সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং আনন্দ-উৎসবের মধ্যেদিয়ে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হয়েছে।
জেলার সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ত্যাগের মহিমায় পবিত্র ঈদে হিংসা-বিদ্বেষ, ভেদাভেদ ও বৈষম্য ভুলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনার্থে ঈদ উদযাপন করেছে।
ঈদের নামাজ শেষে আল্লাহর পাকের সন্তুষ্টি অর্জনে সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি দিয়েছেন। তবে সামর্থ্যহীনদের মধ্যেও ঈদ-আনন্দের কমতি ছিলো না।
বৃষ্টির কারণে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় সকল প্রকার প্রস্তুতি থাকার পরেও জেলার কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহ ময়দানসহ প্রায় সবগুলো ঈদগাহ মাঠেই ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এর পরিবর্তে স্ব-স্ব ঈদগাহ মাঠগুলোর পাশ্ববর্তি মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
সকল ৮টায় চাঁদপুর শহরের চৌধুরী জামে মসজিদে জেলার প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেন হাজী শরীয়ত উল্যাহর সপ্তম পুরুষ মাও. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান।
নামাজের পূর্বে জেলাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর ম-ল ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহমেদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদ হোসেন, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীনসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সমাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ।
জেলা শহর ছাড়া বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে সবচে’ বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে। সেখানে দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও জেলার প্রটিতি উপজেলাতে অত্যান্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি ঈদ জামাতেই নামাজ ও মুনাজাত শেষে সবাই একে অপরের সাথে আলিঙ্গন করেছেন। এসময় সকল শত্রুতা ও বৈরিতা ভুলে এক স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুকূল পরিবেশ না থাকায়র পরেও চাঁদপুর সদর উপজেলার নিজ গাছতলা আলহাজ্ব মাও. পীর সালামত উল্যাহ ঈদগাহ মাঠে সকাল ৯টায় পবিত্র ঈদুর আযহার নামাজ শান্তি পূর্ন ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে ইমামতি করেন বাগাদী দরবারের পীর আলহাজ্ব মাও. মো. একেএম নেয়ামত উল্যা খান। এসময় হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চাঁদপুর শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরাণবাজারে ঐতিহাসিক জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঈদের নামাজের সকল প্রস্তুতি থাকার পরেও মাঠে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় জামে মসজিদে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ইমামতি ও দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন পুরাণবাজার জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি শাহাদাত হোসেন কাশেমী।
চাঁদপুর পৌরসভা আয়োজনে ঈদ জামাতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্যানেল মেয়র ছিদ্দিকুর রহমান ঢালী ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং জেলা যুবলীগ যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী মাঝি।
এদিকে দাসদী ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায় পবিত্র ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে ইমামতি করেন, বাগাদী দরবারের পীরজাদা ও বাগাদী আহমদিয়া ফাযিল মাদ্রাসা অধ্যাপক মাও মু. মাহফুজ উল্যাহ খান ইউসুফী।
বৃষ্টির কারণে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় পুরাণবাজারের পূর্ব শ্রীরামদী ৩নং বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ, জাফরাবাদ এমদাদিয়া মাদ্রাসা মাঠ, জাফরাবাদ হাফেজিয়া মাদ্রাসা মাঠ, রঘুনাথপুর হাজী এ করিম খান হাই স্কুল মাঠ, দক্ষিণের বহরিয়া মৌলভিবাড়ি ঈদগাহ মাঠ, ফরাক্কাবাদ, বালিয়া, লক্ষ্মীপুর, বহরিয়া বাজার, রামদাসদী, হরিণা ফেরীঘাট, হরিণাবাজার, রাজার হাট, চান্দ্রা বাজার, আখনের হাট, হরিপুর, মদীনা মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানের ঈদুল আযহার নামাজ পাশ্ববর্তী মসজিদগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈদের নামাজ শেষে সামর্থবান সবাই আল্লাহর নামে পশু কোরবানি দিয়েছে।
এদিকে দুপুরে গড়িয়ে বিকেল হতেই শহরের ত্রিনদীর মোহনা, চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সেতু, পুরাণবাজার-নতুন বাজার সেতু, ডাকাতিয়া নদীসহ পর্যটন এলাকাগুলোতে ভ্রমণপিপাসুদের ঢল নামে। বিভিন্ন বয়সের মানুষ তাদের পরিবার-পরিজনদের সাথে নিয়ে ঈদ উদযাপনে মেতে উঠেন।
প্রতিবেদক : আশিক বিন রহিম/strong>
: আপডেট, বাংলাদেশ ০৯ : ৪৫ পিএম, ২ সেপ্টম্বর ২০১৭, শুক্রবার
এইউ