Home / চাঁদপুর / ওয়ার্ডে নৈশ প্রহরী নেই : নিরাপত্তা সংকটে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল
Chandpur General Hospital
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ফাইল ছবি

ওয়ার্ডে নৈশ প্রহরী নেই : নিরাপত্তা সংকটে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল

আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ওয়ার্ড ভিত্তিক কোন নৈশ প্রহরী নেই। হাসপাতালের প্রহরী ৯ পদের তালিকা থাকলেও তা চলছে এখন মাত্র দু’জন দিয়ে। গত কয়েক বছর ধরে এভাবেই চলছে হাসপাতালের নিরাপত্তা কার্যক্রম।

আর এ জন্য চুরি , ছিনতাই, ইভটিজিং ও অসামাজিক কার্যকালাপসহ ঘটছে নানা ঘটনা।

খবর নিয়ে জানাযায় আজ থেকে প্রায় আট, দশ বছর আগে চাঁদপুরের এ হাসপাতালটির পুরুষ ওয়ার্ড, গাইনী ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড এবং মহিলা ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রবেশ মুখে একজন করে নৈশ প্রহরী দায়িত্ব পালন করতেন। তখন হাসপাতালের রাতের পরিবেশ ছিলো অনেক শান্ত সুন্দর।

জেলার বিভিন্ন স্থানের লোকজন হাসপাতালে তাদের রোগীর সাথে সাক্ষাত করতে হলে প্রহরীর স্বরনাপন্ন হয়ে তারপর রোগীর সাথে দেখা করতে হতো। রাত ১০টা কিংবা ১১টার পর রোগীর কোন লোকজনকে ওয়ার্ডে ঢুকতে দেয়া হতো না। ওই সময় প্রতি ওয়ার্ডের প্রবেশ মুখে রাতে প্রহরী থাকায় হাসপাতালের ওয়ার্ড অথবা ওয়ার্ডের বাহিরে তেমন কোনো চুরি ছিনতাই এবং অসামাজিক কাজ হতো না।

কিন্তু গত কয়েক বছর রাতের বেলায় ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রহরী না থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড ও তার বাইরের পরিবেশ অশান্ত হয়ে পড়ে। রাত ১২ টা কি ১টার সময়ও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীর লোকজন আসা যাওয়া করে থাকেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের বেডে ঘটছে চুরির ঘটনা।

প্রহরী না থাকায় রাতে বহিরাগত লোকজন হাসপাতালে প্রবেশ করে রোগীদের মোবাইল সেট ও টাকাÑ পয়সাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। কখনো ইভটিজিংয়ের ঘটনাও ঘটে। এমন কি হাসপাতালের করিডোর অথবা রোগী উঠা নামার সিঁড়ির স্থানে অনেক বখাটে ছেলেরা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে দেখা গেছে।

যেখানে এক সময় প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ জন করে নৈশ প্রহরী দায়িত্ব পালন করতো, সেখানে পুরো হাসপাতাল মাত্র দু’জন নৈশ প্রহরী দায়িত্ব পালন করছেন । রাতে তারা দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালের নিচ তলার প্রধান গেটের প্রবেশ মুখে।

হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রহরী না থাকায় একদিকে যেমন ঘটছে চুরিসহ নানা ঘটনা অন্যদিকে হয়রানির শিকার হচ্ছে ওয়ার্ডবয়, আয়া ও সিস্টাররা।

হাসপাতালের একাদিক আয়া ও সিস্টারদের সাথে আলাপকালে জানা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের গেটে রাতের বেলায় কোন প্রহরী না থাকার কারনে তাদেরকেই অনেক সময় সে প্রহরীর দায়িত্ব পালন করতে হয়। তবে বেশির ভাগই যারা রাতে ডিউটি করেন তাদেরকেই এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

তারা জানান রাতের বেলায় যখন লোকজন রোগী সাথে দেখা করতে তখন তাদের হাতের কাজ ফেলে গেট খুলে দিতে হয়। আবার কখনো কখনো গেট খুলে দিতে দেরি হলে লোকজনের সাথে তাদের বাকবিতন্ডার ঘটনাও ঘটে।

হাসপাতালের প্রহরী ৯ পদের তালিকা থাকলেও তা চলছে এখন মাত্র দু’জন দিয়ে। এজন্য যা ঘটার তাই ঘটছে। গত কয়েক বছর ধরে ওয়ার্ড ভিত্তিক কোন নৈশ প্রহরী ছাড়াই চলছে হাসপাতালের কার্যক্রম।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ সফিউল আলম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘লোকবল সংকটের কারনে আমরা মেইন গেটে দু’জন প্রহরীকে দায়িত্ব দিয়েছি। যদিও প্রহরী পদে ৯টি পদের নিয়োগ রয়েছে কিন্তু লোকবলের অভাবে দু’জনকে দায়িত্ব দিয়ে বাকিদের অন্য কাজে লাগিয়েছি। আর বহিরাগত বখাটেদের জন্য ব্যাবস্থা নিতে আমরা প্রায়ই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছি। তারা যখন পেট্রোল ডিউটি করে তখন হাসপাতালে এসে ঘুরে যান। আপনাদের চোখে যদি এমন কোন অপরাধমূলক কিছু ধরা পড়ে তাহলে লিখেন।’

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আগের পর্বগুলো দেখুন…চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম বন্ধ : নেই চক্ষু ডাক্তার(পর্ব-২)

চিকিৎসক সঙ্কট : চাঁদপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসায় পরিচ্ছন্নকর্মী (প্রথম পর্ব)

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:০০ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

ওয়ার্ডে নৈশ প্রহরী নেই : নিরাপত্তা সংকটে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল

About The Author

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি

Leave a Reply