অভিভাবকদের অসচেতনাতায় গত একমাসে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে পুকুর কিংবা ডোবার পানিতে পড়ে ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এসব মৃত শিশুদের মধ্যে বেশির ভাগই ৫ বছরের নিচে।
খবর নিয়ে জানা যায় প্রত্যেকটি শিশুই তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পরিবারের সকলের অগোচরে খেলাধুলা করতে গিয়ে তারা পুকুর কিংবা ডোবা ও কুপের পানিতে পড়ে অকালে প্রাণ হারায়।
সকলের চোক ফাঁকি দিয়ে হারিয়ে যাওয়ার পর পাগলের মতো খুঁজে বেড়ায়। ততক্ষণে শিশুটি মৃত অবস্থায় পানিতে ভেসে উঠে। ‘বাড়ির পুকুর কিংবা আশপাশের খাল অথবা ডোবায় তাদেরকে ভেসে উঠতে দেখে শিশুকে বাঁচানোর আপ্রান চেষ্টায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্যে যে কোন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।’
এ দু’চার লাইনের লেখা পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যুর প্রতিটি সংবাদেই লেখা হয়ে থাকে।
এদিকে পানিতে পড়া মৃত্যুবরনকারী শিশুদের অভিভাবকরাই দায়ী বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও সচেতন মহল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসের মধ্যে চাঁদপুর শহর ও শহরের বিভিন্ন স্থানে যেসব শিশুরা পানিতে পড়ার পর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে মৃত ঘোষণা করা হয় তারা হলো মতলব উপজেলার ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামের রায়হানের শিশুকন্যা রুহানা (২), দীঘলদি গ্রামের একই পরিবারের আলমগীরের মেয়ে আকশা (৬) ,ও তার চাচাতো ভাই খোকনের ছেলে মাসনুর (৫), শরিয়তপুর জেলার কাচিকাটা গ্রামের নুর মোহাম্মদের আড়াই বয়সী ছেলে আল ইসলাম, ও তার সমবয়সী তারাবুনিয়ার বিল্লাল সর্দারের ছেলে ওমর ফারুক, একই গ্রামের দ্বীন ইসলামের দেড় বছর বয়সী ছেলে মাহবুব, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগড়া গ্রামের মোহাম্মদের মেয়ে তামিমা (২), শামসুদ্দিনের ১৮ মাস বয়সী শিশু সন্তান শান্ত, সাহেব বাজার চরমেশা এলাকার মানিক খানের আড়াই বছরের মেয়ে সন্তান মরিয়ম, মেহেদী হাছানের মেয়ে সুমাইয়া (৪), ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা গ্রামের মোঃ ইউসুফের মেয়ে জান্নাতুল ইভা (৬), শহরের নতুন বাজার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্মকর্তা রোমান খানের দেড় বছর বয়সী শিশু সন্তান রাফিন, সকদী আলগী পাঁচগাঁও গ্রামের আলাউদ্দিনের দেড় বছরের মেয়ে মাহেনুর , একই গ্রামের সমবয়সী শাহ পরানের মেয়ে সুমাইয়া, ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া গ্রামের সৌরভ গাজীর ১৪ মাস বয়সী শিশু সন্তান মনি, ও রামদাসদী এলাকার অপু মিয়ার শিশু পুত্র সোহেল (৩)।
এছাড়াও চাঁদপুর শহর এবং শহরের বাহিরেও পানিতে পড়ে অনেক শিশুদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। আবার অনেক শিশু মারা যাওয়ার বিষয়টি বাড়িতে নিশ্চিত হলে আর হাসপাতালে আনা হয় না। তাদের পরিসংখ্যাও তখন আর পাওয়া যায় না।
অকালে এসব শিশুদের মৃত্যুর জন্য একমাত্র অভিভাবকরাই দায়ী বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও সচেতন মহল।
শিশুরা যখন খেলাধুলা করতে বের হয় তখন শিশুর বাবা মা অথবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের চোখে চোখে রাখলে হয়তো তারা আর খেলার ছলে পুকুরের পানিতে পড়ে মৃত্যুবরন করতো না।
এখন থেকে প্রত্যেক শিশুদের সর্তক হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসক ও সচেতন মহল।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০্য৫:০০ এএম, ১৪ জুন ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ