চাঁদপুর সদরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির শ্রেষ্ঠ সভাপতি ‘নির্বাচন ২০১৬’ সফরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. আবদুল আজিজ খান দুদু ‘উপজেলা শ্রেষ্ঠ সভাপতি ’ নির্বাচিত হয়েছেন।
সদর উপজেলার ১ শ’৭০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শিক্ষায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের মধ্য থেকে যারা সফলতার পরিচয় দিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান ও স্কুল পরিচালনায় দক্ষতা রয়েছে এমন মহতীদের মূল্যায়ন করে শ্রেষ্ঠ ঘোষণা করা হয়।
বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারিভাবে গঠিত নির্বাচিত কমিটি কর্তৃক বিভাগ, জেলা ও উপজেলা এ ধরণের মূল্যায়ন হয়ে থাকে।
মো. আবদুল আজিজ খান দুদু চাঁদপুর সদরের উত্তরে সফরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।
তিনি ১৯৫৬ সালের ১ মার্চ চাঁদপুর সদরের কল্যাণপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত গোলাম হোসেন খান। যিনি এলাকার একজন জুরির হাকিম হিসেবে সুপরিচিত ও সফরমালী পোস্টঅফিসের পোস্টমাস্টার ছিলেন ।
মাতার নাম মৃত আমেনা বেগম। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণী। ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি সবারই ছোট ।
মো. আবদুল আজিজ খান দুদু এ বিদ্যালয় হতেই পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন । অতঃপর ১৯৭১ সালে সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি, ১৯৭৩ সালে চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে এইচএসসি ও ১৯৭৫ সালে ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৮০ সালে চট্টগ্রামের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে একজন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বাবা-মায়ের ছোট সন্তান হিসেবে তাদের আদেশেই ১৯৮৪ সালে তৎকালীন চট্টগ্রামের চাকুরি ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসেন।
গ্রামে এসেই তিনি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ,সাংস্কৃতিক ও সমাজসেবামূলক কর্মকা-ে নিজকে জড়িয়ে ফেলেন ও পারিবারিক দায়বদ্ধতার কারণে পারিবারিক উদ্যোগে গড়া সফরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়, সফরমালী জামে মসজিদ, সফরমালী বাজার ও লঞ্চঘাট, সফরমালী জনকল্যাণ সংস্থা, সফরমালী ডাকঘর, সফরমালী ঈদগাহ ও বাহাদুরপুর পীর সাহেব কেবলার শুভাগমনে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত ইসলামী মহাসম্মেলন প্রভৃতি বিষয়ে পরিচালনায় দিক নিদের্শনার ক্ষেত্রে আবদুল আজিজ খান দুদু’র অসামান্য অবদান রয়েছে।
তিনি দীর্ঘ দিন থেকে সফরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।
তিনি এ বিদ্যালয়টির দাতা সদস্য, সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আজীবন কালের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাটাগরির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হিসেবে একজন শিক্ষানুরাগীর দায়িত্ব পালন করে এলাকার শিক্ষা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করছেন।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন কালে সকল সদস্যদের সহযোগিতায় সরকারি নিদের্শিত প্রতিটি কর্মসূচি পালনে তিনি যথাযথ ভূমিকা পালন করছেন।
জাতীয় দিবসগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ, বই উৎসব পালন ও বিতরণ,শিশু জরিপ পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদান, প্রাক-প্রাথমিকে শতভাগ ভর্তি, মা সমাবেশ, উঠোন বৈঠক, বৃক্ষরোপণ, স্কাউটিং কার্যক্রম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচি, বিদ্যালয়ের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, খেলাধূলার উন্নয়নে মাঠ ভরাট, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, বিদ্যুৎসংযোগ ও বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থাকরণ,বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরষ্কারের ব্যবস্থা, খেলাধূলা ও শিক্ষা উপকরণ সংগ্রহ , শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষক-অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়মিত সভাকরণ ও সু-সম্পর্ক রক্ষা, উপবৃত্তি প্রদানে সরকারি অনুসৃত নীতিমালা অনুসরণ ও বিদ্যালয়ের ভৌতিক অবকাঠামোর উন্নয়নে জনপ্রতিনিধিদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রেখে বিদ্যালয়টির সার্বিক উন্নয়নে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন।
যার ফলে আজকের নতুন নতুন ভবনে এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের পথ উম্মোচিত হয়েছে ও বর্তমান সরকারের ‘শিক্ষানীতি ২০১০’ বাস্তবায়নে এ বিদ্যাপীঠ এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে ।
শিক্ষকদের যথাযথ দায়িত্ব পালন, বিগত ক’বছরের পিএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ, ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি লাভে বিদ্যালয়টি দিন দিনই এগিয়ে চলছে।
প্রতিবছরই তার পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল প্রতিযোগিতায় ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অংশগ্রহণে এ বিদ্যালয়ের ফুটবলারগণ কৃতিত্ব রেখে আসছেন।
সব মিলে আজকের সফরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চাঁদপুর জেলার এ’ ক্যাটাগরির স্কুলগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
এছাড়া তিনি চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। মার্কেটটি প্রতিষ্ঠায় ও আজকের এ পর্যায়ে আনতে ১৯৮৭ সাল থেকে তাঁর নিরলস পরিশ্রম রয়েছে।
যার ফলে চাঁদপুরের ব্যবসায়ীমহলে তিনি একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। মার্কেটটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারায় চাঁদপুরের প্রায় এক সহস্রাধিক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ও তাদের পরিবার পরিজনের বেঁচে থাকার অবলম্বন ও রুটি-রোজির পথ সুগম হয়েছে ।
মো.আবদুল আজিজ খান দুদু’র সহধর্মিনী মন্জুমা বেগম এ বিদ্যালয়েরই একজন সহকারী শিক্ষিকা। তিনি এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের সৌভাগ্যশীল পিতা যারা উভয়ই উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী। শিক্ষা বিস্তারে ও সমাজসেবায় তাঁর এ অবদান এলাকায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯:০০ এএম, ৭ আগস্ট ২০১৬, রোববারডিএইচ