

‘রসকলি’, ‘বেদেনী’, ‘ডাকহরকরা’ প্রভৃতি তার প্রসিদ্ধ ছোটগল্প। তার দু’ পুরুষ, কালিন্দী, আরোগ্য নিকেতন ও জলসাঘর অবলম্বনে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শরৎস্মৃতি পুরস্কার’ (১৯৪৭) ও ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ (১৯৫৬) লাভ করেন।

এ ছাড়া তিনি ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ (১৯৫৫),‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’(১৯৫৬), ‘জ্ঞানপীঠ পুরস্কার’ (১৯৬৭) এবং ‘পদ্মশ্রী’ (১৯৬২) ও ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বার্তা কক্ষ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Share