ফুটবল বিশ্বে মেসিই এক মূল আলোচনায়। কোপার ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর হঠাতই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান তারকা এই ফুটবলার। কিন্তু তার এই বিদায় কেউ মেনে নিতে পারেনি।
অবসর ভাঙাতে চলছে অনুরোধ। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে ম্যারাডোনার সঙ্গে সতীর্থরা মেসিকে বলছেন সিদ্ধান্ত পাল্টানোর জন্য। আর ভক্তদের চলছে আহাজারি। মেসির নিজ দেশ আর্জেন্টিনায়তো শোকের মাতম।
ফিরে এসো মেসি, এমন আকুতি সবারই।
এরই মধ্যে মেসিকে একটি খোলা চিঠি লিখিছেন আর্জেন্টিনার এক স্কুল শিক্ষিকা। যার চিঠির বক্তব্য ছুয়ে গেছে সবার হৃদয়। মূল বিষয়, শিশুদের জন্য হলেও ফিরে এসো মেসি। সেই দীর্ঘ চিঠির চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো বাংলামেইলের পাঠকদের জন্য।
লিওনেল মেসি,
হয়তো তুমি কখনও এই লেখা পড়বে না। তবু লিখলাম। ফুটবল ভক্ত হিসেবে নয়, একজন আর্জেন্টাইন শিক্ষিকা হিসেবে। আমি তোমাকে তোমার মতোই ভালবাসি। আমি তোমার মেধা আর চোখ ধাঁধানো সাফল্যের কথা এখানে লিখতে পারতাম। তাতে অনেক কথা দ্বিতীয়বার বলা হতো। বরং আমি তোমার সাহায্য চাই এমন একটি সমস্যা সমাধানের জন্য যা তুমি জীবনে মোকাবিলা করোনি। তোমাকে সেই সব শিশুর জন্য ফিরে আসতে বলছি, যারা তোমাকে ফুটবলের নায়ক হিসেবে জানে। আদর্শ হিসেবে ভাবতে চায়।
আমার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে তোমার জন্য যে মায়া আমি খুঁজে পাই তা আমাকে ভাবায়, কাঁদায়। তারা এখন দেখছে যে তাদের আইডল আশা ছেড়ে দিয়েছে। কোনো আশাহত লোকের জন্য আমি তোমার কাছে ভিক্ষা চাইছি না। যারা বিশ্রামের কথা বলে, তাদের জন্য বলাটা সহজ। অনেকে বলে একটি বাড়ি করার চেয়ে গোল করা নাকি সহজ। এই ধরনের চাপ সৃষ্টি করা দুর্বল চিত্তের কাজ। প্লিজ, তুমি যেও না। আমার ছাত্রদের এটা ভাবিও না যে, তার দেশ শুধু জয়ই চায়। তুমি সাফল্য দিয়ে ওদের ভাবতে শিখিও না। তাদের অনুভূতিতে ঢুকিও না, অন্যকে সুখী করার জন্যই বেঁচে থাকতে হবে। ওদের জন্য ভুল বার্তা রেখে যেও না। আজকের জন্য বিজয়ী হয়েই থেকে যাও।
মেসি কত ভালো ফুটবল খেলে আমি সেটা তাদের বলি না। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে সে যে হাজার হাজার ফ্রি কিক অনুশীলন করে আমি ওদের সেই গল্প শোনাই। আমি সেই মেসির কথা বলি, যে মেসি স্বপ্নকে তাড়া করতে ইনজেকশন নিয়ে মাঠে নামে। আমি সেই মেসির কথা বলি, যে মেসি অসহায় শিশুদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করে। আমি তাদের একটা পরিণত মেসির গল্প বলি, যে পরিবারে থেকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজ করে। ভালো পিতা হয়ে বেঁচে থাকে। আমি সেই মেসির কথা বলি, যে উচ্ছৃঙ্খল ভক্তকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে। সে আজ পেনাল্টি মিস করেছে আমাদের দোষেই। কারণ আমরা মানুষ।
চলে যেও না। ওই আকাশি-সাদা জামাটা খুলে ফেল না। জানো, যখন তুমি জার্সিটা পরম মমতায় গায়ে টেনে দাও আমরা ভাবি তুমি আর্জেন্টাইন। মেডেল আর শিরোপা আমাদের ভাবায় না যে তুমি আমাদেরই একজন। প্লিজ, আমার ছাত্রদের একা করে চলে যেও না। ওদের অবচেতন মনকে দুঃখ দিও না। ওরা যেন না ভাবে দ্বিতীয় হওয়া মানে হেরে যাওয়া। অথবা জীবনের একটা দিন হেরে যাওয়া মানে সব অর্জন মুছে যাওয়া। সবাই ওই বলটার কথাই বলে, কিন্তু আমি তোমার অন্তরের শক্তিতে বিশ্বাসী।’
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:০০ এএম, ১ জুলাই ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur