পদ্মা সেতুতে স্প্যানগুলোতে ওজন সক্ষমতা ৮৯৬ টন। বর্তমানে এর দেড় গুণ এক হাজার ৩৪৪ টন লোড দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
নিজস্ব অর্থায়নে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। স্বপ্নের এ সেতুর সুপারস্ট্রাকচারের প্রথম স্প্যানটি কার্যত পুরোপুরি প্রস্তুত।
বর্তমানে এটিতে ভর সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। সহসাই স্প্যানটি বসানো হবে পিলারের ওপর। আর তখনই দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতুর একাংশ।
সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, চীন থেকে আনা সুপারস্ট্রাকচারগুলো এক-এক করে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে জোড়া লাগানো হচ্ছে। এরই মধ্যে এক স্প্যান পরিমাণ সুপারস্ট্রাকচার জোড়া লাগানো হয়েছে।
আর দ্বিতীয় স্প্যানটির জোড়া লাগানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রথম স্প্যানটির লোড পরীক্ষার কাজ চলছে।
নির্মাণসংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতুতে স্প্যানগুলোতে ওজন সক্ষমতা ৮৯৬ টন। বর্তমানে এর দেড় গুণ এক হাজার ৩৪৪ টন লোড দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
পরীক্ষার জন্য মাওয়া প্রান্তে লৌহজংয়ের কুমারভোগ কনকস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে ব্রিজের বিশেষ প্ল্যাটফর্ম ও পাইল ক্যাপ। একটি পূর্ণাঙ্গ স্প্যান বসিয়ে তাতে সোমবার থেকে লোড টেস্ট করা হচ্ছে।
এটি সফল হলে এক স্প্যান পরিমাণ সুপারস্ট্রাকচার ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে বসিয়ে দেওয়া হবে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর। এরপর দ্রুতই বসানো হবে দ্বিতীয় স্প্যানটি।
সূত্র জানায়, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ভাসমান ক্রেন চীনের জোহাও থেকে গত সপ্তাহের বুধবার মাওয়ায় পৌঁছেছে।
এই ক্রেন দিয়েই হবে পদ্মা সেতুর সুপারস্ট্রাকচার স্থাপনের কাজ। পদ্মা সেতুর ১৫০ মিটার দীর্ঘ সুপারস্ট্রাকচারগুলো সরাসরি পিলারে বাসাতে হবে, যার একেকটির ওজন প্রায় দুই হাজার ৯০০ টন।
সে ক্ষেত্রে ভাসমান এ ক্রেনের ধারণক্ষমতা তিন হাজার ৬০০ টন। দেশে থাকা অন্য ক্রেনগুলোর সক্ষমতা এর অর্ধেকেরও কম।
কার্যত সেতুর সুপারস্ট্রাকচার স্থাপনের সব আয়োজন প্রায় সম্পন্ন। জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের কাজ চলছে পুরোদমে।
এই দুটি পিলারের ওপরই বসবে প্রথম সুপারস্ট্রাকচার। এসব পিলারের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
৩৭ নম্বর পিলারের পাইল গ্রুপ সম্পন্ন হয়েছে। এখান থেকেই ৩৫ মিটার উঁচু পিলার উঠবে ওপর দিকে।
এই পিলার গ্রুপটি ১২৮ মিটার দীর্ঘ। নদীর তলদেশ থেকে মাটির নিচে রয়েছে এর ১২২ মিটার। আর ছয় মিটার রয়েছে পানির ভেতরে।
পাইল গ্রুপে নামার জন্য রয়েছে সিঁড়ি। ৩৮ নম্বর পিলারের কাজও প্রায় একই গতিতে এগিয়ে চলেছে।
এদিকে পদ্মা সেতুর অন্যান্য প্যাকেজেও অগ্রগতি রয়েছে। নদীশাসনের কাজও শুরু হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে সেতুর আধুনিক টোল প্লাজার কাজ প্রায় সম্পন্ন। জাজিরা প্রান্তে টোল প্লাজার কাজের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। -কালের কণ্ঠ