ঢাকা মহানগর বিএনপির দুই কমিটি এ মাসেই। ঢাকা মহানগর বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব অনেকটাই চূড়ান্ত। আন্দোলনের মাঠে ‘ব্যর্থ’ সিনিয়রদের বাদ দিয়ে মহানগরের রাজনীতির সাথে যুক্ত মধ্যম সারির নেতাদের দিয়ে সাজানো হচ্ছে নতুন কমিটি। উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই ভাগে মহানগর বিএনপিকে বিভক্ত করে দু’টি কমিটি এখন হাইকমান্ডের টেবিলে। চলতি মাসেই কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে দলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা আভাস দিয়েছেন। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনের মাঠে দলের প্রভাবশালী দুই নেতা মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন মহানগর বিএনপির সক্ষমতা যথার্থভাবে প্রমাণ না হওয়ায় এবার কেন্দ্রীয় এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে হাইকমান্ড। সিনিয়র কাউকেই আর মহানগরের নেতৃত্বে রাখা হচ্ছে না। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ঢাকাকে দুই ভাগে ভাগ করে নতুন নেতৃত্বের পক্ষে মত দিয়েছেন। দু’টি কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে কাকে কাকে রাখা যেতে পারে, তা নিয়েও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, উত্তর ও দক্ষিণে দু’টি কমিটির শীর্ষ ৫ নেতার (সুপার ফাইভ) নাম ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চার নেতার নাম প্রায় চূড়ান্ত। তবে সুপার ফাইভের অন্য সদস্যদের নিয়ে শেষ মুহূর্তের আলোচনা চলছে। তালিকা অনুযায়ী উত্তরে সভাপতি হিসেবে মহানগর বিএনপির বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইয়ুম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নগর বিএনপির সদস্য আহসান উল্লাহ হাসানের নাম রয়েছে। আর দক্ষিণে সভাপতি হিসেবে নগর বিএনপির সদস্য নবী উল্লাহ নবী ও সাধারণ সম্পাদক পদে নগর বিএনপির সদস্য ইউনুস মৃধার নাম রয়েছে। বিএনপি সূত্র মতে, এম এ কাইয়ূমের নাম উত্তরের সভাপতি তালিকায় থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে- ঢাকা মহানগরের রাজনীতিতে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি নগরজুড়ে তার কর্মী সংখ্যা অন্য নেতাদের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া মহানগর রাজনীতির প্রভাবশালী দুই নেতা মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার সাথে রয়েছে তার সুসম্পর্ক। অন্য দিকে উত্তরে বিশেষ করে মিরপুর অঞ্চলের সাংগঠনিক ভীত অনেকটাই আহসান উল্লাহ হাসানের নিয়ন্ত্রণে। আর সাবেক ডেপুটি মেয়র ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। অন্য দিকে বিগত সময়ে নানা বিতর্ক থাকলেও বিগত আন্দোলনে ভূমিকার জন্য দক্ষিণে সভাপতি হিসেবে খোকাপন্থী হিসেবে পরিচিত নবী উল্লাহ নবীর নাম আছে সবার উপরে। আর আব্বাসপন্থী হিসেবে পরিচিত ইউনুস মৃধার নাম রয়েছে সাধারণ সম্পাদকের তালিকায়। ৪৮টি মামলায় জামিনে থাকা ইউনুস মৃধা বিগত আন্দোলনে ভূমিকা রাখায় গুডবুকে রয়েছেন। দলের এক সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়টি মাথায় রেখেই ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণ এই দু’টি কমিটিতে ভাগ করা হচ্ছে। দুটি কমিটির নেতৃত্বে আসবেন নগর নেতারাই। আর মহানগরে যারা নেতা হবেন তাদের কারো কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ থাকলে তা ছেড়ে দিতে হবে। উত্তরের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার তালিকায় থাকা আহসান উল্লাহ হাসান জানান, দুটি কমিটি হচ্ছে এমনটাই তারা শুনেছেন। সাধারণ সম্পদকের দায়িত্ব পাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী যদি দায়িত্ব দেন, তাহলে যাথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করবো।’ এ বিষয়ে দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার তালিকায় থাকা ইউনুস মৃধা নয়া দিগন্তকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মহানগরের রাজনীতির সাথে জড়িত আছি। অর্ধশত মামলা নিয়ে ফেরারি অবস্থায় দিনযাপন করছি। তবুও দলের কোনো কাজে পিছপা হইনি। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে দল ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন, তাহলে শত ত্যাগ স্বীকার করে হলেও সে কাজ আমি করে যাব।’ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহানগরের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকতে চান আরো অনেক নেতা। এদের মধ্যে উত্তরে রয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মুন্সী বজলুল বাসিত আনজু, আবদুল মতিন, আব্দুল আলীম নকী ও এজিএম সামসুল হক। দক্ষিণে রয়েছেন কাজী আবুল বাশার, হারুন অর রশীদ হারুন, তানভীর আহমেদ রবিন, আরিফুর রহমান ও আবদুল লতিফ।নয়া দিগন্ত
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:৩৫ পি,এম ২০ আগস্ট ২০১৬,শনিবার
ইব্রাহীম জুয়েল
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur