লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও ফতেহপুর ওয়ার্ডের মেম্বার ফারুক হোসেনের নির্দেশে গৃহবধূ পারুল আক্তার (২৫) ও প্রবাসী মো. সবজু হোসেন (২৮) নামের এক প্রবাসীকে পিটিয়ে দীর্ঘ ৬ ঘন্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
পরে দু’জনের কোমরে দড়ি বেঁধে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর আখঞ্জী বাড়িতে।
ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূ ও প্রবাসীকে হুমকি-ধমকিসহ এলাকা থেকে বিতাড়িত করার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছেন। ঘটনার সময় তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান ও মেম্বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রবাসী ও গৃহবধূর কাছ থেকে ৪টি ব্ল্যাংক ষ্ট্যাম্প এবং সাদা কাগজে সই-স্বাক্ষর নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য ২ লাখ টাকা মুচলেকা নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ওই ঘটনার সালিশি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রবাসী সবুজ জানায়, উপজেলার ফতেহপুর আখঞ্জী বাড়ির প্রবাস ফেরত মো. সবুজ মঙ্গলবার গভীর রাতে টয়লেটে যায়। পরে হাতমুখ ধোয়ার জন্য পুকুরের ঘাটলায় গেলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একই বাড়ির বাবুল, রুবেল, আরিফ, হানিফ, রিপনের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন তাকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে সুপারী বাগানে গাছের সাথে বেঁধে পাশ্ববর্তী আঃ রহমানের স্ত্রী পারুল আক্তারের ঘরের দরজা ভেঙে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগ এনে পারুলকে টেনেহেঁচড়ে বেদম পিটিয়ে প্রবাসী সবুজের পাশে আরেকটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
এর পর রাত ৩টা থেকে সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় চলে পারুল ও সবুজের উপর নির্যাতন। এখবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার লোকজনের উপস্থিতিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ও মেম্বার ফারুক ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে স্বই-স্বাক্ষর নিয়ে দুই লাখ টাকা মুচলেকা দাবি করে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।
এরপর পারুল ও সবুজকে কোমরে দড়ি বেঁধে পুরো এলাকায় ঘুরিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। অভিযুক্ত বাবুল ও রুবেল জানান, পারুলের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ। এজন্য আমাদের নেতৃত্বে এলাকার সবাই ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো মূল্যে এই মহিলা ও সবুজকে এলাকায় থাকতে দেয়া হবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইল ফারুক মেম্বার সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্প নেয়ার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে জানান, পারুল খুব খারাপ মেয়ে। এর আগেও গত রমজানে সে সবুজের ভাইয়ের সঙ্গে অনৈতিক কাজে রুবেলের হাতে ধরা পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। পারুলের এসব কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় লোকজন কোমরে দড়ি বেঁধে ঘুরিয়েছে।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তোতা মিয়া জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমাকে কেউ কিছু জানায়নি এবং কোনো অভিযোগও পাইনি। আর এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মেম্বার বা এলাকার কোনো লোকজন সালিশ করার কোনো বিধান নেই বা করতে পারে না।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১: ৫০ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur