ক’দিন পরেই মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল। আনন্দ বার্তা নিয়ে ঈদ যেনো প্রতিটি মুসলমানের ঘরে দরজার কড়া নাড়ছে। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার বিনিময়ে পাওয়া রমজানের এ ঈদ বিশেষ এক তাৎপর্য এবং গুরুত্ব বহন করে।
ফলে রমজানের ঈদ উদযাপনে ধনী-গরিব সকলই কিছুটা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় চাঁদপুরেও বইতে শুরু করেছে ঈদ আনন্দের হাওয়া। জেলা শহর অথবা উপজেলার ঈদ বাজারে এখন যেনো ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কারোই দম ফেলার সুযোগ নেই।
এ বছর মূলত: ১০ম রমজানের পর থেকেই বিপনী বিতানগুলিতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় শুরু হয়।
এদিকে রমজানের শুরু থেকেই শহরের টেইলার্সের দোকানগুলির সেলাই শ্রমিকদের চোখের ঘুম অনেকটা বাদ হয়ে গেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টেইলার্সের দোকানগুলিতে ঝড় ঝড় ঝড় ঝড় শব্দে মুখোরিত থাকতে দেখা যায়।
সুই, সুতো আর নতুন কাপড় হাতে সময় পার করছে এ দর্জি বা কারিগর নামের সেলাই শিল্পীরা। ২ জুলাই শহরের ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের আব্দুল্লা টেইলার্স (পাঞ্জাবী), জোরপুকুর পাড়স্থ ড্রেসকো টেইলার্স, হাকিমপ্লাজার স্টাইল টেইলার্স, নিউ মার্কেটের পরশমনি টেইলার্স, হোসেন প্লাজার হোসেন টেইলাস এন্ড ফেব্রিক্স, ভূইয়া সেন্টারের ময়ুরী টেইলার্স এন্ড জাহি ফেব্রিক্স, নূর ম্যাশনসহ বিভিন্ন অভিজাত মার্কেটগুলির পাশাপাশি রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ইব্রাহিম টেইলাস এন্ড ফেব্রিক্স, পুরাণবাজার মসজিদ পট্টির মদিনা টেইলার্স, সেঞ্চুরী টেইলাস, লোহাপুলের নিউ মুনসান টেইলার্সসহ বিভিন্ন পাড়ামহল্লার ছোট-বড় টেইলার্সের দোকানগুলিতে কারিগরদের ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে।
ক্রেতারা মার্কেট থেকে কাটা কাপড় ও বিভিন্ন ডিজাইনের থ্রি-পিছ কিনে এসব টেইলার্স দোকানগুলিতে নিজের পছন্দ মতো পোশাক তৈরি করছে। ফলে ট্রেইলার্সের কারিগর সেলাই শ্রমিক ও মালিকদের চোখে এখন ঘুম নেই।
চাঁদপুর চেম্বার অব ইন্ডাষ্ট্রির কমার্সের পরিচালক রোটাঃ জামাল হোসেন জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর রমজানের শুরুতে অর্ডার খুবই কম হয়েছে। তবে রমজানের শেষের দিকে অনেক অর্ডার পেয়েছি। শহরের পাশাপাশি গ্রামের বাজারগুলিতে ও দোকান টেইলার্সের দোকান বেড়ে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় দোকান হওয়ার আমাদের কাছে আশানুরূপ অর্ডার পাওয়া যায় না।
পুরাণবাজারের মুনসান টেইলার্সে পরিচালক রাজন বেপারী চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, এবার রমজানের শুরুতেই অনেক কাজের অর্ডার পেয়েছি। তিনি জানান, তার দোকানে মূলত লেডিস কাষ্টমার একটু বেশি। এবছরও নারীরা সেমি লং থ্রি-পিস অর্ডার দিচ্ছে। কাস্টমারের কাছ থেকে প্রতিটি থ্রি-পিচের মজুরি তার দোকানে রাখা হয় ২ শ’ টাকা। এর বিপরীতে তিনি কারিগরকে দিচ্ছেন ৭০ টাকা।
একই এলাকার মেয়র রোডের নিউ মদিনা টেইলার্সের পরিচালক বিল্লাল শেখ চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘তার দোকানে ৬ন কারিগর কাজ করছে। দোকানের কারিগররা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ১টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে পোশাক তৈরি করছেন। কখনো কখনো কারিগর এবং নিজেও রাতে ওভার টাইম কাজ করেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তাঁর দোকানে আশানুরুপ অর্ডার পড়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur