Home / জাতীয় / ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে ৯২৭ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ
Ilish vora mousum
ফাইল ছবি

ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে ৯২৭ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ

ইলিশ আমাদের প্রাকৃতিক জাতীয় সম্পদ । এ সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের । প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট সমস্যার কারণে দেশে প্রতি বছরই ইলিশের উৎপাদন কমছে। বর্তমানে জিডিপিতে ইলিশের অবদান ১% ।

অভিযান ও নজরদারির পরও ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি একশ্রেণির মহাজন ও দালালচক্রের কাছে বন্দী আছে আমাদের জেলেরা।

১শ’কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সব দালালচক্রের কবল থেকে ১০ হাজার জেলে পরিবারকে মুক্ত করার জন্যে তাদের আর্থিক ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ এবং নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। দেশের মৎস্য উৎপাদনে ইলিশের অবদান প্রায় ১১% ও জিডিপিতে ১% ।

উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের জীবিকার প্রধান উৎস ইলিশ। প্রায় ৫ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

সারা বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের ৬০% আহরিত হয় আমাদের দেশের নদ-নদী থেকে। এক সময় দেশের প্রায় সব নদ-নদী এবং শাখা ও উপনদীতেও প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেত। বন্যা বা প্লাবনের বছরে নদীর সাথে সংযোগ আছে এমন সব বিলে ও হাওরেও ইলিশ মাছ কখনো কখনো পাওয়া যেত।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী,আশির দশকের আগে মৎস্য উৎপাদনে ২০% ছিল ইলিশের অবদান। ২০০২-’০৩ সালে ইলিশের অবদান কমে ছিল জাতীয় উৎপাদনের মাত্র ৮ % বা ১ লাখ ৯৯ হাজার মে.টন।

২০০০-’০১ সালে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ২৯ হাজার মে.টন। ২০০১-০২ সালে এ উৎপাদন কমে ২ লাখ ২০ হাজার টনে এবং ২০০২-০৩ সালে আরো কমে ১ লাখ ৯৯ হাজার টনে দাঁড়ায়।

ইলিশ গবেষকদের মতে, অভ্যন্তরীণ জলাশয়ের পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে বিশেষ করে বিভিন্ন নদ-নদীতে বাঁধ ও ব্রিজের কারণে এবং উজান থেকে পরিবাহিত পলি জমার জন্য পানি প্রবাহ কমে যায় এবং জলজ পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ে।

যার কারণে ইলিশের পরিভ্রমণ,প্রজনন ক্ষেত্র এবং বিচরণ ও চারণ ক্ষেত্র দিন দিন পরিবর্তিত ও বিনষ্ট হচ্ছে। এতে উৎপাদনও কমে যাচ্ছে। নির্বিচারে ক্ষতিকর জাল ও সরঞ্জামাদি দিয়ে জাটকা ও মা ইলিশ আহরণ ও উৎপাদন কমে যাওয়ার আরো একটি বড় কারণ।

জানা গেছে, মহাজন ও দালালচক্রের হাত থেকে জেলেদের উদ্ধার করাসহ ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য ৯৭২ কোটি ১৭ লাখ ৪৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প ২০১৬ সাল থেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো ৬ বিভাগের ২৯টি জেলার ১১১টি উপজেলায় মহাজনদের হাত থেকে জেলেদের রক্ষা, ৭১ উপজেলায় মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন, ৩ বিভাগের ৫ জেলার ২১ উপজেলার ১শ’৩০টি ইউনিয়নে ইলিশের অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদার করা। প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে,প্রকল্পটির আওতায় ১শ’কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ হাজার জেলের পরিবারের জন্য। এ ১০ হাজার জেলে গ্রুপকে দাদনদার ও মহাজনদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য মাছ ধরার জাল সহায়তা দেয়া হবে।

৪শ’৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে বোট কিনে জেলেদের মধ্যে সরবরাহ করা হবে। ২শ’ মৃত জেলের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

এ ছাড়া জাটকা আহরণ থেকে জেলেদের বিরত রাখতে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা মৎস্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে প্রকল্প মেয়াদ শেষে ইলিশ উৎপাদন সাড়ে পাঁচ লাখ টনে উন্নীত করা সম্ভব হবে। জাটকা ধরাও অনেকটাই বন্ধ করা যাবে।’ (দৈনিক নয়া দিগন্ত)

নিউজ ডেস্ক
:আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৬:০৫ পিএম,১৫ জুলাই ২০১৭,শনিবার
এজি