চাঁদপুর জেলা শিক্ষায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষার হার। গড়ে উঠছে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবয়ব।
চরাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের স্থায়িত্ব পালন যথাযথভভাবে না হওয়ায় ও নানা দুরবস্থার মধ্যে পাঠদান হলেও অদম্য ইচ্ছা তাদের দমাতে পারছে না।
স্কুলটির নাম ঈশানবালা জেএস উচ্চ বিদ্যালয়। কোনো প্রকার যানবাহন না থাকায় অন্তত দুই থেকে চার কিলো মিটার দূর থেকে পাঁয়ে হেঁটে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে।
তারপরেও পিছিয়ে নেই চরাঞ্চলের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ, অভিভাবকদের আন্তরিকতায় উন্নত হচ্ছে জীবন যাত্রার মান।
একজন মাঝির ছেলেও এখন শিক্ষিত হচ্ছে সমান তালে। চরাঞ্চলে সাধারণত পিতার পেশায় পুত্ররা আসলেও এখন এর ব্যাতিক্রম। দেশের সার্বিক উন্নয়নে এটিও একটি বড় অংশ বলে অনেকেই মনে করেন।
চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে তাদের চোখে মুখে আনন্দ। সম্প্রতি জেলার হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের ঈশানবালা এমজেএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা কয়েক কি.মি. দূর থেকে পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসেন। শিক্ষার জন্য পায়ে হেঁটে আসলেও তাদের কষ্ট মনে হয় না।
শিক্ষা অর্জন করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। এ বিদ্যালয়ে প্রায় দু’কি.মি. রাস্তা ও নদী পাড়ি দিয়ে সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের চরফতেজংপুর থেকে আসেন দশম শ্রেণির সালমা, সোহেল, মুসা ও মামুন। একই এলাকা থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তারা ট্রলারযোগে ও পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে হয়। তবে ঝড়-বৃষ্টি দেখা দিলে বিদ্যালয়ে আসা সম্ভব নয়।
বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা যায়, একিট দ্বিতল ভবন এবং একটি টিনের চালা ঘর। শ্রেণি কক্ষ বৃদ্ধির জন্য আরো ঘর নির্মাণ করা প্রয়োজন। খুব নিকটেই নদী। পাকা ভবন না হলেও টিনের চালা ঘর নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সুবিধা হবে। এছাড়াও শিক্ষক সংকট রয়েছে। নানাবিধ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষকই এখানে থাকতে চান না। সহকারী শিক্ষক মানিক চন্দ্র দেবনাথ জানান, এ বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। কারিতাস বাংলাদেশ সর্বপ্রথম এটি আশ্রায়ন প্রকল্প হিসেবে এটি নিমার্ণ করেছিল।
চরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে এটি বিদ্যালয় ভবন হিসেবে দান করেন । বর্তমানে পরিচালনা পর্ষদের আন্তরিকতার কারণে অনেক শিক্ষার্থীই পড়া-লেখার সুযোগ পাচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৬শ’। জেএসসিতে পাশের হার শতভাগ ।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ও চরাঞ্চলের পরিবেশের কারণে এখন নিয়মিত ৫শ’ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। সরকারি ও স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে বিদ্যালয়ের অবকাঠামগত উন্নয়ন এবং শিক্ষক সংকট দূর করতে পারলে বিদ্যালয়টিও উপজেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারবে।
প্রতিবেদক : মাজহারুল ইসলাম অনিক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ৪৩ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur