হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ মহাসড়কের বহু বছরের পুরানো দু’টি বেইলী ব্রিজের পাটাতন পরিবর্তন করতে করতে বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলছে যানবাহন।
চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগ প্রতি বছর পাটাতন কিছু কিছু অংশ পরিবর্তন করে আসলেও বেইলী ব্রিজের ঝুঁকি যেন কমছে না।
বছর তো দূরে থাক মাসে মাসে পাটাতনের ভাঙ্গা অংশ পরিবর্তন করতে গিয়ে ব্রিজের তালিতোলা নুমনায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল ।
হাজীগঞ্জ রামগঞ্জ মহাড়সকের ৫টি বেইলি ব্রিজ ছিল। পাকা ৩টি ব্রিজ তৈরি হলেও বর্তমানে ঘনিয়া ও খলিপা দর্জা নামক এ দু’টি বেইলী ব্রিজ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
ব্রিটিশ শাসন আমলে নির্মিত বেইলী ব্রিজ বছরের পর বছর পাটাতন ভেঙ্গে বর্তমানে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
তাছাড়া ব্রিজগুলো দিয়ে একটি গাড়ি ছাড়া পাশাপাশি অন্য কোনো যানবাহন চলাচলের পথ নেই। যাতে যানবাহনের চাপ বেশি দেখা দিলে অনেক সময় অপেক্ষার পর চলাচল স্বাভাবিক হয়। এতে যাত্রীসহ পরিবহনের লোকদের ভোগান্তির অন্ত যেন শেষ নেই।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি ) সড়কটির ঘনিয়া নামক স্থানে বহু বছরের পুরনো বেইলী ব্রিজটির পাটাতনের কিছু অংশ আবারো ভেঙ্গে যায়। মালবাহী বালুর ট্রাকের চাপায় একটি পাটাতন দেবে গেছে বলে জানা যায়।
তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও বড় বড় বাস ট্রাক চলাচলে ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহন পারাপারে দেখা যায় মালবাহী কাঁচা মালের ট্রাকসহ দূর পাল্লার যানবাহনের যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
এদিকে এখন পর্যন্তও চাঁদপুর জেলা সড়ক বিভাগের লোকজন সরেজমিনে এসে সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া যায় ।
জানা যায় , ঢাকা-চট্টগ্রাম যোগাযোগের সংক্ষিপ্ত পথ হিসেবে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কটি ৩৫ বছর ধরে যানবাহন চলাচল করে আসছে।
এরই মধ্যে সড়কটির ৫টি বেইলী ব্রিজের মধ্যে ৩টি ব্রিজ পাকা নির্মাণ করা হয়। অর্ধশত বছরের পুরনো ঘনিয়া ও খলিফা দর্জা নামক দু’টি বেইলী ব্রিজ গত কয়েক বছর ধরে পাটাতন রদবদল করে আসছে সড়ক বিভাগ। গত বছরেও ব্রিজটির ২টি পাটাতন ভেঙ্গে গেলে কোনো রকম জোড়া তালি দিয়ে ওই স্থান মেরামত করা হয়।
তার পর আর সড়ক বিভাগের লোকজন কোনো সংস্কার করতে দেখা যায়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
রবিবার (২৩ জানুয়ারি )রাত ১০টার দিকে হাজীগঞ্জ থেকে আসা একটি বালি ভর্তি ট্রাক বিইলী ব্রিজটি অতিক্রম করার সময় একটি পাটাতনে আটকে যায়।
বালি সরিয়ে কোনো রকম ট্রাকটি উদ্ধার হলেও পরবর্তী আরো কয়েকটি ভারি যানবাহন চলাচল করলে পাটাতনটি ভেঙ্গে দেবে যায়। এতে ছোট ছোট যানবাহন ছাড়া বড় ধরনের ট্রাক-বাস চলাচল ঝুঁকির মধ্যে পারাপার হচ্ছে। ফলে দু’ পাশের ট্রাক, বাস, মিনিবাসহ বিভিন্ন যানবাহন যানজটের সৃষ্টি দেখা দেয়।
যানবাহনে ড্রাইভাররা ভোগান্তির বিষয়ে বলেন, ‘ঢাকা থেকে আসতে কোন সমস্যা হয়নি অথচ এ দু’টি বেইলি ব্রিজের কাছে আসলে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়। তাছাড়া বিভাগীয় শহর স্থানে যাওয়ার জন্য আমাদের এ পথ ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। তাই সংস্কার কাজে যেন কর্তৃপক্ষ দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’
গত এক মাস পূর্বে চাঁদপুর সড়ক বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকোশলী আ. কাদেরের নেতৃত্বে বিইলী ব্রিজের পাটাতন সংস্কারের কাজ করতে দেখা যায়। ওই সময় পাটতনের মাপ নিয়ে ফেনী এলাকা থেকে বড় ধরনের পাটাতন আনা হবে বলে সাংবাদিকদের জানালেও এ ধরনে কোন কাজ হয়নি । যে কারনে মাস না যেতে আবারো বেইলী ব্রিজের পাটাতন দেবে যায়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সড়ক বিভাগের কার্যমান সহকারী আ. সালাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে না করতে পাটাতন দেবে যায়। এর মূল কারণ হচ্ছে অবৈধ ভাবে ভালু ভর্তি ট্রাক চলাচল।’
বেইলী ব্রিজে পাকাকরণে ইতোমধ্যে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের টেন্ডার চলমান রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
জহিরুল ইসলাম জয়
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ০২ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ