১ মার্চ থেকে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) পর্যন্ত চলমান জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচির এক মাসের বেশি সময় পার হয়েছে। এ সময়ে অভিযান চালিয়ে আটক জেলেদের মধ্যে ১১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়া হয়েছে।
জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স ১০৩টি অভিযান পারিচালনা করে। এর মধ্যে ৬৮টি অভিযোগের ভিত্তিতে ১১৫ জনকে দণ্ড দেওয়া হয়।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাটকা সংরক্ষণে এ বছর প্রশাসন খুবই তৎপর রয়েছে। তারই আলোকে পদ্মা-মেঘনার উপকুলীয় মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় ১ মাস ৭ দিনে ১০৩টি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা ২৪টি মাছঘাট, ৩২৭টি আড়ৎ ও ২৪৯টি বাজার পরিদর্শন করেন।
অভিযানকালে জাটকা নিধন অবস্থায়, বিভিন্ন জায়গায় পরিত্যক্ত, ভাসমান আড়ৎ এবং যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ৩.৬৬৬ টন জাটকা জব্দ করা হয়। এছাড়াও একই সময় অন্যান্য মাছ আটক হয় ১.৬৬ টন। যাত্রীবাহী লঞ্চ, ট্রলার, জেলেদের বাড়ি জেলেদের নৌকা ইত্যাদি স্থান থেকে কারেন্ট জাল আটক হয় ৮২.১৬৬ লাখ মিটার।
যার আনুমানিক মূল্য ১৬৭১.৯৪ লাখ টাকা। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও জেলা সদরে ১৩৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। জরিমানা আদায় হয়েছে ১.০৩ লাখ টাকা। এসব অভিযান চলাকালীন ৪৯টি জেলে নৌকা আটক করা হয়।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মো. মঈনউদ্দিন জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দিনগত রাতে হাইমচর মেঘনা নদী থেকে জাটকা নিধনকালে ১০ জেলেকে আটক করে উপজেলা টাস্কফোর্স।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টায় এদের প্রত্যেককে ২ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে তাদের চাঁদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান বলেন, এ বছর জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচিসহ ৪ বছর এই কাজে দায়িত্ব পালন করছি। চার বছর আগে জেলেদের মাঝে যেসব মনোভাব ছিল তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কারণ অভিযানকালে অনেক সময় প্রশাসন বাধা ও আক্রমণের শিকার হয়েছে। তবে জেলেদের পর্যায়ক্রমে সচেতন করার কারণে তা এখন সহজ হয়েছে। এখন চাঁদপুরের জেলেরা জাটকা নিধন না করলেও বহিরাগত জেলেরা এসে জাটকা নিধন করছে। যারা আটক হয়েছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগই বরিশাল, ভোলা, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুরের জেলে। তারাই চাঁদপুর নৌ-সীমানায় জাটকা নিধন করতে আসে। জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচিতে জনপ্রতিনিধিদের পর্যায়ক্রমে সম্পৃক্ত করায় কাজ অনেকটা সহজ হয়েছে।
জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ এগিয়ে এলে ব্র্যান্ডিং জেলা চাঁদপুরে জাটকা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচি সফল হবে।
প্রসঙ্গত, ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দু’মাস চাঁদপুরের মতলব উত্তর থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার পদ্ম-মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। জেলেদের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪০ কেজি করে খাদ্য ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭: ৩৩ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ