চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এক সপ্তাহে দুই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছৈ। গত রোববার(২৩ সেপেটম্বর) উপজেলার নাউজান গ্রামে এবং শুক্রবার সারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গত মঙ্গলবার(২৫সেপেটম্বর) রাতে এ ব্যাপারে থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন কিশোরীর স্বজনেরা।
পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, উপজেলার সারপাড় গ্রামের প্রতিবন্ধি কিশোরী (১৪) একটি ভাড়া করা ঘরে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করছে। সে কিছুটা বাক্-প্রতিবন্ধী। তার বাবা একজন রিক্সা চালক। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কিশোরীকে ঘরে রেখে তার বাবা-মা বাহিরে রিক্সা ধোয়ামোছার কাজ করছিল। এ সুযোগে ওই গ্রামের বখাটে যুবক মো. সোহেল (২০) ও তার তিন বন্ধু কিশোরীটির ঘরে প্রবেশ করে কিশোরীর মুখে গামছা পেঁচিয়ে তাকে ঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে পাশের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। সেখানে তারা কিশোরীটিকে ধর্ষণ করেন।
এ সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন সেখানে এগিয়ে আসলে ওই যুবকেরা পালিয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় কিশোরীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে শুক্রবার রাতে পরিবারের লোকেরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
কিশোরীর ভাই বলেন, ‘বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং কালক্ষেপণ করেন। এ কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।’
অপরদিকে উপজেলার নাউজান গ্রামের অপর এক কিশোরী (১২) গত রোববার রাতে তার বসতঘরে দাদীর সঙ্গে ঘুমাচ্ছিল। রাত আনুমানিক ১২টার সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে ওৎ পেতে থাকা পাশ্ববর্তী বাড়ির বখাটে মো. রাসেল (২০) রুমাল দিয়ে কিশোরীটির মুখ চেপে ধরে তাদের ঘরের অপর একটি কক্ষে নিয়ে ভয়ভিতি দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে।
কিশোরীটির চিৎকারে তার দাদী ও পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে সোহেল পালিয়ে যান। পরে কিশোরীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন তাকে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিশোরীটির দাদী বলেন, ‘তার নাতনী স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে বখাটে রাসেল প্রায়ই তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করতো।’
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম এস ইকবাল বলেন, ‘গত মঙ্গলবার রাতে নাউজানের ঘটনায় মো রাসেলকে আসামি করে মেয়েটির দাদী এবং সারপাড়ের ঘটনায় মো. সোহেলসহ তিন যুবককে আসামি করে মেয়েটির ভাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২টি পৃথক মামলা করেন। তিনি আরও বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই দুই কিশোরীকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
প্রতিবেদক:মাহফুজ মল্লিক
২৬ সেপেটম্বর,২০১৮