চাঁদপুর মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ঘোড়াধারী গ্রামে কসাই (ব্যবসায়ী) হত্যাকণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সুজন সরকার (৩৫) নামে শুক্রবার(২৮ অক্টোবর) রাতে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃত সুজন ওই গ্রামের সুদেশ্বর ওরফে আচিলা সরকারের ছেলে।
উপ-পরিদর্শক (এস আই) তপন চন্দ্র দাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপাদী দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘোড়াধারী গ্রামের দোকানের কাছথেকে তাকে আটক করে থানায় আনাহয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, তাকে হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে শনিবার(২৯ অক্টোবর) আদালতে প্রেরণ করা হয়।
জানা যায়, গত ২ মার্চ ঘোড়াধারী গ্রামের ইউনুছ তালুকদারের ভিটা থেকে আনুমানিক ৪২ বছর বয়সী অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। লাশের কোন পরিচয় না পাওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামা একাদিক ব্যক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকার সুজন সরকার, সন্তোষ, সুশীল, রুহিদাস, পহল্লাদসহ একাধিক যুবক পলাতক ছিল। গত কয়েকদিন পূর্ব থেকে সুজন সরকারসহ অন্যান্যরা এলাকায় অবস্থান করছে সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। অপর সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা পলাতক রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ সকালে ঘোড়াধারী গ্রামের পহল্লাদ সরকারের ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে হত্যা করে তার লাশ হত্যাকারীরাই ভুট্টা ক্ষেত থেকে টেনে-হেঁচড়ে দক্ষিণ পার্শে ইউনুছ তালুকদারের ভিটা জমিনে ফেলে রাখে। স্থানীয় এলাকাবাসী দেখে থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তার লাশ চাঁদপুর ময়না তদন্ত শেষে আঞ্জুমানে মফিজুল ইসলামে দাফন করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, ঘোড়াধারী গ্রামের বিলের বাড়ী মাছ চাষী অর্জুনের বসত ঘরে বুধবার মধ্য রাতে চুরি হয়। ঘর মালিকসহ বাড়ির লোকজন আচ করতে পেরে ডাকচিৎকার শুরু করলে চারিদিক থেকে মানুষজন এগিয়ে আসে।
অর্জুনের স্ত্রীর নিন্দ্রা রানী সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ দিন রাতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি চুরি করার উদ্দেশ্যে আমাদের ঘরে প্রবেশ করলে আমার শ্বাশুড়ী দেখে ডাক-চিৎকার দেয়। ডাক-চিৎকার শুনে আমার স্বামী ও শ্বশুরসহ বাড়ীর অন্যান্য লোকজন ঘুম থেকে জেগে ওঠে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পর শুনতে পাই অজ্ঞাত চোরটি মারা গেছে। কারা মেরেছে এ ব্যাপারে আমি জানিনা।
বাড়ীর ও আশপাশের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ৪-৫ জন ব্যক্তির সাথে আলাপ করে জানা যায়, এ বাড়ীর অর্জুন, সুজন, হরিদাসসহ অনেকেই মাছ চাষের ব্যবসা করছে। তাদের ধারণা অজ্ঞাত ব্যক্তিও মাছ চাষ ব্যবসায়ী। এদিকে ঘটনার ১৬ দিন পর অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, বিষয়টি পোষ্টারে, অনলাইন ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশের ছবি দেখে তার মেয়ে তানিয়া আক্তার তার পিতার লাশ সনাক্ত করে। সে চাঁদপুরের বড় স্টেশন ক্লাব রোড এলাকার কসাই নূর মোহাম্মদ। তার পিতার নাম মৃত নূরুল ইসলাম।
তাদের পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, কসাই নূর মোহাম্মদ চাঁদপুরের বড় স্টেশন ক্লাব রোড এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন কসাই (মাংস বিক্রেতা)। তার পাশের বাসাটি হচ্ছে আলী আহম্মদ মেম্বারের। তিনি হলে নূর মোহাম্মদের ঘনিষ্ট বন্ধু। গত ২ মার্চ সকালে প্রতি দিনের ন্যায় দোকানে যায় এবং দুপুরে বাসায় ফিরে আসে।
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১০: ২৩ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৬,শনিবার
এইউ