Home / লাইফস্টাইল / প্রেম-পরকীয়ায় আসক্তদের প্রতি গবেষকদের কিছু প্রশ্ন ও করণীয়
প্রেম-পরকীয়ায় আসক্তদের প্রতি গবেষকদের কিছু প্রশ্ন ও করণীয়

প্রেম-পরকীয়ায় আসক্তদের প্রতি গবেষকদের কিছু প্রশ্ন ও করণীয়

বর্তমান প্রজন্ম একটি আসক্ত প্রজন্ম। কিছু না কিছুতেই আসক্ত তারা। এদের কেউ গেমস, ফেসবুক, ডিভাইস ও পণ্যাসক্ত। কিন্তু আরেকটি বিষয়েও এরা নীরবে আক্রান্ত হয়। সেটি হলো সম্পর্কের আসক্তি। এ সম্পর্কের মানে হতে পারে স্বাভাবিক ভালোবাসা, প্রেম, অথবা সামাজিকতার ঘৃণ্য পরকীয়া।

এ প্রজন্মের বেশির ভাগই জীবনে অন্তত একবার হলেও সম্পর্কের আসক্তিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

এবার দেখে নেই এ বিষয়ে গবেষকরা কি বলেছেন-

২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কের প্রথম দিনগুলোতে ভালোবাসা মস্তিষ্কে মাদকদ্রব্য কোকেন বা ব্যথানাশক ওষুধের মতো প্রভাব ফেলে।

ভালোবাসা বাজে ওষুধ

সম্পর্কের আসক্তি এখন উচ্চহারে বাড়ছে। অন্য আর যেকোনো আসক্তির মতোই ভালোবাসার আসক্তিতেও একই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। ভালোবাসার আসক্তিতে আক্রান্তরাও নিরাপত্তা এবং স্বমর্যাদার অনুভূতি লাভে নিরন্তর রোমান্টিক ভালোবাসার ক্ষুধা অনুভব করেন। এরা একের পর এক সম্পর্কে জড়াতে থাকেন। অথবা আবেগগতভাবে এবং অনেক সময় এমনকি শারীরিকভাবে নিপীড়নমূলক সম্পর্কের ফাঁদেও আটকা পড়ে থাকেন। কারণ তারা এ ধরনের সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

কোনো সম্পর্কে না থাকলে তারা ভীতিগ্রস্ত এবং বিরামহীন হয়ে পড়েন। মনোবিজ্ঞানী ড. রচনা কে সিং বলেন এখন ৩০ এর কম বয়সীরা অন্তত ৬-৭টি প্রেমের সম্পর্ক করেন।

তিনি বলেন, ঘন ঘন সম্পর্ক বদলের ঘটনা অহরহই ঘটছে। একটি সম্পর্ক থেকে আরেকটি সম্পর্কে জড়ানোর আগে কেউ কোনো ধরনের শোকও করছে না বা একটু বিরতি নেওয়ার চিন্তাও করছে না।

ভালোবাসায় আসক্তদের প্রতিনিয়ত আহ্লাদের দরকার হয়। সম্পর্ক বিষয়ক পরামর্শক ড. গীতাঞ্জলী শর্মা বলেন, “কেউ একটি সম্পর্ক ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই আরেকটি সম্পর্কে জড়ানোর মূল কারণ হলো এর মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে চান যে তাদের কোনো সমস্যা নেই। এবং সহজেই তারা সঙ্গী বা সঙ্গিনী খুঁজে নিতে পারেন।

আসক্ত বনাম পরীক্ষাকারী

কিন্তু যারা ভালোবাসা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান তাদের প্রত্যেকেই সম্পর্ক আসক্ত নন। এমন অনেকে আছেন যারা একাধিক সম্পর্কের আবেগে ভেসে যান না। কম আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন, পারিবারিকভাবে নিপীড়ন বা অবহেলার শিকার, অসুখী পরিবার থেকে আসা অথবা আন্তরিক কোনো সম্পর্কে বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে এমন লোকরাই সাধারণত এ ধরনের ভালোবাসার আসক্তির পাঁকে জড়িয়ে পড়েন।

যতবারই তারা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ান ততবারই তারা বলেন, “এবারের সম্পর্কটি হয়ত কার্যকর হবে”। অথবা একই নিপীড়নমূলক সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করে এরা ভাবেন, “এবার হয়তো ভিন্ন অভিজ্ঞতা হবে”।

বিয়ে বিষয়ক পরামর্শক ড. নিশা খান্না বলেন, “ভালোবাসায় আসক্তদের আবেগগত বুদ্ধিমত্তা (ইকিউ) নিচু হয়ে থাকে। মনোববিজ্ঞানে মানসিক অবসাদ নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচনা করা হয়। কিন্তু এখন আবেগগত বুদ্ধিমত্তা নিয়েও ব্যাপক পরিসরে আলাপ-আলোচনা শুরু করা দরকার।”

মনের কাছে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন ও নিজের রেটিং করুন

– আপনি কি মনে করেন, যদি কেউ একজন আপনাকে ভালোবাসেন তাহলেই আপনি সুখী হবেন?

– আপনি কি সিনেমা বা সংগীতে যেমনটা দেখা যায় তেমন কোনো ভালোবাসার সম্পর্কের অনুসন্ধান করছেন?

– আপনি কি কখনও নিজের সঙ্গে এমন কাউকে ভালোবাসার ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করেছেন যাকে হয়ত আপনি শুধু ভালোবাসার প্রয়োজনেই ভালোবেসেছেন?

– একা হয়ে পড়ার ভয়ে বাজে সম্পর্কের ফাঁদে আটকে আছেন।

– প্রতিশ্রুতিশীল কোনো সম্পর্কে কি আপনি নিজের পছন্দের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেছেন বা আগের কোনো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কথা ভেবেছেন?

– কখনও কোনো সম্পর্কে জড়াননি?

– ব্রেকআপের পর কি বিরতি নেন?

– সঙ্গী বা সঙ্গিনী আপনাকে সব সময়ই ভালোবাসার অনুভূতিতে সিক্ত করে রাখুক তা প্রত্যাশা করেন?

– কেউ বাস্তবে আপনার না হওয়া সত্ত্বেও তাকে নিজের বলে ভাবেন?

জাকিয়া সুলতানা সুমাইয়া : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২:৫০ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply