ইভটিজিংয়ের শিকার চাঁদপুর শহরের লেডী প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ক শাখার ছাত্রী তানিয়া আক্তার সানজিদা ও তাকে ইভটিজারকে মো. হানিফ গাজীর বাড়িতে গিয়েছে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল হাই।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডলের নির্দেশে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলছাত্রী তানিয়ার শহরের কোড়ালিয়া রোডের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত পুলিশকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব মন্ডল ।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই ইভটিজিংয়ের স্বীকার স্কুল ছাত্রী তানিয়া আক্তার সানজিদা ও তার মা আসমা আক্তারের বক্তব্য শুনেন।
প্রথমে ঘটনার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে প্রশাসনের কাচে স্কুলছাত্রী তানিয়া আক্তার সানজিদা প্রকৃত ঘটনা খুলে বলে।
এ সময় তানিয়ার মা আসমা বেগম বলেন, ‘বখাটে’ হানিফের অত্যাচারে তার মেয়ে ৬ মাস যাবত স্কুলে যেতে পারছে না । তাদের ঘরের চালে প্রতিদিন ‘ইটপাকেল নিক্ষেপ’ করা হয়। মেয়ে তানিয়া ঘর থেকে বাহির হলে এলাকার ‘বখাটেরা’ তানিয়াকে ‘হানিফ’ বলে ‘চিৎকার’ করতে থাকে এবং উত্যক্ত করে ।
তানিয়ার মামা জাকির হোসেন জানান, ‘আমাকে এলাকায় শালিশের কথা ঢাকা থেকে এনে বসবে বলেও বসছে না । এলাকার শালিশ রাজ্জাক মোল্ল¬া, হেলালসহ অনেকে কয়েকবার বসেও এ কোন সমাধান করতে পারেনি । ‘বখাটে যুবক’ হানিফ গাজী প্রেমেরও প্রস্তাব দেয়। স্থানীয় শাহাদাত হাওলাদার ‘বখাটে হানিফকে’ সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে ।
পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই অভিযুক্ত হানিফ গাজীর বাড়ীতে যান । সেখানে তার পিতা চারু গাজীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় অভিযুক্ত হানিফ গাজী বাড়ীতে ছিলো না । অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পুণরার তার পিতা চারু গাজীকে নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাড়ীতে যান। সেখানে উভয়ের পিতা-মাতার সামনে পরবর্তীতে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না মর্মে চারু গাজী প্রশাসনকে আশ্বস্ত করেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, ‘স্থানীয় ও জাতীয় পত্র-পত্রিকায় স্কুল ছাত্রী তানিয়াকে উক্তত্য করার ঘটনাটি প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ হয় । তার নির্দেশে আমি এখানে তদন্তে এসেছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। বখাটে ছেলে হানিফ গাজী ও তার পরিবারকে থানায় লিখিতভাবে অঙ্গীকার করতে হবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না । ঘটলে তার পরিবার দায়ী থাকবে । এখন থেকে তানিয়া নিয়মিত স্কুলে যাবে।’
এ ব্যাপারে মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব মন্ডল জানান, ‘হানিফের পিতা চারু গাজীকে বলেছি তার ছেলেকে থানায় নিয়ে আসতে। তাদের থেকে এ ধরনের ঘটনা ভবিষতে ঘটবে না এমন অঙ্গীকারনামা দিতে হবে । নইলে বখাটে ছেলে হানিফ ও তার পিতা চারু গাজীকে গ্রেফতার করা হবে।’
এব্যাপারে হানিফের পিতা চারু গাজী বলেন, ‘ঘটনার পর এলাকায় শালিশরা আমাকে নিয়ে কয়েকবার বসেছে। তবে এর কোন সমাধান এখনও হয়নি। শালিশরা আমার কাছ থেকে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে এখন পর্যন্ত এ ঘটনা লিখে সমাধানের জন্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমি আমার ছেলের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাই। আগামি দিনে এধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না বলে নিশ্চয়তা দিতে পারি।’
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:৫০ এএম, ১১ অক্টোবর ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur