নিজস্ব প্রতিনিধি, সৌদি আরব :
‘১৫তম ওআইসি ট্রেড ফেয়ার’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের আন্তর্জাতিক কনভেনশন এবং এক্সিবিশন সেন্টারে। ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সাথে ‘মেড ইন বাংলাদেশ, আমাদের ব্র্যান্ড আমাদের গর্ব’ এই শিরোনামে চলছে বাংলাদেশি পণ্যের প্রচার প্রচারণা।
হরেক রকম পন্য নিয়ে এবারই প্রথম সর্ববৃহত জায়গা জুড়ে বাংলাদেশর সরকারি, বেসরকারি সেক্টরের ২৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৩৬টি স্টলে বাংলাদেশের প্রচারণা চলছে ।
রোববার সন্ধ্যায় মেলার মূল কার্য্যক্রম উদ্বোধন করেন, রিয়াদের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন বন্দর বিন আব্দুল আজিজ আল-সউদ । এ সময় তার সাথে উপস্হিত ছিলেন, সৌদি কমার্স এন্ড ইসভেস্টমেন্ট মিনিষ্টার আল কাসাবি, ওআইসি সেক্রেটারি জেনারেল ড. আইয়াদ মাদানি । বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা, রিয়াদের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বাংলাদেশের ইলেকট্রিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বেগম মাফরুহা এবং সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ ।
বাংলাদেশি পণ্যের মধ্যে রয়েছে খাদ্য সামগ্রী, বস্ত্র, তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, হস্তশিল্প ও বিভিন্ন মনোহারি দ্রব্যে। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক সমৃদ্ধ করার উদ্দেশ্যে মেলার শেষ দিকে জেদ্দা ও মদীনায় ক্যাটালগ ও রোডশোর আয়োজন করা হবে।
মেলা চলবে আগামি ২৬ মে পর্যন্ত । বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ মেলা ।
‘ওআইসি ট্রেড ফেয়ার’ উদ্বোধনকালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সাথে রিয়াদের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন বন্দর বিন আব্দুল আজিজ আল-সউদ, সৌদি কমার্স এন্ড ইসভেস্টমেন্ট মিনিস্টর আল কাসাবি এবং ওআইসি সেক্রেটারি জেনারেল ড. আইয়াদ মাদানির সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ।
এর আগে বাংলাদেশে বাণিজ্য বাড়াতে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তারা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেছে । সৌদি চেম্বার অফ কাউন্সিলের চেয়ারম্যন ড. আব্দুল রহমান আল জামিল এর নেতৃত্বে একটি সৌদি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এ কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশের তৈরি হোম টেক্সটাইল, টেরি-টায়েল, পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, হিমায়িত মাছ, হালাল মাংস, ভেজিটেবল, শুকনা খাবারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ সৌদি সরকারের কাছে এ সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে। সেই সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ২০০৬ সালের যে চুক্তি রয়েছে সেটির কার্যকর করতেও অনুরোধ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সে সঙ্গে বাংলাদেশে বিনিযোগ করলে সৌদি ব্যবসায়ীগণ অধিক লাভবান হবেন বলেও উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এদিকে সৌদি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিগণ বাণিজ্যমন্ত্রীকে জানান, বাংলাদেশের তৈরি এসব পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে সৌদি আরবে। এগুলো বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী সৌদি সরকার। সৌদি বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়; যেহেতু বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বাণিজ্যের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো। সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য সৌদি আরবে রপ্তানির অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে সৌদি আরব সফর করবেন।
এ সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
সাগর চৌধুরী, সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:৫০ এএম, ২৩ মে ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ