৬৫ হাজার নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ও স্যানিটেশন প্রদানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নে দ’টি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ দু’প্রকল্পসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ২৬ হাজার ৪১০ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২২ হাজার ৭৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হবে। বাকি ৩৮৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে আসবে তিন হাজার ৯৪৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর ) রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফংএ বলেন, সরকার সম্প্রতি ২৬ হাজার ২০০টি রেজিস্টার্ড ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয় করেছে। এ নিয়ে দেশে বর্তমানে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৮৭২। এতে যে পরিমাণ শ্রেণিকক্ষ রয়েছে, তাতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর চাপ সামলাতে পারছে না। শ্রেণিকক্ষের এই সংকট মেটাতে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এসডিজির ৪ নম্বর লক্ষ্য মানসম্মত শিক্ষা পূরণে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেননা ভিত্তি মজবুত হলে ভবিষ্যৎ ভালো হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট হবে। এসব টয়লেট পুরুষ ও নারী শিক্ষকরাও ব্যবহার করবেন। এতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের অভ্যাস গড়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ দু’টি প্রকল্প হলো ৯ হাজার ১২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় ৪০ হাজার নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, আট হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা প্রদান, ৩৬ হাজার ৫০০ শ্রেণিকক্ষে হাই-লো বেঞ্চ ও শিক্ষকদের চেয়ার-টেবিল এবং তিন হাজার ৫০০ শিক্ষককক্ষে চেয়ার-টেবিল, আলমারি ও ওয়াল কেবিনেট সরবরাহ করা হবে।
অপর প্রকল্পটি হলো ৫ হাজার ৭৪০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চাহিদাভিত্তিক নতুন জাতীয়করণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় ২৫ হাজার নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, পাঁচ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা প্রদান, ২৩ হাজার শ্রেণিকক্ষে হাই-লো বেঞ্চ ও শিক্ষকদের চেয়ার-টেবিল এবং দু’ হাজার শিক্ষককক্ষে চেয়ার-টেবিল, আলমারি ও ওয়াল কেবিনেট সরবরাহ করা হবে। প্রকল্প দুটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত।
অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো সদর দপ্তর ও জেলা কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর প্রাক্কলিত ব্যয়ের পরিমাণ ৩৬৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৬ কোটি টাকা। রাজশাহী হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৩৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৪২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯৯ কোটি টাকা। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের বহিঃসীমানা দিয়ে লুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি চার লাখ টাকা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রধান ১১টি ছড়ার পাশে আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
গুচ্ছগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯৯৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এর জন্য ব্যয় হবে তিন হাজার ২৫৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সূত্র : বাসস।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৫ : ১৬ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ শুক্রবার
এজি/এইউ