চলতি বিপিএল আসরে নিজেদের ৬ষ্ঠ ম্যাচে প্রথম জয়ের দেখা পাওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয়রথ থামল। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিল চিটাগং ভাইকিংস।
এটি কুমিল্লার বিপক্ষেও তাদের দ্বিতীয় জয়।
উদ্বোধনী ম্যাচে কুমিল্লাকে হারিয়েই বিপিএল শুরু করেছিল চিটাগং। টসে জিতে ব্যাট করতে নামা কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা তাদের দায়িত্ব বেশ ভালোভাবে পালন করলেও বোলার এবং ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় চলতি আসরে ৬ষ্ঠ ম্যাচ হারল মাশরাফির কুমিল্লা। তাদের দেওয়া ১৮৪ রানের টার্গেটে ৬ উইকেট হাতে রেখেই পৌঁছে গেল তামিম বাহিনী। দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ নবি।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানে ইনিংস শুরু করেছিল চিটাগং ভাইকিংসের দুই ওপেনার। তবে দুই ওপেনারের জুটি ২৮ রান করতে না করতেই আঘাত হানলেন কুমিল্লার দলনেতা মাশরাফি বিন মুর্তজা। ম্যাশের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলেন আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে থাকা ডোয়াইন স্মিথ। তিনি ১২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২১ রান করেন।
এরপর ক্রিজে এসে ব্যাক্তিগত পাঁচ রানে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান এনামুল হক বিজয়। এরপর ইনিংস জুড়েই কুমিল্লার ফিল্ডারদের অবহেলা চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে বোলারদের ব্যর্থতা তো আছেই। শফিউদ্দিন এক ওভারে দুটি করে ওয়াইড এবং নো বল করেন। ফলে জুটি গড়ার দারুণ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৬২ রানের জুটি গড়েন তামিম-এনামুল।
দলীয় ৯০ রানে রায়ানের বলে বোল্ড হয়ে যান ১ চার এবং ১ ছক্কায় ২৭ বলে ৩০ রান করা তামিম। এরপর এনামুলও রায়ানের শিকারে পরিণত হন। ৩০ বলে ২ চার এবং ২ ছক্কায় ৪০ রান করা এনামুল রায়ানের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান।
এরপর দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন মোহাম্মদ নবি এবং শোয়েব মালিক। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রান। ব্যক্তিগত ৩৮ রানে শোয়েব মালিক সোহেল তানভীরের শিকারে পরিণত হলে ভাঙে এই জুটি।
তবে মোহাম্মদ নবি এবং জহুরুল ইসলাম মিলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। নবি ২৪ বলে ৫টি চার এবং ২ ছক্কার দ্বারা ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাটিং তাণ্ডবে অপর অপরাজিত ব্যাটসম্যান জহুরুল ইসলাম (১) কে কিছু করতে হয়নি। এই দারুণ পারফরমেন্সে ম্যাচসেরা হন মোহাম্মদ নবি।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে খালিদ লতিফের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরিতে তামিম ইকবালের দলকে ১৮৪ রানের টার্গেট দেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
কুমিল্লার দুই ওপেনার মিলে ২৯ রানের জুটি গড়া পর আঘাত হানেন গত ম্যাচের ৫ উইকেট শিকারী স্পিডস্টার তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান শান্ত। তিনি ১৫ বলে ২ চারে করেন ১৭ রান। এরপর খালিদ লতিফ এবং ইমরুল কায়েস মিলে দলের হাল ধরেন। দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় পার্টনারশিপে আসে ৪৮ বলে ৬৮ রান।
শেষ পর্যন্ত দলীয় ৯৭ রানে তামিম ইকবালের থ্রো তে দূর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়ে ফিরে যান ইমরুল কায়েস। তিনি ২৬ বলে ৩টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে করেন ৩৬ রান। এরপর ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন খালিদ লতিফ।
খালিদের সাথে তাল মিলিয়ে দারুণ ব্যাটিং করতে থাকেন আহমেদ শেহজাদ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে এই দুজন ৬৮ রানের জুটি গড়েন। যা কুমিল্লাকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। দলীয় ১৬৭ রানে আবারও রানআউটের দূর্ভাগ্য বরণ করতে হয় কুমিল্লাকে। এবারের শিকার ৫৩ বলে ৬ চার এবং ৫ ছক্কায় ৭৬ রান করা খালিদ।
১৯তম ওভারের শেষ বলে এই জুটি ভাঙার পর নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা। আহমেদ শেহজাদ অপরাজিত থাকেন ৪০ রানে। ২৫ বলের এই ইনিংসে তিনি ৫টি বাউন্ডারি হাঁকান। এছাড়া রায়ান অপরাজিত থাকেন ৯ রানে। চলতি বিপিএল আসরে কুমিল্লার এটি সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে গত ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে ১৫২ রান করেছিল মাশরাফি বাহিনী।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১০ :২৪ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০১৬, সোমবার
এইউ