টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে দু’টি জয়ের ঘটনা রয়েছে বাংলাদেশের। এবার টাইগারদের সামনে সুযোগটা ছিল পরিস্কার। তবে শনিবার দিনের প্রথম ভাগে নড়বড়ে ব্যাটিং ও পরে বল হাতে খেই হারিয়ে সুযোগটা ঘোলা হয় টাইগারদের।
অবশ্য সুযোগটা খোলাই রয়েছে টাইগারদের সামনে। সে ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের কঠিন পিচে ব্যাট হাতে বিশেষ কিছু করে দেখাতে হবে তামিম-ইমরুল-মুশফিকদের। আর তৃতীয় দিন শেষে টাইগারভক্তদের আশার কথা শোনান বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ।
ক্যারিবীয় পেস বোলিং লিজেন্ড ওয়ালশ বলেন, ইংল্যান্ডের লিডটা ৩০০ রানের নিচে রাখতে পারলে বাংলাদেশের জয় পাওয়া সম্ভব। গতকাল জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ২২৮/৮ সংগ্রহ নিয়ে দিনের খেলা শেষ করে সফরকারী ইংল্যান্ড।
দিন শেষে ক্রিস ওকস ১১ ও স্টুয়ার্ট ব্রড ব্যক্তিগত ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। এতে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে এগিয়ে যায় ২৭৩ রানে। তবে ম্যাচে বাংলাদেশের সম্ভাবনাটা স্পষ্ট থাকতে পারতো আরো।
টাইগাররা প্রথম ইনিংসের শেষ পাঁচ উইকেট খোয়ান মাত্র ২৭ রানে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে দলীয় ৬২ রানে ইংল্যান্ড খোয়ায় ৫ উইকেট। গতকাল লাঞ্চের পর ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬২/৫-এ ।
দ্বিতীয় ইনিংসে তখন ইংল্যান্ড এগিয়ে মাত্রই ১০৭ রানে। তবে পরে ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখান ইংল্যান্ডের শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরা। চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে এটা নিশ্চিত ম্যাচে হার-জিৎই দেখতে পাবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এক্ষেত্রে জয় পেতে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট হাতে রেকর্ড গড়তে হবে টাইগারদের। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২১৫ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। ২০০৯ সালে গ্রেনেডা মাঠে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ২১৫ রান তাড়া করে চার উইকেটে জয় কুড়ায় বাংলাদেশ।
আর ২০১৪ সালে টাইগাররা শেরেবাংলা মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন উইকেটের জয় দেখে ১০১ রান তাড়া করে। আগের দিনের ২২১/৫ সংগ্রহ নিয়ে গতকাল ব্যাট হাতে টাইগারদের নৈপুণ্যটা ছিল ভক্তদের কাছে হতাশার। প্রথম ইনিংসে ৭২ রানে পিছিয়ে দিনের মাত্র দ্বিতীয় বলে বাজে আউট হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
ইংল্যান্ডের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অফস্পিনার মঈন আলীর বাঁক খাওয়া ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে হাঁকাতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়ে যান সাকিব। আর ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখাতে ব্যর্থ হন বাকিরা। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ব্যক্তিগত ১৯ রানে সাজঘরে ফেরেন সাব্বির রহমান।
আর বাংলাদেশ দলের শেষ চার ব্যাটসম্যানের সাকুল্যে সংগ্রহ ছিল ৬ রান। শফিউল ইসলাম ২, মেহেদী হাসান মিরাজ ১, তাইজুল ইসলাম ৩ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি করেন ০*। আগের দিন শেষ বিকালে দলীয় ২২১ রানে উইকেট দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম।
আর শনিবার ২২১/৫ সংগ্রহ নিয়ে গতকাল ইনিংসের শেষ ২৭ রানে পাঁচ উইকেট খোয়ান টাইগাররা। এতে ২৪৮ রানে গুঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড শুরুর পাঁচ উইকেট হারিয়েছিল ১০৬ রানে। তবে শেষ পাঁচ উইকেটে ইংলিশরা স্কোর বোর্ডে জমা করেন ১৮৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসেও স্বস্তি ছিল না ইংলিশদের। দলীয় ২৬ রানে প্রথম উইকেট খোয়ায় ইংল্যান্ড।
ইংলিশ ওপেনার-অধিনায়ক অ্যালেস্টার কুকের উইকেট তুলে নেন অভিষেকে দ্যুতি ছড়ানো টাইগার স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের ডেলিভারিতে স্লিপে মাহমুদুল্লাহর হাতে ক্যাচ দেন এশিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডের সফল ব্যাটসম্যান অ্যালেস্টার কুক। এরপর ইংলিশদের চেপে ধরেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের ঘূর্ণিতে উইকেট খোয়ান জো রুট, বেন ডাকেট, মঈন আলী, বেন স্টোকস ও আদিল রশিদ।
চট্টগ্রাম টেস্টে ছড়ি ঘুরাচ্ছেন স্পিনাররাই। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ১০ উইকেট ভাগাভাগি করেন বাংলাদেশের অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও দুই বাঁ-হাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান-তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেন ইংল্যান্ডের তিন স্পিনার মঈন আলী, আদিল রশিদ ও গ্যারেথ ব্যাটি। আর গতকাল ম্যাচের তৃতীয়দিনের প্রথম সেশনে পতন হয় ৫৫ রানে আট উইকেট।
প্রথম ইনিংসে শেষ ২৭ রানে বাংলাদেশ খোয়ায় পাঁচ উইকেট। আর লাঞ্চের আগে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের সংগ্রহ ছিল ৩/২৮।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫:০০ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur