নৌযান শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন বুধবার (২৪ আগস্ট) সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের একাধিক যাত্রীবাহী লঞ্চসহ ছেড়ে গেছে ৫৪টি ও দেশের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঘাটে ভিড়েছে ২৯টি লঞ্চ। এর মধ্যে চাঁদপুর থেকেও ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে কয়েকটি লঞ্চ।
তৃতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে ৭টি ও ভিড়েছে ৩১টি লঞ্চ।
শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের প্রথম দিন দুপুর পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও বিকেল থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায় ১১টি লঞ্চ। ধর্মঘটের কারণে প্রথম ও দ্বিতীয় দিন যাত্রীদের ভোগান্তি হলেও তৃতীয় দিন লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হুমায়ুন কবীর বলেন, যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় সদরঘাট থেকে ৬০-৭০টি লঞ্চ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায় সেখানে বুধবার ৫৪টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। যা লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকার চিত্র।
বৃহস্পতিবার সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চের তালিকায় রয়েছে ওয়াপদাগামী এমভি নাগরিক, চাঁদপুরের ইচলী সোনার তরী, শরীয়তপুর ঈদগাঁ ফেরিঘাট বোগদাদিয়া-৬, ওয়াপদাগামী মর্নিংসান-১, চাঁদপুরের চরভৈরবী বোগদাদিয়া-৭, বরিশালের গ্রিন লাইন-২, চাঁদপুরের ইচলী-৪, বরিশাল মূলাদীর ঝাণ্ডা, শরীয়তপুরের হাটুরিয়া পট্টি স্বর্ণদ্বীপ-৮, শরীয়তপুরের দুলারচর-১।
ঘাটে ভেড়া লঞ্চের তালিকায় চাঁদপুরের ইচলী মিতালী-৪, শরীয়তপুরের দুলারচর-২, পূর্বালী-৪, চাঁদপুরের ইচলী ইমাম হাসান-২, চাঁদপুরের ময়ূর-২ ও ৭, ভোলার দৌলত খাঁ পানামা, মাদারীপুরের সিলভারসান, মাদারীপুরের দ্বীপরাজ-৪, বরিশালের মূলাদীর অভিযান-৩, ভোলার-বালিয়া, শরিয়তপুরের প্রিন্স আওলাদ, মোড়লগঞ্জগামী মধুমতি, গলাচিপার আসা যাওয়া-২, বরিশালগামী টিপু-৭, বেতুয়াগামী ফারহান-৬, হাতিয়ার ফারহান-৬, বরিশালের সুরভী-৭, বরিশালগামী পারাবাত-১২, ভোলাগামী কর্ণফুলি-১০, লালমোহনগামী নিউ সাব্বির-৩, বগলাইয়ার ধুলিয়া-১, পটুয়াখালীগামী সুন্দরবন-৯, পটুয়াখালীগামী আওলাদ-৭, ভাষানচরের সম্রাট-২, গৌরনদীগামী নিউম্যান-৪, ভাণ্ডারিয়ার টিপু-১২, ভোলার কর্ণফুলি-১১, ভাণ্ডারিয়ার টিপু-৬।
শ্রমকিদের ধর্মঘটের বিষয়ে এমভি ফারহান লঞ্চের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, যাত্রীবাহী সব ধরনের নৌযান ধর্মঘটের প্রথম দিন বিকেল থেকে চলাচল করছে। স্বাভাবিক যে লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে যায় সেভাবেই সব লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এছাড়া সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান এখন স্বাভাবিকভাবেই চলছে। তবে শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই বলে যোগ করেন তিনি।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক বুলবুল মাস্টার দাবি করেন, কিছু মালিক তাদের শ্রমিকদের দিয়ে লঞ্চ চালানোর জন্য নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এতে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তবে সব ধরনের হুমকি-ধামকি থেকে লঞ্চ মালিকদের বিরত থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
এ নিয়ে চলতি বছর তিনবার ধর্মঘট করছেন নৌযান শ্রমিকরা। গত ২০ জানুয়ারি প্রথম দফায় ধর্মঘট করেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ও ২২ আগস্ট তৃতীয় দফায় ধর্মঘট ডাকা হয়।
এদিকে সংকট সমাধানে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিয়া আবদুল্লাহ মামুনের সভাপতিত্বে বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্রম ভবনে নৌপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকদের বৈঠক ডাকা হয়। কিন্তু বৈঠকে মালিকপক্ষ উপস্থিত হয়নি। পরে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হলেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়া আবদুল্লাহ মামুন বলেন, সামনে ঈদ। মানুষের যাতে দুর্ভোগ না হয়, সেজন্য শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছে। দাবি-দাওয়ার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেই সমাধান করা হবে। এছাড়া বৃহস্পতিবার মালিকদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
চাঁদপুর টাইমস এডিটর ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:১০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur