চাঁদপুরে গত এক মাসে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চারটি বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক ও সাধারণ জনতার সহযোগিতায় বাল্য বিবাহ নামের অভিশাপ থেকে রক্ষা পেয়েছে অপ্রাপ্ত বয়সের ৪ কিশোরী।
এর মধ্যে চাঁদপুর সদর, মতলব দক্ষিণ, শাহরাস্তি ও হাজিগঞ্জ উপজেলায় ১টি করে মোট ৪টি। জেলা প্রশাসন কতৃক পরিচালিত ‘ডিসি চাঁদপুর’ নামক ফেইসবুক থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। চারটি নিস্পাপ জীবন বাচাঁনোর জন্য উল্লেখিত ফেইসবুকের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এতে করে জেলা প্রশাসন কতৃক আগামি ২০১৭ সালে চাঁদপুরকে বাল্য বিবাহ মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করার যে উদ্যোগ তা অনেকটাই অগ্রগতি পেলো বলে সচেতন মহল মনে করছে।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল চাঁদপুর টাইমসসহ স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তারি প্রেক্ষিতে জানা যায়, প্রথম ঘটনাটি ঘটে গত (১১ অক্টোবর) মঙ্গলবার শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া গ্রামে। ‘সূচীপাড়া উত্তরে এসএসসি পড়ুয়া মারজানা আক্তার রুপার বাল্য বিয়ে হচ্ছে’ এমন সংবাদ পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা ) মোহাম্মদ আব্দুল হাই ও পুলিশ সুপার শামসুরন্নাহার বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশে শাহরাস্তি থানার এসআই আবুল কালাম রুপার বাড়িতে যায় এবং তার পিতা আব্দুর রহিমের কাছ থেকে বাল্যবিবাহ না দেয়ার শর্তে অঙ্গীকারনামা নেন।
৩য় ঘটনাটি ঘটে গত (১৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার নানুপুর গ্রামে। ওই গ্রামের নুরে আলম তালুকদারের ১৬ বছর বয়সী কন্যা খাদিজা আক্তারের সাথে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা লোহাগড় গ্রামের মো. শরীফ হোসেনের বিয়ে বন্ধ করে পুলিশ প্রশাসন।
বুধবার (১২ অক্টোবর) অপ্রপ্ত বয়সে খাদিজার বিয়ের গায়ে হলুদের দিন রাতে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে মডেল থানার এস আই রাশেদুজ্জামান সর্গীয়ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ গায়ে হলুদের আয়োজন বন্ধ করে দেয় এবং অপ্রাপ্ত বয়সে খাদিজার বিয়ে না দেওয়ার শর্তে তার পরিবারের লোকজনের কাছে মুচলেকা গ্রহণ করেন।
কিন্তু পরদিন বৃহস্পতিবার সে শর্ত অমান্য করে খাদিজার বিয়ের আয়োজন করা হলে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের নির্দেশে শুক্রবার বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দিয়ে মেয়ের মামা ও খালুকে আটক করে।
৪র্থ ঘটনাটি ঘটে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাও গ্রামে। (১১ নভেম্বর) শুক্রবার ওই ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে মরিয়ম আক্তর (১৪) বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দিয় প্রশাসন।
এই ঘটনায় উপজেলায় নির্বাহী অফিসার শহিদুল ইসলাস কনের পিতার নগদ অর্থদ- প্রদান করেন। মরিয়ম ওই গ্রামের আশ্বিনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী।
উল্লেখ্য চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুর সবুর মন্ডল বিভিন্ন সভা সেমিনারে জানিয়েছেন, আগামি ২০১৭ সালে চাঁদপুরকে বাল্যবিয়ে মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এছাড়াও পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ও বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই ঘোষনা দিয়েছেন। তাঁদের ঘোষনার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বাল্য বিবাহ বন্ধে দেয়া হয়। বর্তমানেও যা চলমান রয়েছে।
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১১ : ০০ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০১৬, শনিবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur