কুলছুমা বেগম কাকলী একজন আইনজীবী। পৃথীবির আদালতে বিচাপ্রার্থী মানুষের পক্ষে-বিপক্ষে কথার লাড়াই করা যার কাজ।
কর্মবয়সের এ পর্যন্ত তিনি বহু বিচারপ্রার্থীর পক্ষে আইনী লড়াই করেছেন। বাদী-বিবাদী পক্ষের হয়ে মামলায় কখনো জিতেছেন কখনো আবার হেরেছেন।
এই জয়-পরাজয়ে তাকে কতোটা আনন্দিত করেছে কিংবা পিড়া দিয়েছে সে অংক আজ না হয় থাক। ভাগ্যের নির্মমতায় আজ তিনি নিজেই পৃথিবীর আদালতে একজন অসহায় বিচারপ্রার্থী।
আইনজীবীর পোশাক পড়ে চাঁদপুর আদালত আঙিনায় নৃত্যদিন কর্মচঞ্চল কাকলী এখন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায়। শরীরে স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোকদের নির্মম- নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে অন্যসব অসহায় রোগীরর মতোই হাসপাতালের বিছানায় ছটপট করছে।
গত ১৭ জুন তার স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোক কাকলীকে হত্যার চেষ্টায় নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে। কাকলি যাতে আর পৃথিবীর আলো দেখতে না পায় এজন্য তার চোখ দু’টো চিরোতরে নষ্ট করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
চোখের ওপর ক্ষতের চিহ্ন বলে দেয় তার উপর নির্যাতনের নির্মমতা কতোটা নির্লজ্জ ছিলো।
কাকলিরর স্বামী মুসলিম সর্দার মিশু পেশাগতভাবে একজন শিক্ষক?। যাদের মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়। নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেয়া শিক্ষক মিশু অল্প ক’দিন আগেও এই জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ (চাঁ. স.ক.) থেকে নারী কেলেংকারীর, ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক, প্রাণনাশের হুমকিসহ একাধিক অপরাধে অভিযোগে অভিযুক্ত কলেজ অধক্ষ্যের কাছে দরখাস্ত করা হয়। এতে ফলে তাকে লালমনির হাট কলেজে লোকদেখানে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। স্ত্রী কাকলিকে নির্যাতনের অপরাধে চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করার আগেই মডেল থানা পুলিশ মিশুকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
এখন নিজেকে সরকার দলীয় নেতার পরিচয় দানকারী শিক্ষক মিশুর কতটা দৃষ্টান্তমূলত শাস্তি হবে তা নিয়ে সাধারণ জনমনে প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। জেলার সচেতন মহল মনে করে, এদেশের আইন হলো মাকড়শার জালের মতো, যেখানে মশা-মাছি আটকে গেলে মৃত্যু ছাড়া উপায় থাকে না অথচ টিকটিকি কিংবা ইদুর-বিড়াল হলে সে জাল ছিড়ে অনায়াসে বেরিয়ে আসে।
তাবের দাবি নিজেকে শক্তিশালী প্রাণী দাবি করা শিক্ষক মিশুরা যাতে আইনকে মাকড়শার জাল বানিয়ে তা ছিন্ন করে সহজেই বেরিয়ে আসতে না পারে।
আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ৪০ পিএম, ১৮ জুন ২০১৭, রোববার
ডিএইচ