প্রতিদিন সকাল থেকে রাত। আবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কড়িডোরে মেঝের বিছানায় তীব্র শীতে কুজো হয়ে অযতেœ অবহেলায় বহুকষ্টে দিনের পর দিন কাটাচ্ছেন পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী নারায়ণ চন্দ্র দাস নামের অসহায় বৃদ্ধ।
যার এ জনমে কেউ থেকে যেনো কেউ নেই। নারায়ন চন্দ্র দাসের এমন করুন দৃশ্য দেখে যে কেই ভাববে হয়তো তিনি বেওয়ারিশ কিংবা কোন ফকির মিসকিন। কিন্তু না এ শহরে তার পরিবারের সামর্থবান লোকজন রয়েছে বলে তিনি জানান।
নারায়ন চন্দ্র বলেন চাঁদপুর শহরের পুরাণ আদালত পাড়া তার বাড়ি। তার পিতার নাম স্বর্গীয় ভোলানাথ চন্দ্র দাস। তার দুই ভাই রয়েছে। এক ভাই দুলাল চন্দ্র দাস ব্যবসায়ী আরেক ভাই ঝন্টু চন্দ্র দাস বর্তমান সরকার দলীয় নেতা হিসেবে একজন শহরেরর পরিচিত মুখ।
অথচ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ২য় তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় মেঝের বিছানায় পরিবারেরর লোকজনের দেখাশুনার অভাবে অবহেলিত ভাবে পড়ে রয়েছে এই বৃদ্ধ।
হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিলেও পরিবারের লোকজন তার পাশে না থাকায় এবং তার খোঁজ খবর না নেয়ায় উন্নত চিকিৎসা সেবার অভাবে অসহায় হয়ে বেওয়ারিশ ভাবে তাকে এভাবে প্রতিদিন পড়ে থাকতে দেখা যায়।
নারায়ন চন্দ্রের সাথে কথা বলে জানাযায় প্রায় ২০/২৫ দিন আগে তিনি কোমরে হাড়ের ব্যথা সমস্যা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার প্রতিবেশী লক্ষ্মী রাণী সাহা নামে একজন নারী তাকে সরকারি হাসপাতালে এনে ভর্তি করান।
তারপর আর তার পরিবারের কোন লোকজন তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেনি এমনকি কোন খোঁজ খবরও নেয়নি।
হাসপাতালের নার্সদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, নারায়ন চন্দ্রের কোমরের হাড় ভেঙ্গে গেছে এ মুহূর্তে তার উন্নত চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন। অনেকদিন আগেই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে ঢাকায় প্রেরণ করার কথা বলেছেন। হাসপাতালের যতুটুকু সাধ্য ততটুকু চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বৃদ্ধের কোন লোকজন না থাকায় এভাবে প্রতিদিন দিন কাটাচ্ছেন।
হাসপাতালের মেঝেতে বৃদ্ধ নারায়ন চন্দ্রের এমন অমানবিক ভাবে পড়ে থাকতে দেখে অনেকের আপসোস কিংবা হৃদয়ে দাগ কাটলেও তার পরিবারের মনে হয়তোবা এতটুকু দাগ কাটেনি।
তাই নারায়ন চন্দ্রকে নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর হয়তো বা তার পরিবারের লোকজন তার শয্যা পাশে এগিয়ে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১: ০০ এএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ