কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি সাত সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার এবং সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ছয় সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রতিদিনই বাড়ছে বানভাসী মানুষের সংখ্যা। তারা আশ্রয় নিচ্ছেন উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পানির প্রবল তোরে রৌমারী উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে ১০টি বাড়ি ভেসে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে রৌমারী উপজেলা শহরে।
এসব তথ্য জানিয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান আরো বলেন, এ ছাড়া বেড়েছে তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদীর পানি।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলার ৯ উপজেলায় পানিবন্দি হয়েছে দেড় লক্ষাধিক পরিবারের ৬ লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে তলিয়ে আছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক। এর মধ্যে ৪০ কিলোমিটার নদ-নদীর তীর রক্ষা বাঁধ রয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গৃহস্থদের। বন্যার্তদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে পানি বাহিত রোগ।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯ উপজেলায় ৮৫টি মেডিকেল টিম দুর্গতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছে।
বন্যা দুর্গতরা বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বিশেষ করে বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগ আরো বেড়েছে।
এ বিপুল সংখক মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অপ্রতুল বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বানভাসী মানুষ। তাদের বেশির ভাগই শুকনা খাবারের সংকটে ভুগছেন। দুর্গত এলাকায় নৌকা দেখলেই ত্রাণ পাওয়ার আশায় ছুটে আসছে হাজার হাজার বানভাসী মানুষ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত আট লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ৪০০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর সড়কে আশ্রয় নেওয়া শামছুল মিয়া জানান, কষ্ট করে ১০ দিন ধরে পানির ওপর থাকলেও আর থাকা যাচ্ছে না। এজন্য বৌ-বাচ্চা, গরু-ছাগল নিয়ে পাকা রাস্তায় এসেছি। কিন্তু খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। খুঁটির ওপর পলিথিন দিব সে টাকাও নেই।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৭:৫৮ পিএম,২৮ লাই ২০১৬,বৃহস্পতিবার
এইউ