আরেকটি বছর শেষ। নতুন বছরে পা রাখলো বাংলাদেশ। আর এ বাংলা নববর্ষের পুরো মাস জুড়েই হয়ে থাকে শুভ হালখাতা। গত বছরের হিসাব চুকিয়ে ফেলে ব্যাবসায়ীদের নতুন খাতা খোলার উৎসব থাকলে এ বছর চাঁদপুরে বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেলো ব্যবসায়ীরা এ বছর ‘শুভ হালখাতা’ অনুষ্ঠানে অনেকটাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
এর কারণ হিসেবে ব্যবাসায়ীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশের অর্থনেতিক মন্দাভাবকে দায়ী করছেন। অনেকেই আবার ব্যাংক লেনদেনের সাথে বাংলা মাসের মিল না থাকার অজুহাত দেখিয়েছেন। কারণ ব্যাংক লেনদেন সাধারণত দেশের অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী জুন-জুন পর্যন্ত হয়ে থাকে।
চাঁদপুরের বিপনীবাগের কয়েকটি মুদি দোকান, পালবাজারের একাধিক পাইকারী দোকান, পুরাণবাজারের কয়েকটি ব্যাবসায়ীদের সাথে আলাপকালে এমনিতেই তথ্য উঠে আসে।
আজ থেকে কয়েক বছর পূর্বেও চৈত্র মাসের শুরু থেকেই ব্যবসায়ীগণ তাদের নিয়মিত ক্রেতাদের নিমন্ত্রণ পত্র ছাপাতেন। দু’ই তিন দিন ধরে চলতো ধোয়ামোছার কাজ। অনুষ্ঠানের দিন দোকানগুলি ফুলে ফুলে সাজানো হতো। আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হতো মিষ্টি দিয়ে।
এছড়া যেসব খুচরা ব্যাবসায়ী ৩০ চৈত্রের মধ্যে সকল পাওনা পাইকারী ব্যবাসায়ীকে পরিশোধ করতে পারতেন, তাকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ছাড় দেয়া হতো, পুনরায় একবছরের জন্য তাকে বাকী দেয়া হতো। পহেলা বৈশাখে বিশেষ পোশাখ পুরস্কার হিসেবে দেয়া হতো। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ ছিলো চোখে পড়ার মতো।
কিন্তু এসব ঐতিহ্য এখন হারিয়ে যাচ্ছে, হারাচ্ছে বাংলা সন ও তারিখের গুরুত্ব। তবে হিন্দু ধর্মে বাংলা তারিখের ব্যবহারটা এখনো অনেক গুরুত্ব পাচ্ছে , তবে সেটুকো শুধুমাত্র ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে।
নতুন বাজার ও পুরাণ বাজারের মেসার্স পাঠান ট্রেডার্সের সাথে কথা বললে তারা জানান, বৈশাখ আসলে আমরা চেষ্টা করি আমাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সাথে নতুনভাবে নতুনস্বপ্নে সর্ম্পক গড়ে তুলতে। ব্যবসায়ীদের ঐতিয্য রীতি হাল-খাতা আমার এ বছরও করেছি। তবে আগের মত দোকনদারদের কাছ থেকে সেই ধরনের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায় না। বিশেষ করে খুচরা বিক্রেতা তাদেরকে জানায় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো তাদের বকেয়া টাকা না দেয়ার কারণে তারা পাইকারি ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা দিতে বিলম্ব হয়।
পুরাণ বাজার ইসলামিয়া বাণিজ্যলয়ের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, ব্যবসার অবস্থা ভাল না থাকার কারণে ব্যবসায়ীদের মাঝে এখন আর বাকি টাকা নির্দিষ্ট দিনে দেয়ার হিড়িক পড়ে না। আর ব্যবসার পজিশনের কারনে পাইকারী ব্যবসায়ীরা আগের মতো হাল-খাতার আনুষ্ঠানিকতা করতে পারেনা। বৈশাখের হাল-খাতা মানে বেপারীদের নিয়ে আনন্দ করা, আপ্যায়ন করানো এবং পুরনো খাতার থেকে নতুন খাতা নেয়া।
]দেলোয়ার হোসাইন[/author]
: আপডেট ৯:০০ এএম, ২০ এপ্রিল ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur