চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা রোববার (৮ জানুয়ারী) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চাঁদপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি এমপি।
শুরুতেই গত সভার কার্যবিবরণ পাঠ সিদ্ধান্ত ও এর অগ্রগতি তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই।
সভায় সর্বস্মতিক্রমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিমূল এবং বাল্য বিয়ে ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স অবস্থানে থাকা।
মেঘনার পাড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তলন বন্ধ এবং সড়কগুলোতে টাক্টর সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, শহরের স্কুল কলেজ কেন্দ্রিক রাস্তার মোড়ে মোড়ে উঠতি বয়সের বখাটে যুবকদের বিষয়ে পুলিশি টহল বাড়ানো এবং জেলা সর্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, আমাদের সম্পদ সীমিত, এর সঠিক ব্যবহার করতে হবে। অবৈধ টাক্টরগুলো আমাদের গ্রামের রাস্তগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যারা এটি সাথে জড়িত তারা সবাই আমাদের ভোটার। ভোটের ভয় ভুলেও আমরা ট্রাক্টর বন্ধের ব্যপারে কঠোর হয়েছি। কোনো জনপ্রতিনিধি যদি এটি চলাচলের পক্ষে জড়িত থাকে তকে তাদের নিয়ে আমাদের বসা উচিত। তাদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো জনপ্রতিনিধি এর পক্ষে থাকলে এটি ব্যাক্তি সার্থ। কারো ব্যক্তিসার্থের জন জনসার্থের বিঘœ হতে দেয়া হবে না।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, টাক্টর চলাচলের বিষয়ে যে দু’জন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্ট এসেছে, তাদের কারণ দর্শানের নোটিশ দেয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত তারা কারণ দর্শায়নি। অবৈধভাবে মাটি কাটার বিষয়ে আরো কঠোর হবো। তাদের জেল দিতে হবে। আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার জন্য যতটা কঠোর হওয়া প্রয়োজন ততটাই হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজরাজেশ্বর রক্ষা করতে না পারলে চাঁদপুরকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পরবে। রাজরাজেশ্বর থেকে মাটি কেটে নারায়নগঞ্জসহ অন্যান্য জেলায় ইটভাটার কাজে লাগানো হয়। এ বিষয়ে তিনি নৌ-পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার নির্দেশ প্রধান করেন।
তিনি বলেন, হাইমচরে সিমানা দিয়ে যে বিরোধ রয়েছে তা নিস্পত্তি করার বিষয়ে কাজ চলছে। দু’এক দিনের মধ্যে শরিয়তপুর জেলা প্রশাসকের সাতে কথা বলবো। আমার জানা মতে মাদক অনেকটাই কমে এসেছে। তবে মাদকের নতুন রুট হাইমচর। সমুদ্র হয়ে নদীপথে চাঁদপুরে মাদক আসছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ভারপ্রপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, ট্রাক্টরের বিষয়ে আমরা এখনো জিরো ট্রলারেন্সে রয়েছি। এ বিষয়ে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, চাঁদপুরে মাদক অনেকটাই কমে এসেছে। তবে এটি প্রতিরোধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ন আমরা মাদক বিক্রেতাদের আটক করছি এবং সাস্তির ব্যবস্থা করছি।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, নৌ-পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডর যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এএ ওয়াদুদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সভাপতি শরীফ চৌধুরী, স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ান, হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী প্রমুখ।
প্রদিবেদক-আশিক বিন রহিম
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১১: ০৭ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৭ রোববার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur