ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু থানার হিঙ্গার পাড়া গ্রমের মৃত ওহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগ (২০) ভন্ড কবিরাজের চক্রান্তে নিখোঁজ হয়েছেন। সোহাগের নিখোঁজের চক্রান্তে চাচা মোঃ মনির হোসেন গত ১৫ই ডিসেম্ববর ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নংঃ- ৬৬৮) করেছেন।
চাচা মনির হোসেন জানায়, ভাতিজা সোহাগ ঝিনাইদহ সদরের ডাকবাংলা বাজারের নাথকুন্ডু গ্রামের প্ররোরচনায় আনুমানিক চার বছর পূর্বে চাকুরির উদ্দেশ্যে ভারতের ব্যাঙ্গালোরে যায়। বেশ কিছুদিন পর বাড়িতে ফিরে এসে এলোমেলো কথা বলতে থাকে। আমরা তার মাথায় সমস্যা হয়েছে বলে ডাক্তার, কবিরাজ দেখোতে চেষ্টা করা হয়।
গরীব হওয়ার কারণে টাকা-পয়সা কম লাগবে ভেবে কবিরাজ দেখাতে থাকে।
ঝিনাইদহ সদরের বাজার গোপালপুরের ইস্কুলের পাশে বাসা জৈনক কাঠ ব্যবসায়ী ও ভন্ড ধোঁকাবাজ কবিরাজ আব্দুল হান্নান উপদৃষ্টির ভাব হয়েছে তাই জলসার করে জ্বীন তাড়ানোর নাম করে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পরবর্তীতে ঝিনাইদহ সদরের কালীকাপুরের জৈনক মহিলা কবিরাজের কাছে গেলে উপদৃষ্টির ভাব হয়েছে বলে গরীব অসহায় মনির হোসেনের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে কাজের কাজ না হলে উক্ত মহিলা কবিরাজ আবার ঝিনাইদহ সদরের মধুপুর চাপড়ী গ্রামের আরেক মহিলা কবিরাজ কদভানুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
সোহাগকে দেখাতে কবিরাজের কাছে নিয়ে গেলে কবিরাজ কদভানু সোহাগকে রেখে চাচা মনির হোসেনকে নিজ বাড়িতে চলে যেতে বলেন। চাচা মনির হোসেন কবিরাজ কদভানুর কাছে জানতে চান, ‘সোহাগকে রেখে গেলে কোন সমস্যা হবে কিনা?’
তখন কদভানু আশা দিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে জ্বীন আছে, আমার কাছে যে আসে তার কোন সমস্যা হতে পারে না। তুমি নিশ্চিন্তে নিজের বাড়িতে চলে যাও। সোহাগ হারিয়ে বা পালিয়ে গেলে আমার কাছ থেকে বুঝে নিবা। আমি সারা রাত সোহাগকে চিকিৎসা দিব বাইরের লোক থাকলে চিকিৎসা দেওয়া যাবেনা তাই তুমি বাড়িতে চলে যাও।’
এ কথা শুনে চাচা মনির হোসেন কবিরাজ কদভানুর কাছে সোহাগকে রেখে নিজের বাসায় ফিরে আসে।
পরদিন মহিলা কবিরাজ কদভানুর কাছে সোহাগ কোথায় যানতে চাইলে ভন্ড কবিরাজ কদভানু বলে, ‘আমি সোহাগের কানে গরম রড ঠেসে ধরার পর থেকে সোহাগ কোথায় চলে গেছে বা কি হয়েছে আমি জানিনা।’
এর পর থেকেই সোহাগের আর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান চাচা মনির।
প্রসঙ্গত, এতিম সোহাগের মা, চাচা সহ বাড়ির সবাই ঝিনাইদহ জেলোর প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকর্তাদের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন সোহাগকে খুঁজে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে এবং এই সমস্ত ভন্ড কবিরাজের আইনের আউতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে।
যাতে এতিম অসহায় সোহাগের মতো আর কেউ এই ভন্ড কবিরাজদের প্রতারণার শিকার না হয়।
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ
: আপডেট, বাংলাদেশ সম ০৩: ০০ এএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ