মতলবে দু’সতিনের ফোনালাপে বিয়ের তথ্য ফাঁসের ঘটনায় অভিমান করে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী স্কুল শিক্ষক মো. ইমাম হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে।
ইমাম হোসেন মতলব দক্ষিণ মধ্যে কলাদীর কাঠবাজার সংলগ্ন ভাড়া বাসায় শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে দু’স্ত্রীর সাথে অভিমান করে বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
স্কুল শিক্ষক মো.ইমাম হোসেনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার অলিপুরে। তিনি ফাতেমা আক্তার ও ডলি আক্তার নামে দু’জনকে বিয়ে করেন।
পুলিশের সহযোগিতায় স্থানীয় এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মতলব পরে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। শিক্ষক মো. ইমাম হোসেনের জ্ঞান না ফেরায় রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে শিক্ষকের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানান তার পরিবার।
প্রথম বিয়ে করেন ফাতেমা আক্তারকে ও পরে বিয়ে করেন ডলি আক্তারকে। তবে তিনি দু’স্ত্রীর নিকটই তথ্য গোপন করে রেখেছিলেন বলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়। ফাতেমা আক্তার জানতো না তার স্বামী ইমাম হোসেন ডলি আক্তারকে বিয়ে করেছে এবং ডলি জানতো না ফাতেমাকে তিনি বিয়ে করেছে।
২০১৩ সালের ১ নভেম্বর মতলবগঞ্জ জে.বি.পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরিতে যোগদান করেন মো. ইমাম হোসেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি আক্তারকে নিয়ে মতলবের কলাদীর বাসায় ভাড়া থাকছেন।
শনিবার ( ১২ আগ) প্রথম স্ত্রী ফাতেমা তার মোবাইলে ফোন করলে ফোনটি রিসিভ করেন দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি আক্তার। ফাতেমা আক্তার জানতে চাইলে ডলি আক্তার জবাব দেয় আমি ইমাম হোসেনের স্ত্রী।
ফাতেমা আক্তার বলেন, না ! আমি তার স্ত্রী। পরে ফাতেমা আক্তার ওই দিন দুপুরের মধ্যে নোয়াখালী থেকে তার স্বামীর কর্মস্থল মতলবগঞ্জ জে.বি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এসে হাজির হয়। প্রধানশিক্ষকের নিকট তিনি তার স্বামীর বিস্তারিত ঘটনাবলী খুলে বলেন।
এ দিকে শিক্ষক মো.ইমাম হোসেন তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে দেখে রেগে-ক্ষোভে নিজ ভাড়া বাসায় গিয়ে দরজা বন্ধ করে বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা এস.আই মো. আওলাদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পায় শিক্ষক মো. ইমাম হোসেন অজ্ঞান অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে।
সাথে সাথে তাকে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা বেগতিক দেখে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপাতালের চিকিৎসকের ধারণা তিনি বিষাক্ত কোনো ট্যাবলেট সেবন করেছে। ওই দিন রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ দিকে স্কুল শিক্ষক মো. ইমাম হোসেনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে দু’সতিনের কান্না দেখে স্থানীয় লোকজনের মাঝে এক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। দু’স্ত্রীর নিকট জানতে চাইলে প্রথম স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে আমি তা’জানিনা। অপরদিকে দ্বিতীয় স্ত্রীও বলেন, ‘আমার স্বামী পূর্বে যে আরেকটি বিয়ে করেছে তা’আমি জানিনা।’
মতলব দক্ষিণ থানার এস. আই মো. আওলাদ হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখে স্থানীয় লোকজন এবং দু স্ত্রী’র উপস্থিতিতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতর থেকে অজ্ঞান অবস্থায় স্কুল শিক্ষক ইমাম হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
প্রতিবেদক : মাহ্ফুজ মল্লিক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ০০ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০১৭, রোববার
এইউ