শত বছরে পা রাখলো চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ‘ঐতিহ্যবাহী’ সাচার উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি শুধু উপজেলা নয়, চাঁদপুর জেলার প্রাচীনতম একটি বিদ্যাপিঠ।
এ উপজেলার উত্তর জনপথের সাচারের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত প্রায় ২ একর সম্পত্তির ওপর এ বিদ্যালয়টি ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ধীরে-ধীরে বিদ্যালয়টি শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে ১শ ’বছরে পা দিলো।
অতীতের ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি আজও ধরে রেখেছে তার ঐতিহ্য ও সুনাম। ১৯৮৪ সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভূক্ত করা হয়।
স্থানীয় অধিবাসী সূত্রে জানা গেছে এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ১৯১৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্নে উপজেলার জয়নগর গ্রামের লক্ষ্মী কান্ত আইচ ও সাচার জমিদার বাবু-রা বিদ্যালয়টি স্থাপনে সম্পত্তি দিয়ে সহায়তা করেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা ভাবে সাফল্যের স্বাক্ষর ধরে রেখেছে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টি।
শত শত শিক্ষার্থী দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে জ্ঞানের দ্যুতি ছড়াচ্ছে এবং কর্মক্ষেত্রে অনেক কীর্তি শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠি হয়েছে। এদেরকে কেউ কেউ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বড় বড় পদে চাকরি করছে।
বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩২জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। তাঁর মধ্যে শিক্ষক ১৯ জন এমপিওভূক্ত ও কর্মচারী ৬ জন এমপিওভূক্ত এবং অন্যান্য খন্ডকালীন শিক্ষকদের বিদ্যালয় প্রদত্ত বেতন ভাতায়দি দেয়া হয়।
প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে বিদ্যালয়ে উল্ল্যেখযোগ্য শিক্ষার্থী না থাকলেও দিনের পর দিন এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বেড়েই চলছে। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি এবং ভোকেশনাল শাখায় ২ হাজার ৩শ ৭৪জন শিক্ষার্থী, শ্রেণিকক্ষ ২৯টি এবং স্কাউট গালস, বয়স্কাউট দল রয়েছে।
শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে বিদ্যালয়ে কম্পিউটার, প্রজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাস করা হয়। খেলাধুলা, সাহিত্য সংস্কৃতি, শিক্ষা সপ্তাহ, অভিভাবক সমাবেশ,জাতীয় দিবস পালনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যালয়টির ব্যাপক সুনাম রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারে প্রযুক্তিগত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষকদের দেয়া হয়েছে ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং যাবতীয় তথ্য প্রদর্শনের এলইডি সাইনবোর্ড বসানোর উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ে জেএসসি, এসএসসি ও ভোকেশনাল এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে। জেএসসি,এসএসসি ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় প্রায় প্রতি বছর শতভাগ পাশ অর্জনসহ জিপিএ-৫ ও জুনিয়র স্কলারশীপ প্রাপ্তিও উপজেলা পর্যায়ে শীর্ষে।
এছাড়া অবকাঠামোগত ভাবে বিদ্যালয়টি অনেক উন্নত। রয়েছে পশ্চিম পাশে দ্বিতল ভবন, উত্তর পাশ্বে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর একাডেমিক ভবন।
মেধা অন্বেষনে এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বটু কৃষ্ণ বসু ২০১৫ সালে চাঁদপুর জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি,কচুয়া উপজেলা সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার ভূইয়া বলেন, অজো পাড়াগায়ে অবস্থিত সাচার উচ্চ বিদ্যালয়টি শত বছরে পা রাখায় আমি আনন্দিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার উন্নয়নে যারা কাজ করছেন আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বটু কৃষ্ণ বসু চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমরা মেধাবী ছাত্র তৈরি করার পাশাপাশি সুযোগ্য মানুষ এবং মূল্যবোধ সম্পন্ন ছাত্র সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তাছাড়া শতাব্দী প্রাচীন এ বিদ্যালয়টির সুনাম ও সুখ্যাতি ধরে রাখার জন্য বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
এদিকে বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন উপজেলার কলেজ ও উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি করণের উদ্যোগ নিয়েছে এ এলাকার অভিবাবক ও সচেতন লোকজন শতবর্শী প্রাচিনতম এ বিদ্যালটি সরকারী করণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিবেদক- জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৪:৫৯ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ